আগেই টেস্ট ও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শুধু চালিয়ে যাচ্ছিলেন ওয়ানডে ক্রিকেট। সেখান থেকেও অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন মিস্টার সাইলেন্ট কিলার। এতে দীর্ঘ ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন মাহমুদউল্লাহ।
বুধবার (১২ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার সকল সতীর্থ, কোচ এবং বিশেষ করে আমার ভক্তদের ধন্যবাদ দিতে চাই, যারা সবসময় আমাকে সমর্থন দিয়েছে।’
মাহমুদউল্লাহর অবসর ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় এক বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। মাহমুদউল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলেছে, 'বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বাংলাদেশ দলে অসাধারণ অবদানের জন্য মাহমুদউল্লাহকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে। বুধবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করা এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ১৮ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টেনেছেন।'
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, 'বিভিন্ন ফরম্যাটে সব মিলিয়ে মাহমুদউল্লাহ ৪৩০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন যেখানে রান করেছেন ১১,০৪৭ রান এবং উইকেট নিয়েছেন ১৬৬টি। আইসিসি ইভেন্টে বাংলাদেশি খেলোয়াড় হিসেবে সর্বাধিক সেঞ্চুরি (৪) করার গৌরব তার রয়েছে এবং ওয়ানডেতে বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ এবং টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। তিনি ছয়টি টেস্ট ম্যাচ এবং ৪৩টি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে জাতীয় দলের নেতৃত্ব দেওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন।'
মাহমুদউল্লাহর অবদানের প্রশংসা করে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন, 'এটি বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত সকলের জন্য একটি হৃদয়বিদারক মুহূর্ত, কারণ মাহমুদউল্লাহ প্রায় দুই দশক ধরে জাতীয় দলের শক্তির স্তম্ভ হয়ে আছেন। চাপের মধ্যেও তার ধারাবাহিকতা এবং সাফল্য তাকে অমূল্য সম্পদে পরিণত করেছে। তার নিষ্ঠা এবং পারফরম্যান্স ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি মানদণ্ড স্থাপন করেছে এবং তাদের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।'
বিসিবি সভাপতি বলেন, 'মাহমুদউল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পারফর্মারদের একজন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। ব্যাটিং হোক বা বোলিং, যখন দলের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তখনই তিনি সেরাটা করে দেখিয়েছেন। চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে তার শান্ত আচরণ এবং মাঠে তার নেতৃত্ব বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিত্বদের একজন হিসেবে তার মর্যাদাকে সুদৃঢ় করেছে।'
ফারুক আহমেদ আরও বলেন, 'বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে, আমরা মাহমুদউল্লাহর অসাধারণ ক্যারিয়ার উদযাপন করছি এবং দল এবং খেলাধুলার প্রতি তার অমূল্য সেবার জন্য আমাদের গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা তার ভবিষ্যতের সকল প্রচেষ্টায় তার সাফল্য কামনা করি এবং আত্মবিশ্বাসী যে তার অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার বাংলাদেশের ক্রিকেটকে সমৃদ্ধ করে তুলবে।'