১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ০৮:৪৮:২৪ অপরাহ্ন


কালার করা চুলের যত্ন
ফারহানা জেরিন
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৪-২০২২
কালার করা চুলের যত্ন ফাইল ফটো


চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে হেয়ার কালার বা হেয়ার হাইলাইট করার ট্রেন্ড বেশ আগে থেকেই চলে আসছে। স্টাইলের জন্য হোক অথবা পাকা চুল ঢাকতেই হোক, হেয়ার কালার করা এখন বেশ জনপ্রিয়। টিনেজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ তাদের হেয়ারকে আরো স্টাইলিশ করে তুলতে বিভিন্ন কালার শেড যেমন ক্যারামেল, ব্লন্ড, ব্রাউন, অম্ব্রেসহ বিভিন্ন ফাংকি কালার যেমন, লাল, নীল ইত্যাদি বেছে নিচ্ছেন। 

চুল কালার করার পর বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়। কারণ হেয়ার কালার করলে চুলের বাইরের কিউটিকল কালারড হয়ে যায়, এর ফলে আমাদের চুলের ন্যাচারাল অয়েল বা সিবাম হেয়ার স্ট্র্যান্ডে পৌঁছায় না। তাই চুলের প্রোপারলি যত্ন না নিলে আপনার চুল হয়ে যাবে ড্রাই অ্যান্ড ফ্রিজি। আর খুব দ্রুত কালারও নষ্ট হয়ে যাবে৷ কিন্তু অনেকেই জানেন না কালারড হেয়ারের যত্নে কী করা উচিত আর কী করা উচিত নয়। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, নরমাল চুলের জন্য যেরকম যত্ন নেওয়া হয়, কালার করা চুলের যত্নে তার চেয়ে বেশ আলাদা। এ ধরনের চুলে সব সময় আলাদা প্রোডাক্টস আর এক্সট্রা কেয়ার প্রয়োজন। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক, কালারড হেয়ার যত্নের খুঁটিনাটি৷

কেমন হবে কালার করা চুলের হেয়ার কেয়ার রুটিন?

১) শ্যাম্পু সিলেকশন: যখন যেই শ্যাম্পু হাতের কাছে পাচ্ছি তখন সেটাই লাগিয়ে নিচ্ছি, এমন করলে কিন্তু একদম হবে না৷ কালার করা চুলের জন্য আলাদা কিছু শ্যাম্পু আছে যেগুলো আপনার কালার নষ্ট হতে দিবে না আর চুলকে রাখবে সফট, ম্যানেজেবল। তাই শ্যাম্পু সিলেকশনে দিতে হবে এক্সট্রা অ্যাটেনশন।

২) কন্ডিশনার: শ্যাম্পু করার ফলে চুলের ন্যাচারাল অয়েল রিমুভ হয়ে যায়, তাই চুলের ময়েশ্চার লক করার জন্য প্রতিবার শ্যাম্পুর পর চুলে কন্ডিশনার দেওয়া একদম মাস্ট। কালার চুলে ঠিকমতো কন্ডিশনার অ্যাপ্লাই করলে সেটা রাফনেস কমিয়ে আনে। এছাড়া সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মির কারণে চুলের কালার ফেইড হতে থাকে। কালার ট্রিটেড কন্ডিশনার সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে চুলকে রক্ষা করে। এতে চুল থাকবে ঝলমলে ও সুন্দর। কালারড হেয়ারের জন্য পার্পল শ্যাম্পু, পার্পল কন্ডিশনার খুব ভালো অপশন।

৩) অয়েল ম্যাসাজ: কোকোনাট অয়েল সব ধরনের চুলের জন্য বেস্ট অপশন। স্পেশালি ড্রাই, ড্যামেজড আর কালার ট্রিটেড হেয়ারের জন্য। হেয়ার কালারের কেমিক্যাল চুলকে ড্রাই করে ফেলে। কোকোনাট অয়েল সেই ড্রাইনেস কমিয়ে চুলকে হাইড্রেট ও নারিশড করে। হেয়ার গ্রোথ বৃদ্ধি করে, ড্যামেজ রিপেয়ার করে এবং চুলের কালার নষ্ট হতে দেয় না৷ তাই কালার ট্রিটেড হেয়ারে নিয়মিত কোকোনাট অয়েল ম্যাসাজ করতে হবে।

৪) হেয়ার প্যাক: শ্যাম্পু, তেল এর পাশাপাশি সপ্তাহে একদিন হেয়ারপ্যাক ব্যবহারে আপনার চুল পাবে এক্সট্রা পুষ্টি। কালার করা চুলের যত্নে আপনাদের সাথে একটি হেয়ার প্যাক শেয়ার করবো, যেটি আপনার চুলের গ্রোথ বৃদ্ধির সাথে সাথে চুলকে রাখবে হেলদি।

ডিম, মধু ও অলিভ অয়েল এর হেয়ার প্যাক: এই হেয়ারপ্যাক বানাতে প্রয়োজন একটা ডিম, মধু আর অলিভ অয়েল। চুল অনেক লম্বা হলে দুটি ডিম নিতে পারেন৷ সব উপকরণ ভালোভাবে মিক্স করে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালো করে লাগিয়ে একটা শাওয়ার ক্যাপ পরে নিন। ৩৫-৪০ মিনিট পর কালার প্রোটেক্ট একটি শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন এবং কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন৷ প্রথমবার ব্যবহারের পরই নিজের চুলের পরিবর্তন নিজেই বুঝতে পারবেন৷

৫) হেয়ার এসেন্স:হেয়ার এসেন্স আপনার চুলকে রাখবে সফট, ম্যানেজেবল, শাইনি আর ফ্রিজ ফ্রি। তাই আপনার কালারড হেয়ারকে ম্যানেজেবল রাখতে হেয়ার কেয়ারে রাখতে পারেন একটা হেয়ার এসেন্স। এসেন্স এর ক্ষেত্রে আরগান অয়েল যুক্ত এসেন্স হতে পারে আপনার চুলের জন্য গ্রেট অপশন৷ আরগান অয়েল চুলের ব্রেকেজ আর আগা ফাটা কমিয়ে চুলে লিভ ইন কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করবে।

উপরের ৫ টি স্টেপ এ যদি নিয়মিত আপনার কালারড হেয়ারের যত্ন নিতে পারেন তাহলে আপনার চুল একদমই ড্যামেজ হবে না। চুল থাকবে অনেক সুন্দর আর হেলদি।

এক্সট্রা টিপস

১) চুল আঁচড়াতে মোটা দাঁতের কাঠের চিরুনি ব্যবহার করুন।

২) চুল ঘষে ঘষে শ্যাম্পু করবেন না বা জোরে ঘষে মুছবেন না। খুব আলতোভাবে পুরাতন টি-শার্ট দিয়ে ভেজা চুল পেঁচিয়ে রাখবেন।

৩) চুল সফট রাখতে সিল্কের বালিশের কভার ব্যবহার করুন।

রাজশাহীর সময়/এম