২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৪:০৬:০০ অপরাহ্ন


রাজধানীতে ডাকাত চক্রের ৭ সদস্য গ্রেফতার
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০১-২০২২
রাজধানীতে ডাকাত চক্রের ৭ সদস্য গ্রেফতার রাজধানীতে ডাকাত চক্রের ৭ সদস্য গ্রেফতার


রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে রাতভর ডাকাতি করতো একটি চক্র। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিতে গাড়ির নম্বর প্লেট ঢেকে দিতো তারা। চক্রটি পুরো রাজধানী জুড়ে দাপিয়ে বেড়াতো। সপ্তাহে একদিন ডাকাতি করতো চক্রটি। এমন একটি চক্রের ৭ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগ। বাংলাদেশে অধ্যয়নরত ভারতীয় দুই নাগরিকের ছিনতাইয়ের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করে এসব তথ্য জানায় গোয়েন্দা পুলিশ।

গতকাল শুক্রবার রাজধানী ঢাকা ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলো মো. ফখরুল ইসলাম ওরফে ফকু, মো. আলমাস, মো. সামুন, মো. আব্দুল্লাহ আল ইউসুফ আহম্মেদ ওরফে আসিক, মো. শাহিন, মো. বাবু, মো. শফিকুল ইসলাম।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১ টি প্রাইভেটকার, ২ টি চাপাতি, ১ টি ল্যাপটপ ও ১ টি মোবাইলসহ ১৮ টি মোবাইল, ৪৩ হাজার ৯৫০ ভারতীয় রুপি ও নগদ ৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

শনিবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টোরোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ডিবি-দক্ষিণ) মো. মাহবুব আলম।

তিনি বলেন, রাজধানীর রমনা থানার মগবাজারের ওয়ারলেস এলাকায় ডা. সিরাজুল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অধ্যয়নরত ভারতীয় দুই শিক্ষার্থী শাহীল আহমেদ ও আসিফ ইকবাল দুই সপ্তাহের ছুটিতে ভারতে ফেরার পথে গত ২৩ জানুয়ারি ভোর রাতে ছিনতাইয়ের শিকার হন। ঘটনার সময়ে সাদা রঙের গাড়িতে থাকা চারজন তাদের পথ রোধ করে। তারা সবাই মুখোশ পরা ছিল। চারজনের মধ্যে দু’জন দুই শিক্ষার্থীর গলায় ছুরি ধরে। অপর দুজন তাদের সঙ্গে থাকা ট্রলি ব্যাগ, হ্যান্ডব্যাগ, ল্যাপটপ, মোবাইল, ৫৭ হাজার ভারতীয় রুপি ও ৭৬ হাজার টাকা নিয়ে যায়। ঘটনার দিন ভুক্তভোগীরা রমনা থানায় একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করেন।

মাহবুব আলম বলেন, থানা পুলিশের পাশাপাশি মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগ। মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত একটি ডাকাত দলের সন্ধান পাওয়া যায়। ছিনতাইকালে চারজন উপস্থিত থাকলেও ডাকাত দলের সাত সদস্যের তথ্য পাওয়া যায়।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার আরও বলেন, গ্রেপ্তার ডাকাত চক্রের সদস্যরা অভিনব কায়দায় ডাকাতি করে আসছিলো। তারা বিভিন্নজনের কাছ থেকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে রাতভর ডাকাতি করতো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিতে তারা গাড়ির নম্বর প্লেট ঢেকে দিতো।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, চক্রটি পুরো রাজধানী জুড়ে দাপিয়ে বেড়াতো। আর সুযোগ পেলেই তারা সাধারণ মানুষের সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত চলে যেত। চক্রটি সপ্তাহে একদিন ডাকাতি করতো। চক্রের প্রত্যেক সদস্যের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের মধ্যে মূলহোতা অনিকের বিরুদ্ধে ৮টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। ঘটনার পরে ছিনতাই মামলা হলেও ডাকাতির প্রমাণ পাওয়ায় এই মামলা ডাকাতিতে রূপান্তর হবে।

রাজধানীতে প্রায়ই এ ধরনের ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও পুলিশের কোন পদক্ষেপ নেই কেন জানতে চাইলে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, টহল পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও নজরদারি রয়েছে। যেখানে ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো ঘটছে সেখানে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়েই ছিনতাইকারীরা এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে। যারা ছিনতাইয়ের কাজ করে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসাই গুরুত্বপূর্ণ কাজ, সেই কাজটিই ডিবি পুলিশ করে যাচ্ছে।

প্রাইভেটকার যারা ভাড়া দিচ্ছেন তাদের উদ্দেশে ডিবির পরামর্শ সম্পর্কে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় গাড়ির মালিক জানতেন না তার গাড়ি ভাড়া নিয়ে ছিনতাই কাজে যাচ্ছে। এসময় পরিচিত অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে গাড়ি ভাড়া না দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি।

আসামিদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক এর নির্দেশনায় রমনা জোনাল টিমের টিম মিশু বিশ্বাস এর নেতৃত্বে এ অভিযানটি পরিচালিত হয়।

রাজশাহীর সময় /এএইচ