সুরা মুতাফফিফীন কোরআনের ৮৩তম সুরা, এর আয়াত সংখ্যা ৩৬টি। সুরা মুতাফফিফীন মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। ‘মুতাফফিফীন’ শব্দটি ‘মুতাফফিফ’ শব্দের বহুবচন, অর্থ ওজনে কম দেয় এমন ব্যক্তি। ওজনে কম দেয় এমন ব্যক্তিদের শাস্তির ঘোষণা দিয়ে শুরু হয়েছে সুরাটি। সুরাটিতে আরও আলোচিত হয়েছে, কেয়ামতের দিনের ভয়াবহতা, নেক ও বদ আমলকারীদের আখেরাতের ঠিকানা, মুমিনদের আখেরাতের বিভিন্ন নেয়ামত, কাফেরদের শাস্তি ইত্যাদি।
সুরা মুতাফফিফীনের ১-৬ আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
(১)
وَيْلٌ لِلْمُطَفِّفِينَ
ওয়াইলুল লিলমুতাফফিফীন।
দুর্ভোগ তাদের জন্যে যারা মাপে কম দেয়,
(২)
الَّذِينَ إِذَا اكْتَالُوا عَلَى النَّاسِ يَسْتَوْفُونَ
আল্লাযীনা ইয়াকতা-লূ‘আলান্না-ছি ইয়াছতাওফূন।
যারা লোকের কাছ থেকে যখন মেপে নেয়, তখন পূর্ণ মাত্রায় নেয়
(৩)
وَإِذَا كَالُوهُمْ أَوْ وَزَنُوهُمْ يُخْسِرُونَ
ওয়া ইযা কালূহুম আও ওয়াঝানূহুম ইউখসিরূন।
এবং যখন লোকদেরকে মেপে বা ওজন করে দেয়, তখন কম দেয়।
(৪)
ألا يَظُنُّ أُولَئِكَ أَنَّهُمْ مَبْعُوثُونَ
আলা ইয়াজুননু উলাইকা আন্নাহুম মাবউসূন।
তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে।
(৫)
لِيَوْمٍ عَظِيمٍ
লিয়াওমিন আজীম।
সেই মহাদিবসে,
(৬)
يَوْمَ يَقُومُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعَالَمِينَ
ইয়াওমা ইয়াকূমুন-নাসু লিরাব্বিল আলামীন।
যেদিন মানুষ দাঁড়াবে জগতসমূহের রবের সামনে।
এ আয়াতগুলো থেকে যে শিক্ষা ও নির্দেশনা আমরা পাই
১. বেচেকেনার ক্ষেত্রে ওজনে কম দেওয়া হারাম। মূল্য গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বেশি মূল্য নেওয়াও হারাম। ইচ্ছাকৃত এ রকম কম-বেশি করা তা যে পরিমাণই হক, যতো কমই হোক অত্যন্ত গর্হিত পাপ।
২. পরকাল, হিসাব ও প্রতিদানে বিশ্বাস মুসলমানদের মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বাস, পরকালে অবিশ্বাসী হয়ে কেউ মুমিন হতে পারে না। পরকালের বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে অন্তরে ধারণ করা আমাদের কর্তব্য।
৩. কেয়ামতের দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভয়াবহ এক দিন। সেদিন মানুষ বিশ্বজগতের রব আল্লাহর সুবাহানাহু ওয়াতাআলার সামনে দাঁড়াবে এবং তিনি প্রত্যেকের জন্য তার ভালো ও মন্দ কাজের প্রতিদানের ফয়সালা করবেন।