২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৪:১৩:৫২ অপরাহ্ন


বাংলা গানের কিংবদন্তি সংগীত পরিচালক আলম খান আর নেই
বিনোদন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৭-২০২২
বাংলা গানের কিংবদন্তি সংগীত পরিচালক আলম খান আর নেই বাংলা গানের কিংবদন্তি সংগীত পরিচালক আলম খান আর নেই


বাংলা গানের কিংবদন্তি সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলম খান আর নেই। আজ শুক্রবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টা ৩২ মিনিটে মারা গেছেন তিনি। পুত্র-সংগীত পরিচালক আরমান খান কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বার্ধক্য জনিত কারণেই মারা গেছেন বলে আরমান খান জানান।

আরমান খান বলেন, ‘প্রায় এক-দেড় মাস থেকেই আব্বার শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করিয়েছিলাম।  গতকাল তাকে লাইফ সাপোর্টেও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। ’ 

এর আগে ফেসবুকে আরমান খান লিখেছেন, ‘আব্বা চলে গেলেন না ফেরার দেশে। আজ বেলা ১১টা ৩২ মিনিটে। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। ’

আলম খান পপ সম্রাট আজম খানের বড় ভাই। তিনি বহু শ্রোতাপ্রিয় গানের সুরকার।

১৯৭০ সালে আবদুল জব্বার খানের ‘কাঁচ কাটা হীরে’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। তারপর অসংখ্য ছবির সংগীত পরিচালনা করেন। সৃষ্টি করেন একের পর এক শ্রুতিমধুর এবং জনপ্রিয় গান।  

আলম খানের সুর ও সংগীত পরিচালনায় সৃষ্ট অসংখ্য গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো- ওরে নীল দরিয়া, হীরামতি হীরামতি ও হীরামতি, হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস দম ফুরাইলে ঠুস, আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো গন্ধ বিলিয়ে যাই, ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, কি জাদু করিলা পিরিতি শিখাইলা, বুকে আছে মন, তুমি যেখানে আমি সেখানে, সবাই তো ভালবাসা চায়, ভালবেসে গেলাম শুধু, চাঁদের সাথে আমি দেবো না তোমার তুলনা, আমি একদিন তোমায় না দেখিলে, আজকে না হয় ভালোবাসো আর কোনদিন নয়, তেল গেলে ফুরাইয়া, আমি তোমার বধূ তুমি আমার স্বামী, জীবনের গল্প বাকি আছে অল্প, তিন কন্যা এক ছবি, মনে বড় আশা ছিল, দুনিয়াটা মস্ত বড়, ও সাথীরে যেও না কখনো দূরে, বেলি ফুলের মালা পরে, কাল তো ছিলাম ভাল, ওরে ও জান আমারই জান, চুমকি চলেছে একা পথে, ভালবাসিয়া গেলাম ফাঁসিয়া, তুমি কি এখন আমারই কথা ভাবছো, আকাশেতে লক্ষ তারা চাঁদ কিন্তু একটাইরে ইত্যাদি।  

আলম খান শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ‘বড় ভাল লোক ছিল’ (১৯৮২), ‘তিন কন্যা’ (১৯৮৫), ‘সারেন্ডার’ (১৯৮৭), ‘দিনকাল (১৯৯২) এবং ‘বাঘের থাবা’ (১৯৯৯) ছবিগুলোতে। শ্রেষ্ঠ সুরকার হিসেবে ২০০৮ সালে পেয়েছেন ‘কি জাদু করিলা’ ছবির জন্য।  

২০১১ সালের মাঝামাঝি সময়ে জানা যায় আলম খান ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত। ব্যংককের একটি হাসপাতালে ৬ জুন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আমার ডান দিকে ফুসফুসের একটি অংশ ফেলে দেওয়া হয়। আজম খান যেদিন মারা যান, সেদিন তিনি ব্যাংককে চিকিৎসাধীন ছিলেন, তাই মৃত্যুর খবরটি তখন তাকে কেউ আমাকে জানায়নি।  

২০১৩ সালে আলম খান প্রায় তিন বছর পর নতুন করে একটি গানের সুর করেন। এসএ টিভিতে প্রচারিত রিয়েলিটি শো ‘বাংলাদেশি আইডল’- এর জন্য ‘বাংলা গানে বিশ্বজয় আমরা করবই/স্বপ্নের দিগন্তটা হাতে ধরবই’ এমন কথার থিম সং এর সুর করেন আলম খান।  

আলম খানের জন্ম ১৯৪৪ সালের ২২ অক্টোবর সিরাজগঞ্জের বানিয়াগাতি গ্রামে। ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী স্কুল থেকে মেট্রিক পাশ করেন তিনি। এই স্কুলে থাকা অবস্থায়ই গানের প্রতি আগ্রহী হন এবং মায়ের উৎসাহে তিনি গানের চর্চা শুরু করেন। এরপর বাবাও সমর্থন দেন।  

আলম খানের  স্ত্রী গুলবানু খান। দুই ছেলে আরমান খান ও আদনান খান এবং কন্যা আনিকা খান।