২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৪:০৫:৩২ পূর্বাহ্ন


ডাকাতি করতে এসে যৌন হেনন্তার শিকার!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৫-২০২৪
ডাকাতি করতে এসে যৌন হেনন্তার শিকার! প্রতিকী ছবি


ডাকাতি করতে এসে বিপদে পড়লেন ডাকাত নিজেই। ভেবেছিলেন, ভয় দেখিয়ে টাকাপয়সা লুটে পালিয়ে যাবেন, কিন্তু তার সঙ্গে যা ঘটল তা তিনি স্বপ্নেও ভাবেননি তিনি।

২০০৯ সালের ঘটনা। রাশিয়ায় মেশচোভিস্ক এলাকার একটি স্যালোঁতে (সেলুন) ডাকাতি করতে যানন ৩২ বছর বয়সী ভিক্টর জাসিনস্কি। স্যালোঁতে তখন কর্মচারী থেকে মালিক- সবাই উপস্থিত।

ভিক্টর ভেবেছিলেন, ভয় দেখিয়ে স্যালোঁর নারী মালিকের কাছ থেকে টাকাপয়সা নিয়ে পালিয়ে যাবেন। কিন্তু তিনি জানতেন না, ওই মহিলা কারাতে জানেন, তার 'ব্ল্যাক বেল্ট'ও আছে।

২৮ বছর বয়সী ওলগা জাজাক ছিলেন ওই স্যালোঁর মালিক। ভিক্টর স্যালোঁতে ডাকাতি করতে ঢুকলে রুখে দাঁড়ান ওলগা। ভিক্টরের বিশেষ অঙ্গে সজোরে আঘাত করেন তিনি। আঘাতের তীব্রতায় ভিক্টর প্রায় অচেতন হয়ে পড়েন। তার পর চুল শুকানোর যন্ত্রের (হেয়ার ড্রায়ার) তার দিয়ে ভিক্টরের হাত বেঁধে ফেলেন ওলগা।

স্যালোঁতে উপস্থিত কর্মচারীরা ভাবেন, তাদের নিরাপত্তার জন্য ভিক্টরের এমন অবস্থা করেন ওলগা। ওলগাও তার স্যালোঁর কর্মচারীদের আশ্বাস দেন যে তিনি পুলিশে খবর দিয়েছেন। খুব তাড়াতাড়ি পুলিশ ভিক্টরকে গ্রেপ্তার করতে স্যালোঁতে আসছে। কর্মচারীরা যেন তাদের হাতের কাজ শেষ করে বাড়ি চলে যান, এমনটাই নির্দেশ দেন ওলগা। কিন্তু তার পরেই ঘটনার চিত্র বদলে যায়।

সবাই চলে গেলে স্যালোঁর পেছনে একটি ঘরে ভিক্টরকে নিয়ে যান ওলগা। সেখানে তাকে নগ্ন করা হয়। তার পর ঘরে একটি চেয়ারে বসিয়ে ভিক্টরের হাত পেছনের দিকে শক্ত করে বেঁধে দেন।

ভিক্টর প্রথমে ভেবেছিলেন, ওলগা তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন। কিন্তু তার সঙ্গে যা যা ঘটতে শুরু করল, তাতে ভয় পেয়ে যান ভিক্টর। ওই স্যালোঁ থেকে আদৌ বেঁচে ফিরতে পারবেন কি-না, তা নিয়েও শঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি।

ওলগাকে তিনি দেখতে পেলেন অন্যরূপে। ভায়াগ্রা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন ওলগা। ভিক্টরের অনুমতি ছাড়া জোর করে তার মুখের ভেতর পুরে দেন ভায়াগ্রা। তার কিছুক্ষণ পরেই ভিক্টরের সঙ্গে শরীরি খেলায় মেতে ওঠেন ওলগা। টানা তিন দিন এভাবেই ভিক্টরের ওপর নানাভাবে যৌন নির্যাতন চালাতে থাকেন ওলগা। তিন দিন ধরে নগ্ন অবস্থায় চেয়ারের সঙ্গে ভিক্টরকে বেঁধে রাখেন তিনি। এমনকি ভিক্টরকে কিছু খেতেও দেননি ওলগা। শুধু মুঠো মুঠো ভায়াগ্রা খাইয়েছেন তাকে। তিন দিন ভিক্টরের শরীরকে নিজের প্রয়োজন মতো ব্যবহার করে তাকে ছেড়ে দেন।

ছাড়া পেয়ে ভিক্টর প্রথমে হাসপাতালে যান। ওলগার অত্যাচারে তার বিশেষ অঙ্গে ক্ষত হয়। সুস্থ হয়ে ভিক্টর থানায় গিয়ে ওলগার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ করেন। ভিক্টরের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওলগাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিন্তু ওলগার জবাব শুনে স্তম্ভিত পুলিশও। ওলগা দাবি করেন, ভিক্টর যা করেছেন তার জন্য তাকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এমনকি ভিক্টরকে গালিগালাজও করতে শুরু করেন ওলগা। ওলগা পুলিশকে বলেন, 'আমি মাত্র দু-তিনবার ওর সঙ্গে শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হয়েছি।' তার আরও দাবি, ভিক্টর অনেক ঘটনাই পুলিশের কাছে উল্লেখ করেনি।

ভিক্টরের অভিযোগ, তিন দিন ধরে ভায়াগ্রা ছাড়া আর কিছু খেতে দেওয়া হয়নি তাকে। কিন্তু ওলগা জানান, ভিক্টরকে ভালো মতোই খেতে দেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, ভিক্টরকে নতুন প্যান্টও কিনে দেন। ওলগার দাবি, ভিক্টর যখন তার স্যালোঁ থেকে বের হচ্ছিলেন তখন ভিক্টরকে কিছু টাকাও দেন তিনি।

কিন্তু ভিক্টর পুলিশের কাছে সব অস্বীকার করেন। পুলিশ অবশ্য দুজনকেই গ্রেপ্তার করে।

২০০৯ সালে এই ঘটনাটি সংবাদমাধ্যমে আসায় অনেকের মধ্যে স্যালোঁর ঠিকানা জানার কৌতূহল তৈরি হয়। কেউ কেউ আবার ওই স্যালোঁতে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। ডাকাতি করার শাস্তি যদি এমন হয় তবে তারাও এমন শাস্তি পেতে চান বলে জানান। তবে পুলিশ এই ঘটনার কোনো রেকর্ডই কারও সঙ্গে শেয়ার করেনি। সংবাদসূত্র : মেইল অনলাইন, ফোর্বস ব্লগ