২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:৫৬:৫৫ অপরাহ্ন


ইউক্রেনের পাঁচ ভাগের একভাগ এখন রাশিয়ার দখলে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৬-২০২২
ইউক্রেনের পাঁচ ভাগের একভাগ এখন রাশিয়ার দখলে ফাইল ফটো


১০০ দিনে পড়ল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ১০০ দিনে ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ জমি দখল করে নিয়েছে মস্কো। বৃহস্পতিবার রাতেই ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন যুদ্ধে রাশিয়াকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়ছে না ইউক্রেন। তাঁর দাবি, প্রতিদিনই তাদের গড়ে ১০০ জন সেনা সদস্যের প্রাণ যাচ্ছে।

তিনি আরও দাবি করেছেন, ইউক্রেনের পাঁচ ভাগের একভাগ এলাকাই দখল করে নিয়েছে রাশিয়া। প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। সেই সময় ইউক্রেনের ১০ শতাংশ এলাকার দখল ছিল রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে। ইউক্রেনের দাবি সঠিক হলে, ১০০ দিনে বিশেষ অগ্রসর হতে পারেনি রুশ বাহিনী।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনে ৪,১৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। তারা আরও জানিয়েছে, একই সময়ে আহত হয়েছেন ৪,৯৪৫ জন। রাষ্ট্রসংঘের মতে অধিকাংশ অসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, বিস্ফোরক অস্ত্র, ভারি গোলার আক্রমণ এবং রকেট হামলায়। এর পাশাপাশি, ২ লক্ষ ইউক্রেনীয় শিশুকে মস্কোর পক্ষ থেকে অপরহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। তাঁর আরও দাবি মৃত্যু হয়েছে ২৪৩ জন শিশুর। অন্যদিকে ক্রেমলিনের দাবি, ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত তাদের পক্ষের ১৩৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৩,৮২৫ জন আহত হয়েছেন। তবে এত ক্ষতি স্বীকারের পরও অদূর ভবিষ্যতে এই যুদ্ধ থামার কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

বস্তুত, গত এপ্রিল মাস থেকেই থমকে রয়েছে শান্তি প্রক্রিয়া। ক্রেমলিন থেকে যুদ্ধ বিরতির জন্য কিছু শর্ত আরোপ করে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল কিয়েভে। তবে, তার আর কোনও জবাব দেয়নি ইউক্রেন। সম্প্রতি ডাভোসে আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বৈঠকে জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন, যুদ্ধ শুরুর আগে রুশ সেনা যে অবস্থানে ছিল, সেই অবস্থানেই তাদেরকে ফিরে যেতে হবে। তারপরই কূটনৈতিক আলোচনা ফের শুরু হতে পারে। রুশ নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কিয়েভের এই দাবি মস্কোর পক্ষে নীতিগত কারণে মেনে নেওয়া অসম্ভব। তবে, হাল ছাড়েননি বাকি বিশ্বের রাষ্ট্রনেতারা। ইউক্রেনে উত্তেজনা কমাতে পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ইটালি, ফ্রান্স, জার্মানির রাষ্ট্রপ্র্রধানরা। তবে, কাজের কাজ কিছু হয়নি।

শান্তি প্রক্রিয়া থমকে থাকলেও, থেমে নেই যুদ্ধ। গত মাসেই কৌশলগতভাবে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ মারিওপোল শহর দখল সম্পূর্ণ করেছিল। এবার তাদের ফোকাস পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস এলাকায়। উত্তর-পূর্ব ডনেস্ক এবং লুহাঙ্ক্র-এর পশ্চিমাংশে হামলা চালাচ্ছে রুশ সেনা। সমানে সমানে প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা এমনটাই দাবি কিয়েভের। তারা আরও জানিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ সেভেরোডনেটস্ক শহরে ব্যাপক গোলাগুলি চলছে। অধিকাংশ শহরই দখল করে নিয়েছে রুশ বাহিনী। তবে, তারপরও লড়াইয়ের ময়দান ছাড়তে নারাজ ইউক্রেন। খারখিভের যুদ্ধাঞ্চল পরিদর্শনের পর বলেছেন, ‘আমাদের দেশ শেষ পর্যন্ত জমি রক্ষা করবে, লড়াই করবে এবং অবশ্যই জিতবে’। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগুও সাফ জানিয়েছেন, পশ্চিমী দেশগুলির যতই চাপ থাক, কিয়েভেকে তারা যতই সাহায্য করুক, মস্কোর ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ অব্যাহত থাকবে।

রাজশাহীর সময়/এইচ