২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৫:১৫:৪০ অপরাহ্ন


জিমন্যাস্টিকসে ইংলিশ উত্থান
ক্রীড়া ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৮-২০২২
জিমন্যাস্টিকসে ইংলিশ উত্থান আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকসে রৌপ্য জেতা ইংল্যান্ডের আচাম্পং এএফপি


বার্মিংহাম লাইব্রেরির সামনে যেতেই দেখা মিলল খুদে জিমন্যাস্টসের। ইসলার চিত্তাকর্ষক প্রদর্শনী মোবাইল ফোনে ভিডিও করছেন বাবা জ্যাকব। মা অ্যালেনা পাশে বসে বলছেন, 'ইয়েস', ইয়েস'। বাবা-মায়ের উৎসাহে প্রতিনিয়ত শারীরিক কলাকৌশল প্রদর্শনীতে ব্যস্ত ক্লাস ওয়ানে পড়ূয়া এ জিমন্যাস্টস। পাঁচ বছর বয়সী ইসলার মতো ইংল্যান্ডের আরও অনেক শিশুকেই দেখা গেছে জিমন্যাস্টিকসের প্রতি ভালোবাসা। কমনওয়েলথ গেমসে এই ইভেন্ট থেকে ইংল্যান্ড কতটি স্বর্ণ পাচ্ছে, তা যেন মুখস্থ তাদের।

মঙ্গলবার অ্যারেনা বার্মিংহামের জিমন্যাস্টিকস সেন্টার থেকে মায়ের হাত ধরে বের হওয়া ছয় বছরের সোফিয়ে বলে উঠল, 'উই উইন ফোর গোল্ড'। গেমস মিডিয়া হাবের পাশেই অবস্থিত জিমন্যাস্টিকস সেন্টারের গ্যালারি ম্যাচের দিন থাকে ভরপুর। দর্শকের দীর্ঘ লাইনই প্রমাণ করছে ইংল্যান্ডের নতুন প্রজন্ম এই খেলার দিকে ঝুঁকে গেছে। এবারের কমনওয়েলথ গেমসেও তার প্রমাণ। যে দলটি ২০১৮ কমনওয়েলথ গেমসে জিমন্যাস্টিকস থেকে জিতেছিল ৬টি স্বর্ণ, সেই ইংল্যান্ডই কিনা সব ইভেন্ট শেষ না হওয়ার আগেই এবারের প্রতিযোগিতায় জিতেছে ১০টি স্বর্ণ। জিমন্যাস্টিকসে ইংল্যান্ডের উত্থানই বলা চলে।

যেখানে খেলা, সেখানেই ইংলিশ সমর্থকরা। বার্মিংহামে চলতি কমনওয়েলথ গেমসের প্রতিটি ভেন্যুতেই ছিল স্বাগতিক সমর্থকদের উপস্থিতি। বিশেষ করে জিমন্যাস্টিকসে সংখ্যাটি বেশি দেখা গেছে। গ্যালারিতে ঢোকার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে কোনো কার্পণ্য নেই শিশু থেকে বয়স্কদের। স্টেডিয়ামের ভেতরে প্রিয় তারকার শারীরিক কসরতে যেন অন্য ভুবনে চলে যান ব্রিটিশরা। এই খেলার প্রতি বেশি ঝুঁকছে মেয়ে শিশুরা।

বার্মিংহামে জিমন্যাস্টিকসের অনেক ক্লাব রয়েছে। অল্প কিছু পাউন্ড খরচ করে নিজের বাচ্চাদের সেই ক্লাবগুলোতে ভর্তি করাচ্ছেন বাবা-মা। আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, ইংল্যান্ডের স্কুলগুলোতে এই জিমন্যাস্টিকস নিয়ে আলাদা একদিন ক্লাসও হয়। ছেলেমেয়েদের এই খেলায় উজ্জীবিত করতে সব কিছুই করছে ব্রিটিশ সরকার। এই বার্মিংহামের ৬৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫০টির বেশি আছে জিমন্যাস্টিকস ক্লাব।

যেখানে পুরো বাংলাদেশ খুঁজে ১০০ জনও জিমন্যাস্টস পাওয়া যায়নি, সেখানে শুধু বার্মিংহামেই ২০ থেকে ২৫ হাজার আছেন, যাঁরা কিনা জিমন্যাস্টিকস শিখছেন। দেশটিতে এই খেলার প্রতি তরুণ প্রজন্মের যে আগ্রহ বাড়ছে, তা ফুটে ওঠে একটি পরিসংখ্যানে। ৫-১০ বছর বয়সী শিশুদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ২০১০ সালে জিমন্যাস্টসের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২২ সালে এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ দশকি ৬৭ শতাংশে। অর্থাৎ অন্য খেলার মতো জিমন্যাস্টিকসেও বিপ্লব ঘটানোর অপেক্ষায় তারা।