২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৯:১৩:৪০ অপরাহ্ন


২১ আগস্টের পরিকল্পনাকারী, তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করতে হবে: মহানগর আ’লীগ
স্টাফ রিপোর্টার :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৮-২০২২
২১ আগস্টের পরিকল্পনাকারী, তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করতে হবে: মহানগর আ’লীগ ২১ আগস্ট ঢাকায় জঘন্য গ্রেনেড আক্রমণের প্রতিবাদে কলকাতা প্রেস ক্লাবে স্মরণ অনুষ্ঠান


রবিবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল বিকাল ৫টায় কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

প্রতিবাদ সমাবেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, মীর ইসতিয়াক আহম্মেদ লিমন। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে। আরো বক্তব্য রাখেন নগর শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরীফ আলী মুনমুন, নগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলী, নগর কৃষক লীগ সভাপতি রহমতউল্লাহ সেলিম, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুল মোমিন, নগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সিরাজুম মুবিন সবুজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি ডাঃ মনন কান্তি দাস, রুয়েট ছাত্রলীগ সভাপতি ইপু।

সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেতা বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা’র বক্তব্যের শেষ দিকে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা চালিয়ে দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে হত্যা ও আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার যে নীল নকশা করেছিলো বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার তার প্রধান কুশীলব ছিলো তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া’র পুত্র তারেক জিয়া। এটি নিছক কোন ঘটনা নয়, এটি একটি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারের মদদে একটি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, যে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের যোগসূত্র রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বিএনপি আজকে আন্দোলনের ফাঁকা বুলি শুধুমাত্র টেলিভিশনের পর্দায় সীমাবদ্ধ, তাদের সাথে জনগণ নেই, তাদের কোন অর্জন নেই, নেই কোন জনসম্পৃক্ততা। জনকল্যাণে তারা কোন কাজ করে নি। তারা ক্ষমতায় থাকতে বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার নীল নকশা করে, আর বিরোধী দলে গেলে জনগণের উপর পেট্রোল বোমা মেরে অগ্নিসন্ত্রাস করে, তারাই আবার মানবতার কথা বলে জাতির সাথে প্রতারনা করে। 

মোঃ ডাবলু সরকার বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে রাষ্ট্র ও সরকারের প্রত্যক্ষ মদদ ও সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক জঙ্গীবাদের সৃষ্টি হয়েছিলো, রাষ্ট্র ও প্রশাসনের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ্ এম এস কিবরিয়াকে গ্রেনেড মেরে হত্যা করা হয়েছিলো, যখন তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে দলীয় সভা করছিলেন। রাষ্ট্র ও প্রশাসনের সহযোগিতায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেতা বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা’র বক্তব্যের শেষ দিকে একটি নয়, দুইটি নয় বৃষ্টির মতো গ্রেনেড বর্ষণ করে তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেতা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করে ও আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলো। কিন্তু সেদিন পরম করুণাময়ের অশেষ কৃপায় ও বাংলাদেশের পনের কোটি মানুষের ভালোবাসায় আমাদের প্রিয় নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সেদিন প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা বেগম আইভি রহমান সহ ২৪ জন সেদিন প্রাণ হারান। আওয়ামী লীগের জাতীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সহ  পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীদের সেদিন গুরুতর আহত হন। যারা এখনও ঐ গ্রেনেডের স্পিøন্টার শরীরে বহন করে দুর্বীষহ জীবন যাপন করছেন। 

ডাবলু সরকার প্রশ্ন রেখে বলেন, সেদিন ক্ষমতায় কারা ছিলেন? সেদিন ক্ষমতায় ছিলেন স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত পরিবেষ্টিত হয়ে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তারই কু-সন্তান তারেক জিয়া এই গ্রেনেড হামলার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জাড়িত ছিলো। তারেক জিয়ার নির্দেশে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সন্ত্রাসবাদ ও আইএসআই এর পরিকল্পনায় এই গ্রেনেড হামলা পরিচালিত হয়। এই গ্রেনেড হামলার পূর্বে হাওয়া ভবনে দফায় দফায় ঐ জঙ্গী নেতা আব্দুল হান্নান, হারিছ চৌধুরী, আলী হাসান মুজাহিদ, তৎকালিন প্রতিমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, তৎকালিন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফর জামান বাবর, ডিজিএফআই এর কর্মকর্তা রেজ্জাকুল হায়দার, বিএনপি নেতা মোফাজ্জল করিম কায়কোবাদ এর সাথে বৈঠক করেন খালেদা জিয়ার কুলাঙ্গার সন্তান তারেক জিয়া। এই কুলাঙ্গার তারেক জিয়া তাদের শাসনামলে সারাদেশে বোমা হামলা, সন্ত্রাস সৃষ্টি করে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘœ করেছে ও দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। বিএনপি শাসনামলে দেশের জনগণ দুর্বীষহ জীবন যাপন করেছে। ২১ আগস্টের ঘটনা কোন নিছক ঘটনা ছিলো না, এটি ছিলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত।

