রাজশাহী মহানগরীতে মঙ্গলবার সকাল থেকে একটানা বেলা বিকেল পর্যন্ত অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে। রাজশাহী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে অভিযানের খবর পেয়ে পাঁচটি ক্লিনিকের মালিক এবং তাদের কর্মচারীরা আগেই ক্লিনিকে তালা মেরে পালিয়েছেন।
এই অভিযান পরিচালনা করেন রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মো. ফারুক। মহানগরীর লাইসেন্সবিহীন অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটিকে জরিমানাও করা হয়। এছাড়া রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের আরও চারটি টিম অভিযান চালায়। অভিযানে মহানগরীতে ১২টি এবং নয়টি উপজেলায় আটটি অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীতে কতগুলো অবৈধ ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে, তার নির্দিষ্ট কোনো তালিকা নেই। যেসব প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে, তাদের মধ্যে যারা নিবন্ধনের শর্তের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন কিংবা নতুন করে নবায়ণ করেননি, শুধু তাদের তালিকা আছে।
সেই তালিকা অনুযায়ী অবৈধ ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা প্রায় ১৫০টি। এর মধ্যে প্রথম দিন রাজশাহীতে অভিযান চালিয়ে ২০টি প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বন্ধ হওয়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাজশাহী মহানগরীর নিউ ইবনে সিনা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, স্পন্দন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রেইনবো ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বিসমিল্লাহ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বসুন্ধরা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফেয়ার ল্যাব ডায়াগনস্টিক সেন্টার, এশিয়ান ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিউ হাসপাতাল, আল আমিন ডায়াগনস্টিক ও কনসালটেন্ট সেন্টার, মেডিনোভা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সেন্ট্রাল ল্যাব ও মেডিক্যাল সেন্টার এবং আল আমিন নার্সিং হোম, চারঘাট উপজেলার গ্রিন সিটি হাসপাতাল, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বাগমারা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সাফল্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডক্টরস ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক, কালামি হেলথ কেয়ার, বাঘা উপজেলার মঞ্জু ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও নাজিয়া ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সততা ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
এবার যেসব প্রতিষ্ঠান তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে তাদের অবৈধ হিসেবে গণ্য করে খুললেই আইনগত কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক।
তিনি জানান, রাজশাহীতে প্রকৃতপক্ষে অবৈধ ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা কত, তার সুনির্দিষ্ট তালিকা নেই। তবে এ সংখ্যাটা প্রায় ১৫০টির কিছু কমবেশি হবে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। অভিযান চলাকালে অনেকে টের পেয়ে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তারা আরও কঠোর হচ্ছেন। এদের অবৈধ ধরে নিয়ে যখনই খুলবে তখনই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা.আবু সাইদ ফারুক বলেন, মহানগরীর যেসব প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সের জন্য আবেদন না করেই ব্যবসা শুরু করেছে বা বহু আগে অবেবদন করে আর খবর নাই। তাই এখন পর্যন্ত লাইসেন্স নবায়ন করে নাই এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করে কাগজপত্র দেখে তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া রাজশাহী মহানগর ও জেলার ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের লাইসেন্সবিহীন ও অবৈধ ক্লিনিক ডায়াগনস্টিকের তালিকা দিতে বলা হয়েছে। সর্বপরি কাউকেই লাইসেন্স ছাড়া সরকারি নির্দেশনার বাইরে আর ব্যবসা পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না।