চলমান বহুমূখী বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী সংহতি জোরদার এবং সু-সমন্বিত সাড়াদান প্রক্রিয়া গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম এমপি। তিনি বলেন, "গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপের চ্যাম্পিয়নদের একজন হিসেবে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংকটের ধরণ, মাত্রা ও প্রভাবের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বৈশ্বিক সাড়াদান ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের সাথে কাজ করে চলেছেন”।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘ সদর দফতরে উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরাম (এইচএলপিএফ) ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত - “২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির অর্জন ত্বরান্বিত করা: চলমান সংকট মোকাবিলা এবং চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠা” শীর্ষক মন্ত্রী পর্যায়ের এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রদত্ত বক্তব্যে এসকল কথা বলেন তিনি। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ও সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
কোভিড-১৯ অতিমারি, জলবায়ু পরিবর্তন ও ইউক্রেনের যুদ্ধের মতো বহুবিধ এবং ওভারল্যাপিং সঙ্কটসমূহের প্রভাবের পাশাপাশি অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের প্রভাব তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এসকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও যে ঘুরে দাঁড়ানো যায় তা বাংলাদেশ দেখাতে সক্ষম হয়েছে। আমরা আমাদের অর্থনীতিকে সচল রাখতে ২২ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা দিয়েছি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত করা হয়েছে। এছাড়াও, আমরা ভ্যাকসিনের জন্য বিলিয়ন ডলার খরচ করেছি”।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের "সমগ্র-সমাজ" দৃষ্টিভঙ্গি, জাতীয় তথ্য ভান্ডার, এসডিজি ট্র্যাকার এবং স্থানীয়করণের প্রচেষ্টাসমূহ এসডিজি বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করার পথ তৈরি করেছে।
বাংলাদেশ গৃহীত উদ্ভাবনী, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং জন-কেন্দ্রিক অভিযোজন কৌশলের ওপর আলোকপাত করে প্রতিমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী সংহতি ও অংশীদারিত্বের প্রতিষ্ঠার উপর জোর দেন। বাংলাদেশের উদাহরণ টেনে তিনি আরও বলেন, দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবিলা ও সংকট ব্যবস্থাপনায় আমরা আজ রোল মডেলে পরিণত হয়েছি।
প্রতিমন্ত্রী জাতিসংঘের নেতৃস্থানীয় সংস্থা, উন্নয়ন অংশীদার, বহুপাক্ষিক দাতা এবং বেসরকারি খাতকে সদস্য দেশসমূহের জাতীয় প্রচেষ্টাকে সমর্থন যোগানো, বিশেষ করে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলিকে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান যাতে তারা টেকসই, ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় ফিরে যেতে পারে।
এর আগে ইরাকের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পরিকল্পনা মন্ত্রী খালিদ নাজিম; অ্যান্ডোরার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিজ্ মারিয়া উবাচ আই ফন্ট; ডোমিনিকা-এর পরিকল্পনা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা, টেকসই উন্নয়ন এবং নবায়নযোগ্য শক্তির মন্ত্রী ড. ভিন্স হেন্ডারসন; দক্ষিণ আফ্রিকার পরিকল্পনা, পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন মন্ত্রী মন্ডলি গুঙ্গুবেলে; ইউরোপিও ইউনিয়নের ফেডারেল মন্ত্রী মিজ্ ক্যারোলিন; জাতিসংঘে নিযুক্ত টোঙ্গার স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ভিলিয়ামি ভাইঙ্গা টোন; এবং জাতিসংঘে নিযুক্ত টুভালুর স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত স্যামুয়েলু লালোনিউ এর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
এসকল বৈঠকে তিনি ২০২২-২৩ মেয়াদে মানবাধিকার কাউন্সিল নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রার্থীতাসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
আগামীকাল, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সাথে ভেনিজুয়েলার বহুপাক্ষিক বিষয়ক উপমন্ত্রী এবং কাজাখস্তানের জাতীয় অর্থনীতির মন্ত্রীর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম জাতিসংঘ সদরদপ্তরে চলমান উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরাম(এইচএলপিএফ) ২০২২-এ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
রাজশাহীর সময়/এ