তিনি ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পর প্রয়াত বিএনপি নেতা ও তৎকালিন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকা’র একটি সাক্ষাৎকারের একটি প্রসঙ্গ টেনে বলেন, সাদেরক হোসেন খোকা সে সময় বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে এই গ্রেনেড হামলার জন্য বিএনপি’র দলীয় নোতকর্মীদের সামনে তারেক জিয়াকে ভৎসনা করেন ও তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাথে কথা বলে উক্ত গ্রেনেড হামলার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে একটি নিন্দা জানাতে বললে খালেদা জিয়া অস্বীকৃতি জানান এবং এই গ্রেনেড হামলার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে জর্জ মিয়া নাটক সাজান। এতে করেই পরিস্কার হয় যে, এই গ্রেনেড হামলায় তৎকালিন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ জড়িত ছিলো। 

ডাবলু সরকার আরো বলেন, গতকালকে একটি পত্রিকায় কলাম পড়ছিলাম,  এ্যান্থনি মাসকারেন হাস তার গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, লেখককে একজন প্রশ্ন করেছিলেন জেনারেল জিয়া কেমন মানুষ ছিলেন? তিনি বললেন, জিয়াউর রহমান এক হাতে মানুষ খুন করে তাৎক্ষনিক তিনি অন্য হাতে খেতে পারতেন নির্দ্বিায়। সেই জিয়াউর রহমানের উত্তরসূরী এই কুলাঙ্গার তারেক রহমান। মানুষ খুন করতে তার বিবেক কাঁপে না। রক্তের হোলি খেলায় তার নেশা। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও আদর্শের উত্তরাধিকার দেশরত্ন শেখ হাসিনা, যেভাবে বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন তাঁর জীবন ও যৌবনের মূল্যবান সময় এই বাংলার জনগণের জন্য উৎসর্গ করে বাঙালিকে দিয়ে গেছিলেন লাল-সবুজের পতাকা, বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন দেশ, বাংলাদেশ। ঠিক তেমনি তাঁর কন্যা, তাঁর নিরলস পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে উন্নত ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ বিনির্মাণে রাত-দিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। 

তিনি বলেন, রাখে আল্লাহ, মারে কে! একবার না দুইবার না তেইশ বার বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করা হয়েছিলো। কিন্তু মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় ও জনগণের ভালোবাসায় বার বার ফিরে এসেছেন জনগণের সেবার জন্য। তিনি পরম করুণাময়ের কাছে দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র দীর্ঘায়ু কামনা করেন যাতে করে তিনি দেশ ও জনগণের জন্য আরো কিছু কাজ করে যেতে পারেন। তিনি জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, এই বাংলাদেশ ও জনগণকে নিয়ে কারা ছিনিমিনি খেলতে চায়! তারা আর কেউ নয়, এই খালেদা জিয়া ও তার সন্তান তারেক জিয়া। কখনও আইএসআই এর সহযোগিতা নিয়ে, কখনও এদেশের স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে, কখনও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদদের নিয়ে, এদের সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে।

তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে জোর কুটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে ঐ কুলাঙ্গার তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনে তার যাবজ্জীবন কারাদন্ডের সাজা কার্যকরের দাবী জানান।  

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, নাঈমুল হুদা রানা, ডাঃ তবিবুর রহমান শেখ, বদরুজ্জামান খায়ের, দপ্তর সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম বুলবুল, প্রচার সম্পাদক দিলীপ কুমার ঘোষ, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জিয়া হাসান আজাদ হিমেল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রবিউল আলম রবি, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মকিদুজ্জামান জুরাত, শ্রম সম্পাদক আব্দুস সোহেল, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ ফ ম আ জাহিদ, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক কামারউল্লাহ সরকার কামাল, সদস্য জহির উদ্দিন তেতু, হাবিবুর রহমান বাবু, মুশফিকুর রহমান হাসনাত, আশরাফ উদ্দিন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আব্দুল মান্নান, আব্দুস সালাম, মজিবুর রহমান, জয়নাল আবেদীন চাঁদ, মোখলেশুর রহমান কচি, ইসমাইল হোসেন, বাদশা শেখ, কে এম জুয়েল জামান, থানা আওয়ামী লীগের রাজপাড়া থানার সাধারণ সম্পাদক শেখ আনসারুল হক খিচ্চু, বোয়ালিয়া (পূর্ব) থানার সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, মতিহার থানার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, শাহমখদুম থানার সাধারণ সম্পাদক শাহাদত আলী শাহু, নগর শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরীফ আলী মুনমুন, নগর কৃষক লীগ সাধারণ সম্পাদক সাকের হোসেন বাবু, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সালমা রেজা, সাধারণ সম্পাদক কানিজ ফাতেমা মিতু, নগর যুব মহিলা লীগ সভাপতি এ্যাড. ইসমত আরা, সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন নিলু, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ডাঃ ইমরান হোসেন, রুয়েট ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মাহফুজুর রহমান তপু, নগর তাঁতী লীগের আহ্বায়ক আনিসুর রহমান আনার, সাধারণ সম্পাদক মোকসেদ-উল-আলম সুমন সহ নেতৃবৃন্দ।