শখ করে কথা তো বলতে গেলেন,কিন্তু কথা বলবেন কি!মুখের কথা মুখেই আটকে গেল,আর আপনি তোতলাতে শুরু করলেন।লজ্জা পাবেন না। কমপ্লেক্সিটিতেও ভুগবেন না।আপনি কিন্তু একা নন,গোটা পৃথিবীতে মোট জনসংখ্যার ১.৫% লোকই কিন্তু এই কথা বলা বা কথা বলতে গিয়ে আটকে যাবার সমস্যায় ভোগেন।
তোতলামি কী? কথা বলতে গিয়ে কথা আটকে যাবার সমস্যাই কিন্তু তোতলামি।সাধারণত বি,ডি,জি,কে,পি,টি ইত্যাদি দিয়ে যেসমস্ত শব্দ শুরু হয়,সেগুলো উচ্চারণের সময় কথা আটকে যায়।মোটামুটি তিন থেকে সাত বছরের বাচ্ছাদের মধ্যে তোতলামির সমস্যা বেশী দেখা যায়।এটা কেটে যায় অবিশ্যি,কিন্তু দশ বছরের পরেও যদি তোতলামির সমস্যা থাকে,তাহলে কিন্তু তা রীতিমতো সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।প্রতি ৪ জন বাচ্ছা যাদের ছোটবেলায় তোতলামির সমস্যা থাকে,তাদের মধ্যে ১ জনের কিন্তু বড় হয়েও এই সমস্যা থেকেই যায়।তাই আপনার বাচ্ছার যদি তোতলামির সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে ছোট থেকেই কিন্তু তার জন্য ব্যবস্থা করুন।কীভাবে করবেন?চাপ নেই।তার জন্য আজ আপনাদের জন্য ৬টা ব্যায়ামের সন্ধান দিলাম আজকের আর্টিকেলে।
১. স্বরবর্ণ উচ্চারণ করুন : আজ্ঞে হ্যাঁ,এই জলের মতো সহজ ব্যায়ামটাই কিন্তু আপনাকে আপনার আজীবনের তোতলামি থেকে মুক্তি দিতে পারে।কিছুই না,ভালো করে জোরে জোরে স্পষ্ট উচ্চারণে স্বরবর্ণগুলো,যেমন এ,ই,আই,ও,ইউ উচ্চারণ করুন।উচ্চারণ যেন খুব স্পষ্ট হয়,আর মুখ বেঁকিয়ে উচ্চারণ করবেন।
২. থামতে শিখুন : কোথায় থামতে হবে না জানলে কিন্তু তোতলামি কোনোদিনই মিটবে না।কোনো বাক্য যখন বলবেন,তখন প্রতিটা শব্দের মাঝে খানিকক্ষণ করে গ্যাপ দিন।একটা শব্দের পর একটু থেমে পরের শব্দটি উচ্চারণ করুন।দিনে একবার অন্তত খানিকক্ষণ করে নিয়মিত করুন।এর ফলে কথা বলার সমস্যাও খানিক কমবে।
৩. চোয়ালের কায়দা : চোয়াল ফাঁক করে যতটা সম্ভব বড় করে মুখ খুলুন।এবার আপনার জিভের আগা মুখের ওপরের টাকরায় ঠেকান।এই অবস্থায় জিভের আগাকে মুখের পেছন দিকে নিয়ে যান।ব্যথা হওয়ার আগে অবধি করুন আর জিভকে ওই অবস্থায় খানিকক্ষণ রাখুন।এবার জিভ বের করে নিজের থুতনিকে ধরতে চেষ্টা করুন।ওই অবস্থায় খানিকক্ষণ থাকুন।এভাবে ৫-৬ বার অন্তত করুন।আস্তে আস্তে ফল পাবেন।
৪. স্ট্র দিয়ে জল খান : ঘরে-বাইরে যেখানেই জল খাবেন,একটু কষ্ট করে নাহয় স্ট্র দিয়ে জল খান।স্ট্র দিয়ে জল খাওয়াটাও কিন্তু একধরণের মুখের ব্যায়াম যা আপনার কথা বলার সমস্যাকে কমাতে পারে।স্ট্র দিয়ে জল খাওয়ার সময় মুখের মধ্যে জিভের যে অবস্থান,তা কিন্তু কথা বলার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।কিছুদিন পর থেকে স্ট্রয়ের সাইজ ছোট করুন।এটা করলে কিন্তু তোতলামি কমতে বাধ্য। ➡ খাবার পর পর জল খাওয়া উচিত না
৫. নিঃশ্বাস নিন : বুক থেকে নিঃশ্বাস নেবেন না।এর বদলে বরং পেট থেকে নিশ্বাস নিতে চেষ্টা করুন।নিঃশ্বাস কিন্তু গভীরভাবে নেবেন।কারণ পেট থেকে নিঃশ্বাস নিলে পেটের পেশী,স্নায়ুতন্ত্র সবই রিল্যাক্স হয়,এবং তা আপনার সারা শরীরকেই রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে,ফলে কথা বলার সমস্যা খানিক কমে।
৬. ডিপ ব্রিদিং: তোতলামি কমাতে চাইলে এই ডিপ ব্রিদিং কিন্তু মাস্ট।আপনার শ্বসনতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে আর স্নায়ুপেশীকে রিল্যাক্স করতে কিন্তু এর জুড়ি নেই।তাই নির্দিষ্ট ব্রিদিং প্যাটার্নে কথা বললে কথা বলার সমস্যা কমতে পারে।মুখ দিয়ে ডিপ শ্বাস নিয়ে আবার তাড়াতাড়ি মুখ দিয়ে ছাড়ুন।মিনিট খানেক নিয়ম করে করলেই উপকার পাবেন।
আর হ্যাঁ,আপনার কথা বলার সমস্যা থাকলে আপনি তো করবেনই।কিন্তু আপনার বাচ্ছার যদি থাকে?তাহলে তার ক্ষেত্রেও কিন্তু এই ব্যায়ামগুলো মাস্ট।নিয়ম করে করুন।দেখবেন কোনো উটকো আপদ এসে আর আপনার কথা কাড়তে পারছে না।বরং নিজের কনফিডেন্সে আপনি নিজেই বকে সব্বাইকে মাত করে দিচ্ছেন।