১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ১২:৫৪:০৩ পূর্বাহ্ন


পথশিশু ভাতার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতকারী বুলু ও অনতুর গ্রেফতারের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন
স্টাফ রিপোর্টার :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৪-২০২২
পথশিশু ভাতার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতকারী বুলু ও অনতুর গ্রেফতারের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন পথশিশু ভাতার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতকারী বুলু ও অনতুর গ্রেফতারের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন


রাজশাহী মহানগরীতে শিক্ষা ভাতার নামে হতদরিদ্র, ভুমিহিন, অসহায় নারীদের টাকা আত্মসাতকারী নারী মুক্তি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মোসা: শাহানারা বেগম বুলু ও শামীম হাসান অনতুর গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধান করেছে ভুক্তভোগীরা। 

রোববার বেলা ১১টায় মহানগরীর মতিহার থানার তালাইমারী ট্রাফিক মোড়ে এ মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অনতু ও বুলুর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদী বাজে কাজলা পাওয়ার হাউজপাড়া এলাকার শম্পা ও বর্না তাদের বক্তব্যে বলেন, ৬৫০০ টাকা হারে গ্রহক প্রতি তুলে দিলে ৩মাস পরে তিন কিস্তিতে পথ শিশু ভাতা দেয়া হবে ৪০হাজার টাকা। তাদের এমন কথায় সরল বিশ্বাসে (মে,২০১৯) মতিহার থানার ধরমপুর এলাকার মৃত হাসেমের ছেলে অনতু ও বুলুর হাতে তারা দু‘জন মিলে ৩০০ জন গ্রহকের টাকা তুলে দেন।

এছাড়াও তাদের পরিচিত কাজলা এলাকার অন্যান্য মাঠকর্মিরাও দেন ৩২০ জনের টাকা। সর্বমোট ৬২০ জন গ্রহকের ৪০ লাখ ৩০হাজার টাকা দেয় তারা। কিন্তু ৩বছর পেরুলেও কোন টাকা দেয়নি বুলু অনতু ও তার সহযোগীরা। এদিকে গ্রহকরাও থামছে না। দফায় দফায় মাঠকর্মীদের বাড়িতে যাচ্ছে টাকা জন্য গ্রহকরা। এ নিয়ে হৈচৈ ঝগড়া ঝাটি কান্না কাটি লেগেই আছে। সব মিলে মাঠকর্মীদের জিবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। কোথাও মিলছে না শান্তি। আবার বুলু অনতু টাকা না দিয়ে শুধু আশ্বাস দিচ্ছে। পালিয়ে আছে ঢাকায়। 

কোন উপায় না দেখে মোসা: বর্না খাতুন বাদি হয়ে বুলু ও অনতুর বিরুদ্ধে মতিহার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-১০, তাং- ১২/০৪/২০২২। 

ভুক্তভোগী শম্পা ও বর্না বলেন, মামলা করা ১২ দিন অতিবাহিত হলেও আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মতিহার থানার ওসিকে বলতে গেলে তিনি বলছেন আসামী কোথায় আছে বলেন? আমি নিজে গিয়ে ধরে আনছি। ভাবখানা এমন পুলিশের কোন দায়িত্ব নাই। তারা আসামী খুঁজবেন না। খুঁজে দিলে তবেই ধরবেন। 

তারা আরও বলেন, শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে স্থানীয়দের কাছে তারা জানতে পারেন, প্রতারক অনতু বাড়িতে আছে। পরে তারা কয়েকজন মহিলা সাথে নিয়ে ধরমপুরে অনতুর বাড়িতে যান। এ সময় অনতুন ঘরের দরজা লাগানো ছিলো। এ সময় অনতুন স্ত্রী, তার মা, ছোট ভাই ভুক্তভোগীদের অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মুক্তি নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতন করে। এ সময় শম্পা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সেলিম ফোন দিলে তিনি ঘটনাস্থলে যান। 

তিনি ভুুক্তভোগীদের বলেন মামলা করছেন আদালতে বিচার নিবেন। এখান থেকে চলে যান। শম্পা ও বর্না বারবার অনতুর ঘর তল্লাশী করার জন্য অনুরোধ করেন এসআই সেলিমকে। কিন্তু তিনি একটি বারের জন্যও অনতুর ঘর তল্লাশী করেন নি। উল্টা ভুক্তভোগীদের ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের গ্রেফতার নিয়ে হতাশ ভুক্তভোগীরা।

তাদের বক্তব্য অনুযায়ী পুলিশ ম্যানেজ করেই চলছে এই প্রতারকরা। তা না হলে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দ্রুত আসামী গ্রেফতার করছে পুলিশ। আর আমাদের আসামীরা প্রকাশ্যে সবার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা সহ হুমকি ধামকি দিয়ে চলছে। কিন্তু গ্রেফতার হচ্ছে না!

এছাড়া মতিহার থানার বুধপাড়া এলাকার হাসি ও মোহনপুর এলাকার শিলা নামের দুই মাঠকর্মীর কাছ থেকে ১৭০জন গ্রাহকের মোট ১০লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন বুলু, তানজিলা ও কামু। বুলু রাজশাহীতে না থাকলেও তানজিলা ও কামু রয়েছে মহানগরীতে। কিন্তু  ভুক্তভোগীরা দিনের পর দিন ঘুরলেও তাদের মামলা নেয়নি মতিহার থানার ওসি। 

ওসির বক্তব্য হলো, বুলু, অনতুর খোঁজ লাগান ধরে নিয়ে এসে টাকা তুলে দিবো। মামলা করতে হবে না। এ নিয়েও হতাশার মধ্যে রয়েছেন তারা।

দ্রুত সময়ের মধ্যে আমামিদের গ্রেফতার ও টাকা উদ্ধারে আরএমপি পুলিশ কমিশনার মহাদয়ের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগীরা।

রাজশাহীর সময় / জি আর