১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ০১:৪৯:০৭ অপরাহ্ন


সুস্মিতা সেনের প্রেমের ফাঁদে এক ডজন পুরুষ
তামান্না হাবিব নিশু:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৭-২০২২
সুস্মিতা সেনের প্রেমের ফাঁদে এক ডজন পুরুষ সুস্মিতা সেনের প্রেমের ফাঁদে এক ডজন পুরুষ


বনলতা সেন যেই আইকন হল,সব সেন হল বিখ্যাত।না থাক পাখির চোখ, ইনস্ট্যান্ট নেশা,রমা, রিনা, সুস্মিতা যত।’

জীবনানন্দের বনলতা সেন থেকে বাস্তবের সুচিত্রা সেন, অপর্ণা সেন, মুনমুন সেন বা সুস্মিতা সেন সব সেনদের রূপেই পাগল হয়েছে গোটা বিশ্ব। তাঁদের প্রেমেও পড়েছে শতশত পুরুষ। ‘প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে, কে কোথা ধরা পড়ে, কে জানে…!’

এক বার নয়, দু’বার নয়, বারবার মিস ইন্ডিয়া তথা মিস ইউনিভার্স সুস্মিতা সেনের প্রেমের ফাঁদে পড়েছেন এক ডজনের বেশি পুরুষ। বর্তমানে আবার সুস্মিতা তাঁর প্রেম নিয়ে শিরোনামে। দেশের প্রথম সারির শিল্পপতি ও ‘আইপিএল’ প্রতিষ্ঠাতা ললিত মোদীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন মিস সেন। ললিত-সুস্মিতার প্রেম নিয়ে জল্পনা ও কল্পনা দুইই তুঙ্গে। ললিত নিজেই ঘোষনা করেছেন এই প্রেমের কথা, সঙ্গে যুগলের ছবিও পোস্ট করেছেন। বিপত্নীক ও একাধিক সন্তানের পিতা, প্রৌঢ় ললিতকে তাই এই মুহূর্তে অন্যতম ভাগ্যবান পুরুষ বলে মনে করছে গোটা দেশ।

তবে আমাদের বাংলার মেয়ে, সুন্দরী সুস্মিতা আরো বহু ক্ষমতাবান রূপবান প্রেমিকের সঙ্গেই মজেছেন বারবার। কোনও প্রেমই বিয়ে অবধি গড়ায়নি অবশ্য। বারবার মন ভেঙেছে সুস্মিতার, হয়তো তিনিও ভেঙেছেন। তবু সেনসেশান গার্ল সুস্মিতা সেন বারংবার প্রেমে থেকেছেন, খুল্লামখুল্লা।

রজত তারা

সুস্মিতার প্রথম প্রেম রজত তারা। তখনও বিশ্বসুন্দরীর খেতাব জোটেনি তাঁর। দিল্লিবাসী, সদ্য যৌবনে পা দেওয়া সুস্মিতা সে সময়েই রজতের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। মিস ইউনিভার্স খেতাব জয়ের পরই সে সম্পর্কে ইতি টানেন সুস্মিতা।

বিক্রম ভাট

মিস ইউনিভার্স খেতাব জয়ের পরে অনেক ছবির অফার পান সুস্মিতা। সেসবের মধ্যে থেকে বেছে নেন মহেশ ভট্টর ‘দস্তক’। এটি সুস্মিতার প্রথম ডেবিউ ছবি। বিক্রম ছিলেন এই ছবির চিত্রনাট্যকার। ১৯৯৬ সালে ‘দস্তক’ ছবির সেটে প্রেমালাপ শুরু হয় তাঁদের। বিক্রম ব্যক্তিগত জীবনে সুখী ছিলেন না। সেই ক্ষততে মলম লাগান নবাগতা সুস্মিতা। শ্যুটিং ছেড়ে তিন সপ্তাহের জন্য বেপাত্তা হয়ে যান বিক্রম। তিনি বলেছিলেন, চিত্রনাট্য লিখতে একা থাকার প্রয়োজন ছিল তাই তিনি আমেরিকা যান। কিন্তু সামনে চলে আসে, বিক্রমের সফরসঙ্গী হয়েছিলেন সুস্মিতা। বিবাহিত বিক্রমের সঙ্গে সুস্মিতা বারবারই ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন। শেষ অবধি বিক্রমের স্ত্রী তাঁকে ডিভোর্সও দেন। 

সবাই ভেবেছিল এবার হয়তো সুস্মিতা-বিক্রমের সম্পর্ক পরিণতি পাবে। কিন্তু এর পরে তাঁদের সম্পর্কে দূরত্ব বাড়তে থাকে। দুজনেই হয়তো অপরিণত ছিলেন, তাই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের মতো জটিল বিষয়কে কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা বুঝতে পারেননি। বিক্রম আত্মহননেরও চেষ্টা করেন। বিক্রমের হাতের কাজও কমে যায় এই সম্পর্কের ফলে।

ওয়াসিম আক্রম

পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের দুর্জয় পৌরুষে আকৃষ্ট হয়েছেন বহু ভারতীয় নারী। সুস্মিতাও পড়েন সেই তালিকায়। একটি ডান্স রিয়্যালিটি শোয়ের মাধ্যমে কাছাকাছি আসেন সুস্মিতা-ওয়াসিম। ইতিমধ্যে আক্রমের প্রথম স্ত্রী মারা যান। তখন যেন আরও গভীরতা পায় সুস্মিতা-ওয়াসিম সম্পর্ক। কিন্তু সেই সম্পর্ক পরিণতি পায় না। বাঙালি হিন্দু সুস্মিতাকে ছেড়ে অন্য এক বিদেশিনীকে দ্বিতীয় স্ত্রীর আসনে বসান ওয়াসিম।

