২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৩:৩৭:০২ অপরাহ্ন


রাজশাহী মহানগরীতে নারী দিয়ে ফাঁসিয়ে পুলিশ পরিচয়ে অর্থ আদায়, গ্রেফতার ৫
মাসুদ রানা রাব্বানী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৪-২০২২
রাজশাহী মহানগরীতে নারী দিয়ে ফাঁসিয়ে পুলিশ পরিচয়ে অর্থ আদায়, গ্রেফতার ৫ রাজশাহী মহানগরীতে নারী দিয়ে ফাঁসিয়ে পুলিশ পরিচয়ে অর্থ আদায়, গ্রেফতার ৫


নারী দিয়ে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসিয়ে রাজশাহী মহানগরীর কোর্ট কলেজের এক ছাত্রকে অপহরণ ও পুলিশ পরিচয়ে চাঁদা আদায়ের অপরাধে প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। 

গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো: রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার হাদির মোড় বৌ বাজারের মৃত আলম শেখের ছেলে মো. মাসুম শেখ (৩৮), রামচন্দ্রপুর মিরেরচকের মো. সেলিম আলীর ছেলে মো. আশিক আলী (২৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো. মুনতাসির আলী সিয়াম (২৯), কেদুর মোড় বৌ বাজারের মৃত সামসুলের ছেলে মো. পলাশ (২৭) এবং রাজশাহীর চারঘাট থানার হলিদাগাছী, খুদির বটতলার মো. মামুনুর রহমান বাবুর স্ত্রী মোসা: শরিফা আক্তার সাথী (২৭)। সে নগরীর রাজপাড়া থানার তেরখাদিয়া, ডাবতলার বাসিন্দা।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় আরএমপি সদরদপ্তর কনফারেন্স রুমে আরএমপি পুলিশের পুলিশ কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

তিনি জানান, পলাশ (ছদ্মনাম) রাজশাহী কোর্ট কলেজের ৩য় বর্ষের ছাত্র। সে লেখপড়ার পাশাপাশি ইউনিলিভার পিয়রইট কোম্পানী রাজশাহী শাখায় চাকুরী করেন। বাসাভাড়া নেওয়ার জন্য সে মহানগরীর বাসা ভাড়া নামক একটি ফেসবুক পেইজে পোস্ট দেয়।

প্রতারক শরিফা আক্তার সাথী পলাশকে ফোন দিয়ে বলে, রাজশাহী কমিউনিটি সেন্টারের পাশে তার মায়ের বাসায় একরুম বিশিষ্ট একটি ভালো রুম আছে। পলাশের এক রুমের বাসা প্রয়োজন ছিল। তাই সে সরল বিশ্বাসে গত (১৩ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজশাহী কমিউনিটি সেন্টারের সামনে গিয়ে আসামী শরিফাকে ফোন দেয়। ফোন পেয়ে শরিফা এসে পলাশকে কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম পূর্বপাড়ায় একটি বাড়ীর নীচতলার একটি রুমে নিয়ে যায়। সেখানে বাসার চারপাশ দেখার সময় শরিফা কৌশলে রুমের দরজা আটকিয়ে দিয়ে পলাশকে জড়িয়ে ধরে। সেখানে পুর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা প্রতারক চক্রের ৪ জন সদস্য রুমের মধ্যে প্রবেশ করে। তারা শরিফার সাথে পলাশের আপত্তিকর অবস্থায় ছবি তোলে। এরপর পলাশকে চড়থাপ্পড়, হুমকী, ফেসবুকে ছবি ছেড়ে দেওয়ার-সহ পুলিশ পরিচয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা পুক্তিপণ ও চাঁদা দাবি করে। এরপর তার কাছ থাকা নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে মোট ১৪ হাজার ৯০০ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে।

এ ঘটনায় পলাশ ডিবি পুলিশের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ প্রদান করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার মো: আবু কালাম সিদ্দিক এর নির্দেশনায়, রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আরেফিন জুয়েলের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো: আব্দুল্লাহ আল মাসুদের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক মো. আবুল কালাম আজাদ, এসআই মো: আশরাফুল ইসলাম ও সঙ্গীয় ফোর্স আসামী গ্রেফতারের অভিযানে নামে। এরপর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামীদের অবস্থান নির্ণয় করে গত (১৮ এপ্রিল) মহানগরীর রাজপাড়া থানার তেরখাদিয়া ডাবতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের মূলহোতা-সহ ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করে। প্রতারণার মাধ্যমে 

এসময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া নগদ ৩ হাজার দুইশত টাকা, ২টি মোবাইল, ২টি জিআই পাইপ, ১টি চাকু,  পুলিশ লেখা কালো রংয়ের একটি ওয়াকিটকি ২টি আইডি কার্ড, পুলিশ লেখা সম্বলিত ১ জোড়া জুতা উদ্ধার হয়।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

রাজশাহীর সময়/এএইচ