২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৬:৪৩:৩৬ পূর্বাহ্ন


যতক্ষণ টিকিট ততক্ষণ সার্ভার ডাউন, কাউন্টারই ভরসা
অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৫-২০২২
যতক্ষণ টিকিট ততক্ষণ সার্ভার ডাউন, কাউন্টারই ভরসা যতক্ষণ টিকিট ততক্ষণ সার্ভার ডাউন, কাউন্টারই ভরসা


ট্রেনের টিকিটের জন্য জাহিদুল ইসলাম লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। লম্বা লাইন পেরিয়ে জাহিদুল যখন কাউন্টারের সামনে পৌঁছাবেন তখন টিকিট থাকবে কি না তা নিয়েই অনিশ্চয়তা রয়েছে। জাহিদুল ঝুঁকি নিতে চান না। তাই লাইনে দাঁড়িয়েই মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে কেটে নিতে চাচ্ছেন কাক্সিক্ষত টিকিট। তবে জাহিদুল ব্যর্থ।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে বুধবার সকাল ৮টা থেকে ৮টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত জাহিদুল ইসলাম রেলওয়ের ওয়েবসাইটে ঢোকার চেষ্টা করেন। অনলাইনে বড়জোর গন্তব্য এবং আসনের শ্রেণি নির্বাচন করতে পেরেছেন। কিন্তু পরের ধাপে গিয়ে ফাঁকা আসন সংখ্যা দেখা কিংবা টিকিট কাটার কাজটি করতে পারেননি তিনি।

জাহিদুল বলেন, সকাল ৮টায় কাউন্টার এবং অনলাইনে টিকিট ছাড়া হয়েছে। ৮টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত সার্ভার ডাউন ছিল। অনলাইন থেকে টিকিট কাটা সম্ভব হয়নি। ৮টা ৩৫ মিনিটের পর সার্ভার ঠিক হলে ওয়েবসাইটে দেখা যায় রাজশাহী-ঢাকা রুটের আর কোন টিকিট নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকে ঢাকায় কর্মরত জাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, রেলের সার্ভার ডাউন করে টিকিট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালেও রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে লাইনে দাঁড়ানো টিকিট প্রত্যাশীদের বেশিরভাগকেই মোবাইল ঘাটাঘাটি করতে দেখা গেছে। কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট কাটার চেষ্টা করছেন। কিন্তু পারছেন না। শেষ পর্যন্ত কাউন্টারই তাদের ভরসা। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকে কাউন্টার থেকে টিকিট পেয়েছেন। তবে অনেকেই কাউন্টার থেকেও রাজশাহী-ঢাকা রুটের ঈদ পরবর্তী ফিরতি ট্রেনের টিকিট পাননি।

তসিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, আগের দিন বুধবার বেলা ১১টার দিকে স্টেশনে এসে তিনি লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। রাত কাটিয়েছেন স্টেশনেই। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ৯ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি শুরু হয়। তিনি মোবাইলে অনলাইনে টিকিট কাটার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আর দীর্ঘ লাইন পেরিয়ে তিনি কাউন্টারের কাছে যাওয়ার আগেই কাউন্টারেও টিকিট শেষ হয়ে গেছে। তিনি টিকিট পাননি।

ঈদের পরদিন বুধবার ৭ ও ৮ এপ্রিলের রাজশাহী-ঢাকা রুটের টিকিট ছাড়া হয়। এ ছাড়া এ দিন ৬ এপ্রিলের বিরতিহীন বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হয়। এই টিকিট পেতে অনেকে চাঁদরাত থেকেই স্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কয়েকজন মিলে লাইনে দাঁড়িয়ে পালা করে তারা সিরিয়াল ধরে রেখেছিলেন। দীর্ঘ সময় স্টেশনে লাইনে থাকা এসব মানুষকে বুধবার সকালে খেজুর ও শরবত খেতে দেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার।

সুশৃঙ্খলভাবে টিকিট বিক্রি করতে তিনি নিজেই কাউন্টারের সামনে সব সময় থাকছেন। টিকিট প্রত্যাশীদের যে যা প্রশ্ন করছেন তারই উত্তর দিচ্ছেন। শুধু অনলাইনের সার্ভার ডাউন থাকার বিষয়েই সদুত্তর দিতে পারছেন না তিনি। জিএম বলছেন, অনলাইন নিয়ন্ত্রণ করছে সহজ লিমিটেড। এ বিষয়ে সহজই বলতে পারবে।

অসীম কুমার তালুকদার জানান, বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহী থেকে মানুষ ট্রেনে ঢাকা ফিরতে শুরু করেছেন। তবে আসল চাপ হবে শুক্র ও শনিবার। রোববার এবং সোমবারও কিছুটা চাপ থাকবে। তিনি জানান, রাজশাহী থেকে ঢাকা রুটে প্রতিদিন চারটি করে ট্রেন চলছে। প্রতিটি ট্রেনে সবমিলিয়ে ৯৮৭টি করে আসন আছে। আসনের বাইরে অতিরিক্ত কোন টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না। তাই সবাই টিকিট পাচ্ছেন না।