অনিল আম্বানি

দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি অনিল আম্বানির সঙ্গে মন বিনিময় হয় অভিনেত্রী সুস্মিতা সেনের। শোনা গেছিল, আম্বানির ঘরণী হতে চলেছেন সুস্মিতা। সুস্মিতাকে ২২ ক্যারাটের হীরের আংটিও উপহার দিয়েছিলেন অনিল! স্ত্রীকে ডিভোর্সও দিতে চান তিনি অনিলের স্ত্রী ছিলেন আশির দশকের অভিনেত্রী টিনা মুনিম। অনিল এবং টিনার সম্পর্কে চিড় ধরে সুস্মিতাকে কেন্দ্র করে।

এমনও শোনা যায়, সুস্মিতার দত্তক কন্যা রেনে আসলে অনিল-সুস্মিতার গোপন ভালবাসার ফসল। রেনে নাকি ওঁদের লাভ চাইল্ড। টিনাও আবার লিভ ইন করতেন রাজেশ খান্নার সঙ্গে। তার পরেও টিনা তাঁর সংসারে রাশ টেনে ধরেন। সুস্মিতার ছায়া পড়তে দেননি সেখানে।

রণদীপ হুডা

সুঠাম, জিমচর্চিত শরীরে নারীকুলের হৃদয় হরণ পুরুষ ছিলেন রণদীপ হুডা। ‘কর্মা’ ও ‘হোলি’– এই ছবিদু’টির শ্যুটিং চলাকালীন রণদীপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে সুস্মিতার। বিভিন্ন প্রোমোশন অনুষ্ঠানে দুজনে কাছাকাছি এলেও প্রেম টেকেনি শেষমেশ। যদিও তাঁরা দু’জনে ভাল বন্ধু এখনও, যা সচরাচর হয় না।

এছাড়াও স্বল্পমেয়াদী ও স্বল্পচর্চিত একাধিক প্রেম এসেছিল সুস্মিতার জীবনে।

সঞ্জয় নারাং: বিক্রম ভাটের সঙ্গে প্রেম ভেঙে একা হয়ে পড়া সুস্মিতার মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন হোটেলমালিক সঞ্জয়। সম্পর্ক অবশ্য বেশি দূর গড়ায়নি।

বান্টি সচদেব: বান্টির সঙ্গে সুস্মিতার প্রেমের গল্প বেশ অল্প। অল্প দিনের প্রেম পেরিয়েই সম্পর্কে ইতি টানেন দু’জনে।

সাবির ভাটিয়া: হটমেলের প্রতিষ্ঠাতা, ইন্দো-আমেরিকান ব্যবসায়ী সাবিরের প্রেমেও এক সময়ে মজেছিলেন সুস্মিতা। সে ভালবাসাও টেকেনি।

ঋত্বিক ভাসিন: মুম্বইয়ের এক রেস্তোরাঁর মালিক তিনি। চার বছর সুস্মিতা তাঁকে ডেট করেন। তবে এই সম্পর্কও টেকেনি। কেন সম্পর্ক ভাঙে, জানা যায়নি।

মুদস্‌সর আজিজ: সুস্মিতা-মুদস্‌সরের প্রেমও অল্প দিনের। পরিচালক মুদস্‌সরের সঙ্গে আলাপ থেকে সম্পর্কের সূত্রপাত ‘দুলহা মিল গয়া’র সেটে। বিচ্ছেদও হয় ক’দিনের মধ্যেই।

শেষমেশ ললিত মোদী

আইপিএলের প্রথম চেয়ারম্যান ললিত মোদি বর্তমানে ক্রিকেট দুনিয়া থেকে দূরে। দুর্নীতির অভিযোগে আইপিএল থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হওয়া এই ক্রিকেট প্রশাসক দেশ থেকে ফেরার। তবে সুস্মিতা সেনকে প্রেমিকা করে ফের খবরের শিরোনামে মোদী। কয়েক দিন আগেই সুস্মিতা সেন মালদ্বীপে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন। ছুটিটা তাঁর কন্যাদের সঙ্গেই কাটাচ্ছেন বলে জানা গিয়েছিল।

কিন্তু ললিত সামনে আনলেন, সুস্মিতার সফরসঙ্গী ছিলেন তিনিও। সুস্মিতার সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দুটি ছবি আর অতীতে তোলা দুটি ছবি দিয়ে দিয়ে ললিত লিখেছেন, ‘পরিবারের সঙ্গে দুর্দান্ত একটা সফর শেষে করে লন্ডনে ফিরলাম।’ কোথায় কোথায় ঘুরেছেন, সেটা হ্যাশট্যাগ দিয়েও বুঝিয়ে দিয়েছেন— মালদ্বীপ, সারদিনিয়া। সুস্মিতার সঙ্গে ছবি দেওয়ার রহস্যও জানিয়ে দেন টুইটে, লেখেন, ‘সঙ্গে আরও ছিল আমার অর্ধাঙ্গিনী সুস্মিতা সেন। অবশেষে নতুন জীবনের নতুন শুরু। আনন্দে ভেসে যাচ্ছি।’ তবে ৫৬ বছর বয়সি মোদী জানিয়েছেন, তাঁদের এখনও কাগজে-কলমে বিয়ে এখনও হয়নি। হবে শিগ্গির।

বঙ্গতনয়া কি ললিত মোদীকে শেষমেষ বিয়ে করবেন? শেষ কথা সুস্মিতাই বলবেন।