২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০১:০৬:৩৭ অপরাহ্ন


ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্যাতিত ব্যক্তির ছবি তুলতে গিয়ে সাংবাদিক লাঞ্ছিত
হাফিজুল হক, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৪-২০২২
ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্যাতিত ব্যক্তির ছবি তুলতে গিয়ে সাংবাদিক লাঞ্ছিত ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্যাতিত ব্যক্তির ছবি তুলতে গিয়ে সাংবাদিক লাঞ্ছিত


নওগাঁর পত্নীতলায় দিবর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাহাদ জামান কর্তৃক এক নির্যাতিত ব্যক্তির ছবি তুলতে গিয়ে সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক লাঞ্ছিত ওই সাংবাদিক  সাপাহার প্রেসক্লাব সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম (মানিক) বাদী হয়ে ৬ এপ্রিল বুধবার রাতে পত্নীতলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দিবর ইউনিয়ন পরিষদে ইউপি চেয়ারম্যান রাহাদ জামান ৬ এপ্রিল বুধবার বেলা ১২ টার দিকে মল্লিকপুর মোড়ে একটি জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই গ্রামের আকবর আলী নামে এক ব্যক্তি কে ধরে এনে পরিষদের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সাপাহার প্রেসক্লাব সভাপতি সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম মানিক ও প্রেস ক্লাব সদস্য সহকর্মী মমিন কে সাথে নিয়ে ঘটনার তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে দিবর ইউনিয়ন পরিষদে যায়। সেখানে গিয়ে সাংবাদিকদের চোখে পড়ে ইউপি চেয়ারম্যান রাহাদ জামান ক্ষমতার অপব্যবহার করে আকবর আলীকে ধরে এনে পরিষদের সামনে পরিত্যক্ত একটি ঘরে তালাবন্ধ অবস্থায় নির্যাতন চালায়। এসময় সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম মানিক তালাবদ্ধ অবস্থায় নির্যাতিত ওই ব্যক্তির ছবি নিজের মুঠোফোন ধারণ করায় ইউপি চেয়ারম্যান রাহাদ জামান সাংবাদিকদের পরিষদের ভিতরে ডেকে নিয়ে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে অসৌজন্য মূলক আচরণ করেন ইউপি চেয়ারম্যান রাহাত জামান। যাতে করে স্থানীয় প্রায় দুই শতাধিক মানুষের সামনে সাংবাদিকদের চরম লাঞ্ছিত করেন ওই চেয়ারম্যান। পরবর্তীতে সাংবাদিকরা বাড়িতে ফিরে এলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক 'দিবর ইউনিয়ন পরিষদ' নামে পেইজ থেকে সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম মানিকের নামে মানহানিকর পোস্ট দেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান। ফেসবুক ওই পোস্টে লেখেন "সাংবাদিক মানিক তার দলবল নিয়ে টাকার বিনিময় এক পক্ষের পক্ষপাতিত্ব ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কথা উল্লেখ সহ বাদী পক্ষের উপর অতর্কিত হামলা চালায়" যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। তার সন্ত্রাসী মুলক কর্মকাণ্ড দেখে ফেলায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এমন পোস্ট দিয়েছে ওই চেয়ারম্যান বলে জানা যায়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে সাংবাদিক লাঞ্ছিত করার ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। স্থানীয়রা আরও জানায়, শুধু এই ঘটনায় নয়, ইউপি চেয়ারম্যান রাহাদ জামান শপথ গ্রহণের পর থেকেই ইউনিয়ন এলাকায় সন্ত্রাসী কায়দায় নিজের আধিপত্য বিস্তার ও প্রভাব খাটিয়ে একের পরে এক অনৈতিক ঘটনা ঘটাচ্ছেন। ইউপি চেয়ারম্যানের এমন ব্যবহারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন আমরা তার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম মানিক বলেন, ঘটনার দিন আলমগীর কান্নাজড়িত কণ্ঠে আমাকে মুঠোফোনে জানাই ইউপি চেয়ারম্যান রাহাত জামান তার বড় ভাই আকবর আলী কে মারপিট করে ইউনিয়ন পরিষদে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় রেখেছে। তার কথায় আমি ও সহকর্মী মুমিন কে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাই। এবং তালাবদ্ধ অবস্থায় আমার মুঠোফোনে আকবর আলী'র ছবি তুলি। এসময় চেয়ারম্যান রাহাত জামান আমাকে ডেকে নিয়ে তার অফিস কার্যালয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রায় দুই শতাধিক মানুষের সামনে লাঞ্ছিত করেন। পরবর্তীতে দিবর ইউনিয়ন পরিষদ নামে ফেসবুক আইডি থেকে আমার বিরুদ্ধে মানহানিকর পোস্ট করেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান। আমি এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান রাহাদ জামানকে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে দিবর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাহাদ জামান এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ফেসবুকে সাংবাদিক কে কেন্দ্র করে স্ট্যাটাসের বিষয়টি আমার কাছে সঠিক মনে হয়েছে তাই প্রকাশ করেছি এবং পরিষদের ভিতরে লাঞ্ছিত আমি করিনি এলাকার লোকজন করেছে।

পত্নীতলা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি শামসুল আলম শাহ  অভিযোগের বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে বলে জানিয়েছেন।

রাজশাহীর সময় / এম আর