২১ মার্চ ২০২৫, শুক্রবার, ০৭:২৮:৫৫ অপরাহ্ন


ডিম ঠিক কী ভাবে খেলে উপকার বেশি হবে, নতুন তথ্য দিলেন গবেষকেরা
ফারহানা জেরিন:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৩-২০২৫
ডিম ঠিক কী ভাবে খেলে উপকার বেশি হবে, নতুন তথ্য দিলেন গবেষকেরা 'পিরিয়ডিক কুকিং' পদ্ধতিতে সেদ্ধ ডিম। ছবি: সংগৃহীত


ডিম সেদ্ধ খেলে বেশি উপকার, নাকি পোচ করে খেলে? ডিম-প্রেমীরা প্রায়ই এই প্রশ্ন করে থাকেন। পোচেরও আবার রকমফের আছে, জল-পোচ অথবা তেল, মাখন, ঘি দিয়ে পোচ। ডায়েট যাঁরা করছেন, তাঁরা জল দিয়েই পোচ করে খেতে পছন্দ করেন। অমলেটের স্বাদের তো কোনও তুলনাই নেই। এখনকার পুষ্টিবিদেরা আবার স্বাস্থ্যকর উপায়ে অমলেট রান্নার নানা পদ্ধতিও শেখান। কিন্তু এগুলির কোনওটিই নাকি তেমন স্বাস্থ্যকর নয়! সঠিক পদ্ধতিতে ডিম রান্না না করলে, তার পুষ্টিগুণ সঠিক মাত্রায় শরীরে যাবে না, এমনটাই দাবি ইটালির বিজ্ঞানীদের। ডিম ঠিক কী ভাবে রান্না করে খাওয়া উচিত, সে পদ্ধতিও শিখিয়েছেন তাঁরা।

ইটালির জৈবরসায়ন বিষয়ের গবেষক প্যালেগ্রিনো মুস্তো ও আর্নেস্তো দে মায়ো এবং তাঁদের সতীর্থেরা ডিম রান্নার কৌশল নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই গবেষণা করছিলেন। এই নিয়ে গাণিতিক মডেলও বানিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। কম্পিউটারে বিশেষ অ্যালগরিদ্‌ম বানিয়ে দেখেছেন, ঠিক কতটা তাপমাত্রায় কী ভাবে ডিম রান্না করলে, ডিমের সাদা অংশ ও কুসুম দুইয়ের মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ সঠিক পরিমাণে শরীরে যাবে। এই গবেষণাটি ‘কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামে একটি বিজ্ঞাপত্রিকায় প্রকাশিতও হয়েছে।

বিজ্ঞানীদের দাবি, ডিম যদি ১০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় জলে ফুটিয়ে সেদ্ধ করা হয়, তা হলে ডিমের সাদা অংশ শক্ত হয়ে যায়, এবং এর মধ্যে থাকা প্রোটিন নষ্ট হয়। পাশাপাশি, কুসুমের মধ্যে যে ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে থাকে, সেগুলি উচ্চ তাপমাত্রায় ভেঙে যায়। কোলিন, সেলেনিয়ামের মতো খনিজ উপাদানগুলির পরিমাণেও তারতম্য ঘটে।

বিজ্ঞানীরা যে পদ্ধতির কথা বলছেন, তার নাম ‘পিরিয়ডিক কুকিং’। সেটি আসলে কী? বিজ্ঞানীরা বলছেন, দু’টি পাত্রে জল নিতে হবে। একটি পাত্রের জল কম আঁচে গরম করতে হবে। তাপমাত্রা মোটামুটি ১০০-৮৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থাকলেই ভাল। অন্য পাত্রে জল থাকবে ঘরের তাপমাত্রায়, ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হলেই ভাল। এ বার ডিম প্রথমে গরম জলে ২ মিনিট রেখে সেটি ঘরের তাপমাত্রায় রাখা ঠান্ডা জলে ডুবিয়ে দিতে হবে। সেখানে মিনিট দুয়েক রেখে ফের গরম জলে ২ মিনিট রাখতে হবে। এই ভাবে পর্যায়ক্রমে গরম ও ঠান্ডা জলে রেখে ডিম সেদ্ধ করতে হবে। এই পদ্ধতিটি ১৬ বার করতে হবে, সময় লাগবে ৩২ মিনিটের মতো।

শুনতে জটিল লাগলেও, বিজ্ঞানীদের কথায় এই পদ্ধতিতে ডিম রান্না করলে ডিমের সাদা অংশ ও কুসুম শক্তও হয়ে যাবে না, আবার খুব নরম বা কাঁচাও থাকবে না। এর মধ্যে থাকা প্রোটিন, ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ও খনিজ উপাদানগুলিও অবিকৃত থাকবে এবং সবটাই শরীরে ঢুকবে। এতে উপকার অনেক বেশি হবে।