১২ ডিসেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৫:৪২:১৫ পূর্বাহ্ন


তানোরে মৎস্যচাষের মটরে অবৈধ সেচ বাণিজ্যে!
আরিফ হোসাইন তানোর (রাজশাহী)প্রতিনিধি:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-১২-২০২৪
তানোরে মৎস্যচাষের মটরে অবৈধ সেচ বাণিজ্যে! তানোরে মৎস্যচাষের মটরে অবৈধ সেচ বাণিজ্যে!


রাজশাহীর তানোরে মৎস্যচাষের মটরে অবৈধ সেচ বাণিজ্যের কারনে কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। অবৈধ সেচ বাণিজ্যে বন্ধে, এসব মটরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা না হলে, যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকায় গ্রামবাসি শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) কুন্দাইন গ্রামের আওয়ামী মতাদর্শী ইউসুফ আলী সৈনিক লীগ নেতা সাদেকুল ইসলামের ভাই। তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে শিবপুর মৌজায় পুকুুর পাড়ে মৎস্যচাষের নামে মিনি ডিপ স্থাপন করেছেন। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাববিস্তার করে পুকুরে পানি না দিয়ে। সেচ নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিএমডিএর গভীর নলকুপের কমান্ড এরিয়ায় আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন নির্মাণ করে সেচ বাণিজ্যে করছেন তিনি। ব্যক্তিগত মটর হওয়ায় তিনি সেচ নীতিমালা লঙ্ঘন করে নিজের ইচ্ছেমতো উচ্চমুল্যে সেচ চার্জ আদায় করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক জানান, ড্রেন মেরামত, ভোল্টেজ বাড়ানো নানা অজুহাতে কৃষকদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও কৃষকের জমিতে তিনি ফড়িয়া আলু চাষিদের কাছে ইজারা দিয়েও টাকা নয়ছয় করছেন। এতে কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। তবে কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে পারছেন না। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কৃষক জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সরাসরি নৌকার পক্ষে ভোট দিতে কৃষকদের বাধ্য করেছেন আলী সৈনিক লীগ নেতা সাদেকুল ইসলামের ভাই। যারা নৌকায় ভোট দিবেন না তাদের জমিতে সেচ দেয়া হবে না বলে হুমকি দেয়া হয়। ফলে কৃষকেরা বাধ্য হয়ে নৌকার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান তানোর পল্লী বিদ্যুৎ যথারীতি এসব অবৈধ মটরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করে জরিমানার নামে বাণিজ্য করছে। অথচ সেচ নীতিমলা অনুয়ায়ী সেচ কমিটির অনুমোদন ব্যতিত যেকোনো মটর থেকে কৃষি জমিতে সেচ দেয়া হলে সেই মটরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নিরব রয়েছে। মোহাম্মদপুর মৌজায় পুকুুর থেকে স্যালোমেশিন দ্বারা আলুখেতে সেচ দেয়া বন্ধ করেছে পল্লী বিদ্যুৎ। এই কারণে মৎস্য চাষের মটরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দেয়া হয়েছে বলে জানান কৃষক নমির উদ্দিন। পল্লী বিদ্যুতের এমন দ্বিমুখী নীতিতে সাধারণ কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে এসব অবৈধ মটরের কারণে বিএমডিএ’র অধিকাংশ গভীর নলকুপ লেয়ার ফেল করে অকেজো হয়ে পড়েছে। 

এ ব্যাপারে মটর মালিক ইউসুফ আলী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, তানোরে অসংখ্য মৎস্য চাষের মটর থেকে সেচ দেয়া হচ্ছে। এটা পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা জানেন।

এব্যাপারে বিএমডিএ তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী জামিনুর রহমান বলেন, গভীর নলকুপের কমান্ড এরিয়ায় সেচ মটর স্থাপনের কোনো সুযোগ নাই, আর বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার তো প্রশ্নই আসে না। 

এব্যাপারে রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি তানোর এরিয়া ম্যানেজার (ডিজিএম) জহুরুল ইসলাম বলেন, সেচ কমিটির অনুমোদিত মটর ব্যতিত অন্য মটর থেকে কৃষি জমিতে সেচ দেয়ার নিয়ম নাই। তিনি বলেন, কারো বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে।