ফের গাজায় ভয়ংকর আঘাত হেনেছে ইজরায়েল। মঙ্গলবার মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় ‘অগ্নিবর্ষণ’ করে ইজরায়েলি বিমানবাহিনী। এই হামলায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৯ জনের। যার মধ্যে রয়েছেন দুজন পুলিশকর্মীও। বিভিন্ন দেশের চাপ, আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশ সব কিছু উপেক্ষা করে রাফা-সহ গোটা গাজা ভূখণ্ডে তীব্র আক্রমণ চালাচ্ছে দখলদার ইজরায়েলিসেনারা। এদিকে, প্যালেস্টাইনকে রাষ্ট্রের মর্যাদা দিয়েছে ইউরোপের তিনটি দেশ। এবার তালিকায় যুক্ত হয়েছে স্লোভেনিয়ার নাম।
হামাস যোদ্ধাদের নিমূলে গোটা গাজা ভূখণ্ড গুঁড়িয়ে দিচ্ছে তেল আভিভ। পণবন্দিদের খুঁজতে জেহাদিদের ডেরা তোলপাড় করছে ইজরায়েলি সেনারা। গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দাবি, মধ্য গাজার দেইর-আল-বালাহ শহরে ইজরায়েলের বিমানহানায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৭ জন। অন্যদিকে, রাফায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার সময় বোমাবর্ষণে দুই পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। যা নিয়ে ফের একবার ইহুদি দেশটির প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ বেড়েছে আন্তর্জাতিক মহলের। সকলেই দাবি জানাচ্ছেন অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির।
বলে রাখা ভালো, স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে প্যালেস্টাইনের স্বীকৃতির দাবি বহুদিনের। সম্প্রতি প্যালেস্টাইনকে রাষ্ট্রসংঘের পূর্ণাঙ্গ সদস্য করার প্রস্তাব পাস হয়েছে। যা নিয়ে এমনিতেই ক্ষোভে ফুঁসছে ইজরায়েল। এর মাঝেই ইহুদি দেশটির সঙ্গে সংঘাত বাড়িয়ে গত মে মাসে প্যালেস্টাইনকে রাষ্ট্র হিসাবে মর্যাদা দিয়েছে স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ড। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে স্লোভেনিয়া। সেদেশের পার্লামেন্টে সংখ্যা গরিষ্ঠতায় প্যালেস্টাইনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব পাস হয়ে গেছে। যাতে এই যুদ্ধ বন্ধ করা নিয়ে চাপ বাড়ে ইজরায়েলের উপর।
ইউরোপীয় দেশগুলোর এই পদক্ষেপ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। তীব্র বিরোধিতা জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশ প্যালেস্টাইনকে রাষ্ট্রের মর্যাদা দিচ্ছে। এর উদ্দেশ্য একটাই। সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করা। শমরিয়া ও যিহুদিয়ার ৮০ শতাংশ প্যালেস্তিনীয় গত ৭ অক্টোবরের হামলাকে সমর্থন করে। এটা একটা সন্ত্রাসী দেশ হয়ে উঠবে। ওরা বার বার ৭ অক্টোবরকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে। আমরা তা কখনই হতে দেব না। সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করলেই শান্তি ফিরবে না। আর আমরা হামাসকে ধ্বংস করবই। কেউ আমাদের ঠেকাতে পারবে না।” বিশ্লেষকদের মতে, প্যালেস্টাইন ইস্যুতে এবার ইউরোপের এই ৪ দেশের সঙ্গে কার্যত ‘ঠান্ডা লড়াই’য়ে জড়িয়েছেন নেতানিয়াহু। আগামিদিনে এই সংঘাত কোনদিকে যায় সেদিকেই নজর কূটনৈতিক মহলের।