১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ০৯:৫৪:১৩ পূর্বাহ্ন


রাবির হলে বিকালে ছাত্রলীগের তালা, সন্ধ্যায় নেতার বিছানাপত্র বাইরে বের করে দিয়েছে প্রভোস্ট
আল্-মারুফ, রাবি প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৬-২০২২
রাবির হলে বিকালে ছাত্রলীগের তালা, সন্ধ্যায় নেতার বিছানাপত্র বাইরে বের করে দিয়েছে প্রভোস্ট ফাইল ফটো


ছাত্রলীগের এক অনাবাসিক শিক্ষার্থীকে হল থেকে নামিয়ে অন্য এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে হলে উঠিয়ে দেয়ার জেরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ছাত্রলীগের অনাবাসিক ছাত্রলীগ নেতা হলটির মূল গেটে ভেতর থেকে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) বিকাল সোয়া ৩টায় হলের সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শাকিল এর নির্দেশে হলে দীর্ঘদিন থেকে অবস্থান করে আসা অনাবাসিক ছাত্রলীগ নেতা শামীম ওসমান নামের ওই নেতা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতা হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। তারা দুজনই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী। ৪৩০ নম্বর রুম থেকে বিছানাপত্র নিয়ে যাওয়া অনাবাসিক ছাত্রলীগ কর্মীর নাম মোঃ শফিউল্লাহ্, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী। 

এনিয়ে সাখাওয়াত হোসেন শাকিল বলেন, ৪৩০ নম্বর রুমে আমরা একটা ছেলেকে উঠিয়েছি। ছেলেটির অর্থনৈতিক সমস্যা ছিল। আমরা ডাবল বেডের রুমে অতিরিক্ত একটি বেড ঢুকিয়ে তাকে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রভোস্টকে ওই ছেলের আবাসিক কার্ড করে দিতে বলা হয়েছিল অনেকবার, কিন্তু করে দেয়নি। আজ ওই ছেলের অনুপস্থিতিতে প্রভোস্ট তার বিছানাপত্র নামিয়ে অন্য আরেকটি ছেলেকে উঠিয়ে দিয়েছেন। ওই ছেলের বিছানার নিচে ২০ হাজার টাকাও ছিল। এখন ২০ হাজার টাকাসহ তার আবাসিকতাও প্রদান করতে হবে। 

এনিয়ে হল ছাত্রলীগ সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি হলে তালা মারার বিষয়টি কিছুক্ষণ আগে শুনেছি, কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আমি কিছু জানতাম না। হলের সভাপতি- সেক্রেটারি থাকাবস্থায় এমন কাজ সে কী করে করতে পারে আমার জানা নাই। আমি রাজশাহীর বাইরে আছি। আমি গিয়ে সেক্রেটারির সাথে কথা বলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো। 

এরপর হল ছাত্রলীগ সেক্রেটারি নাঈম হাসানকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, এ ঘটনা নিয়ে আমার কিছু জানা নেই। 

এ ঘটনার পর বিকাল সোয়া ৪টার দিকে হলের বেশ কয়েকজন আবাসিক শিক্ষকসহ হলটির প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন এসে তালা খুলে ভিতরে প্রবেশ করেন। এরপর তারা হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর সাথে বসে উক্ত ঘটনা নিয়ে কথা বলে সমাধান করার চেষ্টা করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন হল ছাত্রলীগ সেক্রেটারিসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। হল প্রভোস্ট অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শামীম ওসমানকে ইতোপূর্বে তার ভুলগুলোকে স্বীকার করে ক্ষমা করে দেয়ার জন্য আবেদন করতে বলে, যাতে আবাসিক শিক্ষকবৃন্দের সাথে বসে ওই নেতার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। তখন ওই নেতা ওভাবে আবেদন করতে রাজি না হয়ে শাকিলসহ বের হয়ে গেলে প্রভোস্ট তখন হল কর্মচারীকে ২২০ নম্বর রুম থেকে ওই নেতার (শামীম) বিছানাপত্র নিয়ে আসতে বলে। হল কর্মচারী তখন ওই রুম থেকে একটি বিছানা নিয়ে আসলে তার কিছুক্ষণ পর শাকিল প্রভোস্ট রুমে এসে তাকে না বলে এই কাজ করার কারণ জানতে চায় এবং শাসিয়ে যায়। এরপর থেকে ওই ছাত্রলীগ নেতা শাকিল প্রভোস্টকে রুমের মধ্যে রেখে বাইরে থেকে বেশ কিছু সময় অবরুদ্ধ করে রাখেন। 

সর্বোশেষ এনিয়ে হলটির প্রভোস্ট বলেন, শাকিলের ব্যবহার কোনোভাবে কাম্য নয়। আমরা কালকে বা পরশু প্রভোস্ট কাউন্সিলের মিটিং করবো। সামগ্রিক সবকিছু নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। আপাতত দুটি বেডই আমরা অফিসে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনে রেখেছি। কী করবো তা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। 

রাজশাহীর সময়/এএইচ