রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে কৃষ্ণ নামের এক সাজাপ্রাপ্ত আসামীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি আমৃত্য কারাদন্ডের আসামী।
২৬ নভেম্বর গভীর রাতে কারাগারের ৬নং সেলের একটি রুমে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ২৫ নভেম্বর রাতে ১৪নং সেলের ৩নং রুম তল্লাশী চালিয়ে একটি মুঠো ফোন উদ্ধার করে কারা পুলিশ। তবে ফোনের মালিকের পরিচয় জানা যায়নি। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২০ সেলে থাকা ফাঁসির আসামী সেতুকে গভীর রাতে বের করে ব্যপক মারপিট করেন কারারক্ষী ও অজ্ঞাত কর্মকর্তাগণ। মারপিটের খবর পেয়ে আতঙ্কে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে কৃষ্ণ। বলে দাবি তার পরিবারের।
অভিযোগ উঠেছে, কারা অভ্যান্তরে প্রবেশ মুখেই এক প্রকার কাপড় খুলে তল্লাশী চালায় কারারক্ষীরা প্যান্টের বেল্ট, অংটি, তাবিজ ও তার সাথে থাকা সুতা খুলে নেয়। কোন প্রকার রশি বা অবৈধ কিছু প্রবেশের সুযোগ নাই। তাহলে কারা অভ্যান্তরে ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজা পাওয়া যায় কি ভাবে ? আর মোবাইল ঢুকলো কিভাবে ?
নাম প্রকাশ না কারার শর্তে সদ্য কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া একজন কয়েদী ও দুইজন হাজতি বলেন, টাকা দিলে কারা অভ্যান্তরে নারী ছাড়া সব কিছুই পাওয়া যায়। মাদকদ্রব্য আর মোবাইল এটা কোন ব্যপারই না। আর এই সকল অবৈধ কাজগুলি কারা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অসাধু কিছু কারারক্ষী, জামাদার, ও কর্মকর্তাগণের যোগসাজসে হয়ে থাকে।
প্রশ্ন হলো: বলা হয়ে থাকে জেলের মধ্যে জেল তার নাম সেল। যারা কারা অভ্যন্তরে যারা অপরাধ করেন তাদের ১০ সেল, ২০ সেল ফাঁসির আসামীদের জন্য ১৪ সেল। এর মধ্যে ভয়ঙ্কর ধরনের আপরাধ কারীদের সর্বচ্চো শাস্তি হিসেবে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে ৬ সেলে ঢুকিয়ে রাখা হয়। ছোট্ট একটি ঘর, অন্ধকারাচ্ছন্ন টিপটিপে বৈদ্যুতিক বাতি। তার মধ্যে দূর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানির ড্রেনের পাশে সেলটির অবস্থান হওয়ায় বড় বড় মশার কামড় তো বাড়তি শাস্তি। সব মিলে খুবিই শাস্তির স্থান ৬নং সেল। মৃত কৃষ্ণ অমৃত্য কারাদন্ডের আসামী। তাছাড়া জেল থেকে পালিয়েছিলেন তিনি। ফলে সর্বচ্চো ভয়ঙ্কর আসামী হিসেবে বিবেচিত ছিলেন কৃষ্ণ। তাই শান্তি মুলক ব্যবস্থা হিসেবে কারাকর্তৃপক্ষ ৬নং সেলে ঢুকিয়ে রেখেছিলেন তাকে। সেখানে সব সময় কঠোর নজরদারী থাকে ডিউটিরত কারারক্ষীদের। এত সব আয়োজনের মধ্যেও গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করলো কৃষ্ণ!
সার্বিক বিষয়ে জানতে জেলার মোঃ আমানুল্লাহ্ আমানের মুঠো ফোনে একধিক বার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
জেল সুপার রত্না রায়ের মুঠো ফোনে একধিক বার ফোন দেয়া হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেন নি। তাছাড়া অন্য সময়েও তিনি ফোন রিসিভ করেন না। মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা দিলেও উত্তর আসে না। বড়কর্তা হয়তো তাই।
ডিআইজি প্রিজন্স মোঃ কামাল হোসেন জানান, কারাঅভ্যান্তরে দেখাশোনা খোঁজখবর এবং সার্বিক বিষয় দেখাশোনা করেন, জেলার এবং জেল সুপার। তাই কোন বিষয়ে জানতে হলে তাদের ফোনে ফোন দিন। আমি কিছু জানি না।