২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৮:২৬:৪৬ অপরাহ্ন


উজানের ঢলে এবার ফুঁসতে শুরু করেছে পদ্মা শুরু হয়েছে ভাঙ্গন
মঈন উদ্দীন
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৬-২০২২
উজানের ঢলে এবার ফুঁসতে শুরু করেছে পদ্মা শুরু হয়েছে ভাঙ্গন উজানের ঢলে এবার ফুঁসতে শুরু করেছে পদ্মা শুরু হয়েছে ভাঙ্গন, আতঙ্কে তীরবর্তী মানুষ


উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পানি রাজশাহীতে বিপৎসীমার ৫ দশমিক ৮৪ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মার পানি। রাজশাহী পয়েন্টে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় পদ্মার পানির উচ্চতা মাপা হয়েছে ১২ দশমিক ৬৬ মিটার। এখানে বিপৎসীমা নির্ধারণ করা রয়েছে ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। এভাবে বাড়তে থাকলে দ্রুতই বিপৎসীমা ছুঁইয়ে যাবে পদ্মার পানি বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে পদ্মার পানি বাড়তে শুরু করায় নদী ঘেঁষে গড়ে ওঠা শহরে এখনও ভাঙন দেখা না দিলেও রাজশাহীর চারঘাট-বাঘা, পবা ও গোদাগাড়ী এলাকায় এরই মধ্যে ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। মাত্র কয়েক দিন আগের মরা পদ্মায় আবারও স্রোতের গর্জন শোনা যাচ্ছে। নদীর আনাচে কানাচে এখনই টইটম্বুর হয়ে উঠছে। তাই এবার সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের আগেই তীরবর্তী মানুষের মধ্যে বাড়ছে ভাঙন আতঙ্ক।  দেশের অন্যান্য নদনদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে পানি বাড়ছে পদ্মায়ও। তাই বর্ষার শুরুতেই নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন রাজশাহীর এই উপজেলাগুলোয় থাকা পদ্মার পাড়ের ভাঙন শোষিত মানুষ। প্রায় দেড় যুগেরও বেশি সময় থেকে নদীবক্ষে পৈত্রিক ভিটা ও আবাদি জমি হারিয়ে এই তারা এখন নিঃস্ব!

নদী ভাঙনের শিকার এসব মানুষের অভিযোগ, শুষ্ক মৌসুমে এসব পয়েন্টে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কখনোই স্থায়ী পদক্ষেপ নেয় না। যে কারণে বর্ষা ও ভাদ্র মাসে ফুলে ফেঁপে ওঠে পদ্মা। আর ভাঙনের মুখে পড়ে নদী তীরবর্তী মানুষ।ভাঙনের কবলে পড়ে অনেকেই হয়েছেন ভূমিহীন। বছর যায়, বছর আসে। কিন্তু পদ্মার আগ্রাসী আচরণ থেকে রক্ষা মেলেনা নদী তীরবর্তী মানুষগুলোর।

ইতিমধ্যে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর ও সদর ইউনিয়নের প্রায় চারটি গ্রামে ভাঙন শুরু হয়েছে। এছাড়া রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সর্ব দক্ষিণ পূর্বে থাকা সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন চকরাজাপুরেও ভাঙন দেখা দিয়েছে।

এদিকে পদ্মার পানি হু-হু করে বাড়তে থাকায় ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে রাজশাহীর পবা ও গোদাগাড়ী উপজোর নদীর তীরবর্তী এলাকায়ও। এর আগে রাজশাহী মহানগর এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছিল ২০১৬ সালে। ওই সময় পদ্মা ঘেঁষে থাকা শ্রীরামপুর পুলিশ লাইন এলাকার বাঁধে তিন মিটার এলাকা জুড়ে ফাটল দেখা দেয়। যদিও তড়িঘড়ি করে জিও ব্যাগ ফেলে সে সময় কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে বাঁধের ভাঙন ঠেকানো হয়। তবে এরপর শহর রক্ষা বাঁধের ওই অংশে আর সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি।

রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গেজ রিডার এনামুল হক জানান, মূলত গত ১৭ মে থেকে রাজশাহীতে পদ্মার পানি বাড়তে শুরু করেছে। ওই দিন সন্ধ্যা ৬টায় রাজশাহী পয়েন্ট পদ্মা নদীর পানির উচ্চতা মাপা হয়েছিল- ৮ দশমিক ৭৫ মিটার। এরপর ২৯ মে পর্যন্ত পানির উচ্চতা ছিল ৯ মিটারের মধ্যে। ৩০ মে পানির উচ্চতা কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৭৪ মিটারে।

১৫ জুন সন্ধ্যা ৬টায় ছিল ১১ দশমিক ২২ মিটার, ২০ জুন সন্ধ্যা ৬টায় ছিল ১২ দশমিক ৩৫ মিটার এবং সর্বশেষ ২১ জুন সন্ধ্যা ৬টায় ছিল ১২ দশমিক ৬৬ মিটার।

রাজশাহীর সময়/এ