১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ০৯:৩৬:২৫ অপরাহ্ন


রাজশাহী নগরীতে প্রাকৃতিক স্নিগ্ধতায় মুগ্ধ নগরবাসী ও পর্যটক বৃন্দ
আহম্মদ মোস্তফা শিমুল
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৫-২০২২
রাজশাহী নগরীতে প্রাকৃতিক স্নিগ্ধতায় মুগ্ধ নগরবাসী ও পর্যটক বৃন্দ রাজশাহী নগরীতে প্রাকৃতিক স্নিগ্ধতায় মুগ্ধ নগরবাসী ও পর্যটক বৃন্দ


এখন গ্রীষ্মকাল। চৈত্রের দাবদাহে নগরীর বৃক্ষগুলো অনেকটাই রুক্ষ্ম হয়ে উঠেছিল। বৈশাখের বৃষ্টির ছোঁয়ায় রাজশাহী নগরীর প্রকৃতিতে সজীবতা ফিরেছে।সবুজ হয়েছে চারদিক। সবুজ পত্র-পল্লবের মাঝে ফুলের সুশোভিত ঝলকানি নজর কাড়ছে নগরবাসীর। ‘গ্রিন, ক্লিন ও হেলদি’ সিটি খ্যাত নগরীর প্রায় সব খানেই ফুলেদের এমনদৃষ্টিজুড়ানো ফুলের সমাহার।

হলুদ,সোনালী, বেগুনি, জারুল ও লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়ার রক্তরাঙ্গা হাসি এখন যে কারোরই নজর কাড়ছে। নয়নাভিরাম ফুলের এক বর্ণিল আয়োজনে সেজেছে রাজশাহীর প্রকৃতি। প্রকৃতির ভিন্ন সাজের বৈশাখ উপভোগ করছে নগরবাসী। নগরীর সড়ক আইল্যান্ডগুলোতেও এখন বাহারি ফুলের সমাহার।

ফুলে ফুলে প্রজাপতির মোহনীয় বিচরণ কিংবা রাজকীয় আলোকায়নের মাঝে সবুজের এমন সমারোহ মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। নগরীর আলিফ লাম মীম ভাটা এলাকা থেকে শুরু মেহেরচন্ডী, রেলগেট থেকে তালাইমারি হয়ে সাহেববাজার, ফায়ার সার্ভিস মোড় থেকে কোর্ট, কাশিয়াডাঙ্গা থেকে বহরমপুর হয়ে নগরভবন পর্যন্ত আইল্যান্ডসহ রাস্তার দুই পাশে বাহারি ফুলের সমাহার রয়েছে। এছাড়া নগরীর দীর্ঘ পদ্মাবাঁধ জুড়ে প্রকৃতির অনন্য সৌন্দর্য বিরাজ করছে।

নগরীর সড়ক বিভাজন আর তার পাশের থাকা গাছগুলোতে যেনো রঙিন ফুলের পসরা সাজিয়ে বসেছে। পুরো নগরী ভরে উঠেছে ফুলে ফুলে। এতে করে পথচারীদের মাঝে বাড়তি ভালোলাগাও কাজ করছে। শোভা ছড়াচ্ছে লাল-হলুদ মিশেলে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, লাল কৃষ্ণচূড়া, কাঠ গোলাপ সহ লাল, নীল, বেগুনি রঙের নাম না জানা বাহারি সব ফুল। ইট-পাথরের শহুরে জীবনের এমন সৌন্দর্যে আনন্দে ও মুগ্ধতায় ভাসছেন নগরবাসী।অত্যাধুনিক রাজকীয় সড়ক বাতি যোগ করেছে সৌন্দর্যের এক নতুন মাত্রা।

নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থেকে রেলগেটেগামী গাড়িতে যাত্রাকালে যাত্রী হাসিনা বেগম জানান, তিনি নগরীতে থাকেন প্রায় ১৫ বছর। নিয়মিতই এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। গত পাঁচ বছরে এই সড়কের পুরো সৌন্দর্য পরিবর্তন হয়ে গেছে। দিনশেষে ঘরে ফিরতে যাত্রাপথের ক্লান্তি অনেকটাই ম্লান করে দেয় এই সৌন্দর্য।

নগর সড়কের এমন সৌন্দর্যের চেয়েও অপরূপ সৌন্দর্য ধারণ করেছে পুরো পদ্মাপাড় এলাকা। চোখ ধাঁধাঁনো সৌন্দর্যের টানে ছুটে আসছেন তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। পর্যটন স্পটসহ বিভিন্ন সড়কের পাশে কাঠগোলাপের শুভ্র সুগন্ধিমাখা স্নিগ্ধতা কাছে টানছে সৌন্দর্য পিপাসু মনকে।

শীতকালে গাছের সব পাতা ঝরে পড়ার পর বসস্তের শেষ দিকে দু-একটি করে ফুল ফুটতে শুরু করে এ গাছে। তখন গাছে একটিও পাতা থাকে না। বৈশাখ মাসেই পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয়েছে কাঠগোলাপের রূপ।

বৈশাখের স্বর্ণচাঁপার তুলতুলে ও কোমল পাপড়ি হাতে তুলেও মায়ায় জড়াচ্ছেন অনেকেই। বৃক্ষ তলে পড়ে থাকা ফুল কেউ কেউ প্রেয়সীর খোঁপায়ও বাঁধছেন। কেউ বা আকুল আগ্রহ নিয়ে হাতে তুলে স্নিগ্ধতা উপভোগ করছেন।

গাছতলায় পড়ে থাকা রাশি রাশি ঝরাফুল দেখে গাছের আদ্যোপান্ত উঠে আসছে পদ্মাপাড়ের গল্প-আড্ডায়। এসব ফুলের স্নিগ্ধ-মায়াবী আয়োজনের মাঝে হারিয়ে যাচ্ছেন সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ। পদ্মাপাড়ে গল্প ও কবিতা আড্ডায় মেতেছিলেন শরিফ, শাওন রোমেল সহ তরুণ বন্ধুরা। শরিফ বললেন, ইদের পর মূলত ইদ পুনর্মিলনির আড্ডা চলছে তাদের। আড্ডাও বেশ জমে উঠছে এই সুন্দর প্রকৃতির স্নিগ্ধতায়।

কবি জীবনানন্দ দাশের ভাষায়-‘ভিজে হয়ে আসে মেঘে এ দুপুর চিল একা নদীটির পাশে, জারুল গাছের ডালে বসে বসে চেয়ে থাকে ওপারের দিকে।’আমরা  বৈশাখের প্রকৃতির সৌন্দর্যের মাঝে বসে থেকে চেয়ে আছি। ইদ আড্ডার একটি বড় সময়ই গেছে রাজশাহীর প্রকৃতি-বন্দনায়। তারা সকলেই প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতায় ভাসাচ্ছেন নগরপিতা রাসিক মেয়র এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন কে।

রাজশাহীর সময়/এএইচ