২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:৫৯:৫৬ অপরাহ্ন


ট্রলির চাপায় নিহত বৃদ্ধার মামলার সুরাহা হয়নি ২ মাসেও!
এম এইচ রনি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৬-২০২২
ট্রলির চাপায় নিহত বৃদ্ধার মামলার সুরাহা হয়নি ২ মাসেও! ট্রলির চাপায় নিহত বৃদ্ধার মামলার সুরাহা হয়নি ২ মাসেও, ওসি বলছে তদন্ত চরছে!


রাজশাহী মহানগরীতে ২মাস পেরুলেও ট্রলির চাপায় বৃদ্ধা নিহতের আসামীদের গ্রেফতার করেনি মতিহার থানা পুলিশ। এ নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ভুক্তভোগীদের মাঝে। 

তারা বলছেন, ট্রলির মালিক ও চালক প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও অজ্ঞাত কারনে তাদের  গ্রেফতার করছেনা পুলিশ।

জানা যায়, বুধবার (৩০ মার্চ ২০২২) ভোর ৬টায় ট্রলির চাপায় মেমজান (৭০) নামের এক বৃদ্ধা নিহত হয়। তিনি মতিহার থানার চর সাতবাড়িয়া এলাকায় মৃত জিন্নাতের স্ত্রী।

ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচলা করে দেখা যায়, রাস্তা পারাপারের জন্য বৃদ্ধা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ওই সময় দ্রুতগতি সম্পন একটি বেপরোয়া ট্রলি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিজের সাইড থেকে অপর সাইডে দাঁড়িয়ে থানা বৃদ্ধাকে চাপা দেয়। এতে বৃদ্ধা মেমজান ঘটনাস্থলেই মারা যান। সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় দূর্ঘনার সাথে সাথে ট্রলির চালক দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। 

এ ঘটনায় বৃদ্ধার ছেলে মানিক বাদী হয়ে মতিহার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মতিহার থানার মামলা নং-২৭/২২। তাং-৩০-০৩-২০২২।

এজাহারে বর্ণনায় দেখা যায়, একটি সবুজ রংগের ট্রলি। যাহার সিটের উপরের অংশে পরিস্কার বাংলায় লেখা সেহেল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ। প্রোঃ মোঃ নূরুল, মোবাইল-০১৯৬৬-৮১৭২০০লিখা, এর অজ্ঞাতনামা চালক বেপরোয়াভাবে দ্রুত গতিতে উত্তর দিক থেকে এসে ট্রলি চালাইয়া আমার মাকে সামনে থেকে ধাক্কা মেরে রাস্তার পাশে ডাঁসমারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেয়ালের সাথে চেপে দেয়। এতে তার নাক মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হয় এবং রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। 

বৃদ্ধার ছেলে মামলার বাদী মানিকের অভিযোগ, মামলা দায়ের করা ২ মাস ৭দিন হলো । ট্রলিতে পরিস্কার অক্ষরে লেখা ছিলো ট্রলির মালিকের নাম ও মোবাইল নম্বার। 

তারপরও এজাহারে কোন আসামীর নাম উল্লেখ করেননি পুলিশ। 

এই সকল যানবাহন রাস্তায় দাপিয়ে বেড়ালেও আইনগত ভাবে অবৈধ ট্রলি, নসিমন, করিমন, ভুটভুটি রাস্তায় চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। 

তারপরও অজ্ঞাত কারনে ট্রলির মালিক নুরুলকে আসামী করেনি মতিহার থানা পুলিশ। এমনকি এজাহারে কোন আসামীর নামও উল্লেখ করা হয়নি। ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 

সার্বিক বিষয় পর্যলোচনা করে দেখা যায় এখানে গোপন আতাতের গন্ধ রয়েছে। অর্থাৎ পুরো মামলাটি অকার্যকর করার একটি পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার বা গাড়ির মালিককে আসামী করা হয়নি বলে দাবি করেন মামলার বাদী মানিক। তা না হলে এজাহারে আসামীর নাম নেই। ২মাস পার হলেও আসামী গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আবার ট্রলির মালিক ট্রলির জামিন করে দাপটের সাথে এলাকায় ঘুরছে। আর পুলিশ বলছে তদন্ত চলছে।

মানিক আরও বলেন, ট্রলির মালিক নূরুল নিজে থানা থেকে ট্রলি নিয়ে এসেছে। পুলিশ চাইলেই তাকে থানায় গ্রেফতার করতে পারতেন। ওই অবৈধ ট্রলিটি আমার বৃদ্ধা মায়ের জীবন কেড়ে নিয়েছে। এ ব্যপারে তিনি আরএমপি পুলিশ কমিশনার মহাদয়ের সূদৃষ্টি কামনা করছেন।

রোববার দুপুর ২টা ১৮ মিনিট  মুঠো ফোনে জানতে চাইলে মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), মোঃ আনোয়ার আলি তুহিন জানান,  ট্রলির চাপায় বৃদ্ধা মেমজানের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আসামী গ্রেফতার করা হবে বলেও জানান ওসি। 

রাজশাহীর সময়/এইচ