রাজশাহীর বাঘায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত ভবন উদ্ভোধনের দুই বছর পরেও রয়েছে শুন্য। প্রায় সোয়া দুই কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ভবনটি ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করলেও আজও তা মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়নি। ফলে ভবনটি এখন জনমানবশুন্য ভূতের বাড়িতে পরিনত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটি তালাবদ্ধ রয়েছে। নেই কোন লাইট, নেই কোন পরিচর্যা।
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা জোনাব আলী বলেন, ভবন বুঝিয়ে না দেয়ায় ভবনটি এখন পরিত্যাক্ত ভবনে পরিনত হয়েছে। এছাড়াও ভবনে বিদ্যুৎ ও পানির সমস্যা রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার রয়েজ উদ্দিন জানান, ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর এ ভবনের উদ্বোধন করা হলেও এখনও তা আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। এখন এ ভবনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আ.লীগ যুগ্ন সম্পাদক অ্যাড. লায়েব উদ্দিন লাভলু বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির সূর্য সন্তান। স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁদের ত্যাগ অনিস্বিকার্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধার সাথে তাঁদের প্রতি সন্মান রেখেই এ প্রকল্প হাতে নেন। ভবন নির্মান হয়েছে। উদ্ভোধনও সমাপ্ত। তাই দ্রুততম সময়ে ভবনটি তাঁদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) বুঝিয়ে দেয়া উচিৎ।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও ) শারমিন আখতার বলেন, আমি এই উপজেলায় অল্পদিন হলো যোগদান করেছি। ভবনটি চালুর বিষয়ে আগে কেউ ব্যবস্থা নিয়েছেন কিনা জানিনা। তবে দ্রুততম সময়ে যৌথ সভা ডেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বিদ্যমান সকল সমস্যার সমাধান পূর্বক ভবন বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র থেকে জানা যায়, উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যক্রমে গতি আনতে ২০১২ সালে দেশের ৪৭০টি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। এ জন্য খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ২২৪ কোটি টাকা। প্রকল্পের উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়, ভবনে দোকান ভাড়ার আয় থেকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দৈনন্দিন ব্যয় মেটানো হবে। ভবনের রক্ষণাবেক্ষনের কাজেও ব্যায় করা হবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করা হবে। প্রতিটি ভবন আড়াই হাজার বর্গফুটের। ২০১৬ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু দুই দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে নিয়েছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এলজিইডি থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য বলছে, এ পর্যন্ত ৪১৬টি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। প্রতিটি ভবন নির্মাণে গড়ে খরচ হয়েছে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা।