মসজিদগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে মুসল্লিদের উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে। মানছেন না সামাজিক দূরত্ব, পাশাপাশি পরছেন না মাস্ক। ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়। যদিও কয়েকটি মসজিদের ইমাম জুম্মার নামাজের আগে মাইকে মুসল্লিদের স্বাস্থ্যবিধি মানার তাগাদা দিচ্ছেন। তার পরেও স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি সম্ভব হয়ে উঠছে না।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন রাজশাহী বলছে, করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর দিক থেকে বয়স্ক মানুষের সংখ্যাই বেশি। আর বেশির ভাগ বয়স্ক মানুষ মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি। সেই দিক বিবেচনায় মসজিদগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। এনিয়ে মসজিদ কমিটির সহযোগিতা প্রত্যাশা করা হয়।
মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জিনরা কারণ হিসেবে বলছেন- জুম্মার দিনে তুলনামূলক সবাই মসজিদে এসে জামাতের সাথে নামাজ পড়তে সচেষ্ট হন। প্রতিটি মসজিদে জায়গা সঙ্কট- তাই মুসল্লিদের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে হয়। সবাইবে মাস্ক পরে আসতে বলা হয়।
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) নগরীর কাজলা অক্ট্রয় মোড়ে অবস্থিত নাবিল জামে মসজিদ, কাজলা বড়মসজিদ দড়িখরবোনা জামে মসজিদ, পবার মুরারীপুর জামে মসজিদসহ বেশ কিছু মসজিদ ঘুরে দেখা গেছে- মুসল্লিদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে দেখা যায়নি। এছাড়া প্রায় ৪০ শতাংশ মুসল্লির মুখে মাস্কপরা অবস্থায় দেখা গেছে। সেই হিসেবে বেশির ভাগের মুখে মাস্ক ছিল না। তবে শহরের তুলনায় গ্রামের মসজিদগুলো তুলনামূলক মাস্ক ব্যবহারের প্রবণতা অনেক কম। সেই হিসেবে শহরের মুসল্লিরা বেশি মাস্ক ব্যবহার করেন।
নগরীর উপশহর কেন্দ্রীয় মডেল জামে মসজিদের মুসল্লি জয় জানান, মসজিদের ইমাম মাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি বলছেন। এছাড়া সবাই চেষ্টা করছে স্বাস্থ্যবিধি মানার। তবে অনেকেই মাস্ক পরে মসজিদে আসেনি। কেউ কেউ আসলেও যথাযথ স্থানে মাস্ক পরছেন না।
আরেক মুসল্লি জানান, ‘সপ্তায় একটা দিন জুম্মা বার। এইদিনে সবাই মসজিদে আসার চেষ্টা করেন। সবার উদ্দেশ্য জামাতের সাথে নামাজ পড়া। তাই এদিন বেশি ভিড় হয় মসজিদে। যেহেতু করোনা বাড়ছে- তাই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সবার আগে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইমাম জানান, সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি মুসল্লিদের মেনে চলার বিষয়ে বলা হচ্ছে। তার পরেও অনেকেই মাস্ক পরে, আবার অনেকেই পরে না। ওয়াক্ত নামাজগুলোতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। কিন্তু জুম্মার দিনে হয়ে উঠে না- কারণ প্রতিটি মসজিদে জায়গার অভাব আছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন রাজশাহী মহানগরের সুপারভাইজার (প্রশাসন) জাহাঙ্গীর ইসলাম বলেন, ‘রাজশাহী মহানগরীতে ৪৪০টি মসজিদ রয়েছে। আমাদের আওতাধীন মাত্র ৪০টির মতো মসজিদ রয়েছে। তবে সব মসজিদে মুসল্লিদের স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মসজিদে তুলনামূলকভাবে বয়স্ক মুসল্লিই বেশি। তারা করোনায় আক্রান্ত ঝুঁকি বেশি থাকেন। এনিয়ে আমরা মসিজদ কমিটিগুলোর সহযোগিতা পাই না। চিঠি দেওয়া হলেও মসজিদ কমিটি সহযোগিতা পাওয়া যায়না। তারা এক মিনিট সময় নিয়ে মুসল্লিদের স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে বলেন না।
মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ রোধে ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। এর মধ্যে ৮নম্বর দফায় বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন এবং মাস্ক পরিধানের বিষয়ে সকল মসজিদে জুমার নামাজের খুতবায় ইমামরা সংশ্লিষ্টদের সচেতন করবেন। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা এ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
রাজশাহীর সময় / এম আর