২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৪:০২:২০ অপরাহ্ন


বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক জোরদারে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের আগ্রহ প্রকাশ
নোমান ইবনে সাবিত/ বিপি, নিউ ইয়র্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৫-২০২২
বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক জোরদারে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের আগ্রহ প্রকাশ বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক জোরদারে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের আগ্রহ প্রকাশ


মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ (রিপাবলিকান-টেক্সাস) এবং কংগ্রেসম্যান স্টিভ শ্যাবোট (রিপাবলিকান-ওহিও) বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও জোরদার করতে তাদের আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। স্থানীয় সময় বুধবার (১৮ মে) ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিলে সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানের নিজ নিজ কার্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সফররত বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তারা এ আশা ব্যক্ত করেন। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ সহিদুল ইসলাম এবং দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান এমপির নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে উক্ত বৈঠকে প্রতিনিধিদলের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, নাহিম রাজ্জাক এমপি এবং কাজী নাবিল আহমেদ এমপি উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে সংসদীয় প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের অবহিত করেন। তারা বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দক্ষ কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা এবং গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার আরো উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশের আইনপ্রণেতারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মার্কিন মানবিক ও রাজনৈতিক সহায়তার কথা উল্লেখ করেন এবং তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে মিয়ানমারকে সম্ভাব্য সব উপায় রাজি করাতে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের অনুরোধ জানান।

মার্কিন আইনপ্রণেতারা এই বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের উদারতার ভূয়সি প্রশংসা করেন এবং বলেন যে তারা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন।

সংসদীয় প্রতিনিধিদল বাংলাদেশকে ৬৪ মিলিয়ন ডোজ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন অনুদানের জন্য মার্কিন সরকারের প্রশংসা করেন।


অর্থনৈতিক সহযোগিতাঃ


সংসদীয় প্রতিনিধিদল ব্যবসা-বান্ধব বাংলাদেশের বিভিন্ন বৈচিত্রময় খাতে আরো মার্কিন বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবান যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের কাছে পৌছে দেন।  বাংলাদেশের 100% বিদ্যুতায়নের মাইলফলক অর্জনের কথা উল্লেখ করে জনাব ফারুক খান এক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য টেক্সাস-ভিত্তিক মার্কিন জ্বালানি কোম্পানিগুলোর প্রশংসা করেন।

উভয় পক্ষই আগামী দিনে দুদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার আরও সম্প্রসারণ এবং বহুমুখী অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। সিনেট কমিটির পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক সদস্য সিনেটর টেড ক্রুজ দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর জোর দেন। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে টেক্সাস রাজ্য, জ্বালানি খাতে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের সাথে আরও সম্পৃক্ত হতে আগ্রহী।


রাশেদ চৌধুরীর প্রত্যর্পণ ও র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞাঃ


প্রতিনিধি দল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে প্রত্যর্পণের জন্য বাংলাদেশের অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করেন। তারা র‌্যাবের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের সমর্থনও কামনা করেন l তারা বলেন র‌্যাব চরমপন্থা, সন্ত্রাসবাদ এবং মাদক ও মানব পাচার সহ সীমান্ত অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অসাধারণ অবদান রাখছে।

কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসঃ

প্রতিনিধি দল কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কংগ্রেসম্যানের সমর্থন চান। এশিয়া বিষয়ক প্রভাবশালী ইউএস হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স সাবকমিটির র‌্যাঙ্কিং সদস্য কংগ্রেসম্যান  স্টিভ  শ্যাবোট কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের কো-চেয়ার হিসেবে প্রস্তাবিত ককাসের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তার প্রস্তুতির কথা ব্যক্ত করেন এবং উল্লেখ করেন যে ককাস বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে সাহায্য করবে।

সংসদীয় প্রতিনিধি দলের আগামীকাল কংগ্রেসম্যান ডোয়াইট ইভান্সের (ডেমোক্র্যাট-পেনসিলভানিয়া) সাথে দেখা করা এবং তার সাথে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করার কথা রয়েছে।