২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৪:০০:৫৩ অপরাহ্ন


জেনা-ব্যভিচার থেকে বেঁচে থাকবেন কীভাবে?
ধর্ম ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৭-২০২২
জেনা-ব্যভিচার থেকে বেঁচে থাকবেন কীভাবে? ফাইল ফটো


অবাধ যৌনাচার, জেনা-ব্যভিচার মানুষকে তার ঈমান থেকে বের করে দেয়। এটি বড় গুনাহসমূহের মধ্যে একটি। জেনা-ব্যভিচারকে অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কিন্তু এ জেনা-ব্যভিচার থেকে বাঁচার উপায় কী?

জেনা-ব্যভিচার মারাত্মক অপরাধ। যে কারণে ব্যভিচারের সময় মানুষের মাঝে ঈমান অবস্থান করে না। এ সম্পর্কে কোরআন-সুন্নায় সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা এসেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَلاَ تَقْرَبُواْ الزِّنَى إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاء سَبِيلاً


‘আর তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয়ই এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৩২)

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে ঘোষণা করেন-

‘যখন কোন মানুষ ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, তখন তার থেকে ঈমান বের হয়ে যায়। ঈমান তার মাথার উপর ছায়ার মত অবস্থান করে; যখন সে বিরত হয় তখন ঈমান আবার ফিরে আসে।’ (তিরমিজি)

ব্যভিচারের ধরন

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে জেনা-ব্যভিচারের ধরনও উল্লেখ করেছেন। যাতে মানুষ সব ধরণের জেনা-ব্যভিচার থেকে মুক্ত থাকতে পারে। তাহলো-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আদম সন্তানের উপর ব্যভিচারের কিছু অংশ লিপিবদ্ধ হয়েছে; সে অবশ্যই তার মধ্যে লিপ্ত হবে। (তাহলো)-

১. দুই চোখের ব্যভিচার হল দৃষ্টি;

২. আর তার দুই কানের ব্যভিচার শ্রবণ;

৩. মুখের ব্যভিচার হল কথা বলা;

৪. হাতের ব্যভিচার হল স্পর্শ করা এবং

৫. পায়ের ব্যভিচার হল পদক্ষেপ আর

৬. অন্তরে ব্যভিচারের আশা ও ইচ্ছার সঞ্চার হয়, অবশেষে লজ্জাস্থান একে সত্যে অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।’ (মুসলিম)

জেনা-ব্যভিচার থেকে বাঁচার উপায়

জেনা-ব্যভিচার থেকে বেঁচে থাকা সবার জন্য জরুরি। কবিরা গুনাহমুক্ত জীবন গড়তে জেনা-ব্যভিচারের ধরনগুলো এড়িয়ে চলার বিকল্প নেই। এ জন্য যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন তাহলো-

১. নারী-পুরুষ অবিবাহিত হলে বিয়ে করা।

২. বিবাহিত হলে স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি এবং স্ত্রী তার স্বামীর প্রতি মনোযোগী হওয়া।

বিয়ে করা সম্ভব না হলে…

১. একাকি বসবাস করা থেকে বিরত থাকা।

২. আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ/জিকির করা।

৩. জান্নাতের নেয়ামত ও জাহান্নামের শাস্তি সম্পর্কে জানা।

৪. সপ্তাহিক (সোম ও বৃহস্পতিবার) এবং মাসিক (আরবি মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখ) রোজা রাখা। তাতেও বিয়ে ছাড়া থাকতে কষ্ট হলে একদিন পর একদিন রোজা রাখা।

৫. বিপরীত লিঙ্গে দিকে না তাকানো ও কথা বলা থেকে বিরত থাকা। অর্থাৎ নারী ইচ্ছাকৃতভাবে পুরুষের দিকে আবার পুরুষ নারীর দিকে না তাকানো।

সর্বোপরি পাপ না করার জন্য মনকে দৃঢ়ভাবে স্থির করতে হবে। সব সময় আল্লাহকে ভয় করতে হবে। একান্ত নির্জনে থাকা অবস্থায় জেনা-ব্যভিচার সম্পর্কিত পাপ করার সম্ভাবনা থাকলে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় চোখ, কান, হাত-পা ও অন্তরের কামনা-বাসনাসহ জেনা-ব্যভিচারের সব ধরনের আক্রমণ থেকে নিজেদের হেফাজত করার তাওফিক দানর করুন। আমিন।

রাজশাহীর সময় / এম আর