১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:২৫:০৫ পূর্বাহ্ন


তেল ও সারের দাম বাড়ায় সংকটে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি, উৎপাদন খরচ উঠা নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা
মঈন উদ্দীন
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৮-২০২২
তেল ও সারের দাম বাড়ায় সংকটে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষি, উৎপাদন খরচ উঠা নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা ফাইল ফটো


সারের পর জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে চিন্তায় পড়েছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা। এই দুইয়ের প্রভাবে ফসলের উৎপাদন খরচ যে হারে বাড়বে সে তুলনায় দাম পাবেন কিনা তা নিয়েই শঙ্কায় তার।

বিশেষ করে আমন চাষীরা বলছেন, ডিজেলের দাম বাড়ায় এবার উৎপাদন খরচ বাড়বে মণ প্রতি কমপক্ষে দুইশ’ টাকা। ফলে ধানের দাম বাড়বে অবধারিতভাবে। 

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি কৃষকের ন্যুনতম লাভ নিশ্চিত না করা যায়, তাহলে ধানের উৎপাদন ব্যাহত হবে, প্রভাব পড়বে এ অঞ্চলের কৃষিখাতে।

এ অঞ্চলের ৯০ ভাগ জমি চাষ হয় ডিজেল নির্ভর সেচ ব্যবস্থায়। লিটারে ৩৪ টাকা বাড়ায় তাই সেচ নিয়ে চিন্তায় কৃষকরা। গত বছরের নভেম্বরে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বৃদ্ধির ধাক্কায় দুর্ভোগে পড়েন কৃষক। এরপর গত সপ্তাহে বাড়ানো হয় সারের দাম। 

এবার ডিজেল-কেরোসিনের নজিরবিহীন মূল্যবৃদ্ধি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। কৃষকের টিকে থাকাই এখন কঠিন হয়ে পড়বে বলে সংশ্নিষ্টরা মনে করছেন।

কৃষকরা জানান, বর্ষাকলে পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃষ্টির দেখা নেই তাই ধানি জমি শুকিয়ে চৌচির। ডিজেলের দাম বাড়ায় সেচ দিতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। 

কৃষকদের মধ্যে একজন বলেন, তার ১৩ বিঘা জমিতে সেচ দিতে বিশ লিটার ডিজেল দরকার। এতে একদিনে খরচ বেড়ে গেছে প্রায় ৬৮০ টাকা। সে হিসেবে মৌসুমে ডিজেলেই মোট খরচ বাড়বে ১৩, ৬০০ টাকা।

কৃষকরা বলছেন, জমি ভেদে বিঘায় ইউরিয়া সার দরকার ৪০ কেজি। এতে বেড়েছে ২৪০ টাকা। এছাড়া ডিজেলচালিত ধান মাড়াই মেশিনের ৬০০ টাকার জায়গায় দিতে হবে ৮০০ টাকা। এছাড়া কীটনাশক, শ্রমিক, যানবাহনেও খরচ বাড়বে। সব মিলিয়ে মণ প্রতি ধান উৎপাদনে খরচ হবে প্রায় হাজার টাকা।

বিদ্যুতের সেচেও সুবিধা করতে পাড়ছে না কৃষক। খরার কারণে সেচ দিতে হচ্ছে দ্বিগুণ। দুই ঘন্টা লোডশেডিংয়ের কথা থাকলেও দিনে বিদ্যুৎ যাচ্ছে চার-পাঁচবার। 

কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে প্রতিটি কৃষি উপকরণের দাম আকাশছোঁয়া। উৎপাদন খরচ বাড়লেও পণ্যের ন্যায্য দাম পান না কৃষক।

তাঁরা বলছেন, কৃষক না বাঁচলে উৎপাদন ব্যাহত হবে। হুমকিতে পড়বে খাদ্য নিরাপত্তা। ফলে সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কৃষকের স্বার্থে ভর্তুকি বাড়াতেই হবে।

তবে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার কৃষকের পাশে আছে। বিনামূল্যে বীজসহ নানা উপকরণ দেওয়া হচ্ছে। ভর্তুকি বাড়ানো হয়েছে। দাম বৃদ্ধির প্রভাব কৃষক পর্যায়ে পড়বে না।