২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৪:৩৬:৪০ পূর্বাহ্ন


জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন
নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৩-২০২২
জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন


মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন। কোভিড-১৯ জনিত কারনে দীর্ঘ বিরতির পর সবাইকে সাথে নিয়ে স্বশরীরে মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে শনিবার (২৬ মার্চ) স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনের বর্নিল এই আয়োজন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে। বঙ্গবন্ধু মিলনায়তন পরিণত হয় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের মিলনমেলায়। 

অনুষ্ঠানটির প্রধান অতিথি ছিলেন নিউ ইয়র্ক সফররত মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা এমপি। প্রদত্ত বক্তব্যে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব অগ্রগতি ও অসামান্য সাফল্যগাঁথা তুলে ধরেন। প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, শিল্প, ব্যবসা-বানিজ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, যুব উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, বৈদেশিক বিনিয়োগ, ও পররাষ্ট্রসহ বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশের অদম্য অগ্রযাত্রার বিভিন্ন দিক। মাথাপিছু আয়, জিডিপি’র উর্দ্ধমূখী প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন, গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সূচক তুলে ধরেন তিনি। পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশসমূহের সাথে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার তুলনামূলক তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী পরিকল্পনা গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন। সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সকল আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন তা উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী। প্রদত্ত বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী জাতির পিতার নেতৃত্বে দীর্ঘ তেইশ বছরের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও একাত্তরেরমুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের মহানায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়েপড়ে। ত্রিশ লাখ শহীদ আর দু’লাখ নির্যাতিত মা-বোনের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে আমরা অর্জন করি লাল-সবুজের পতাকা,স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। দেশগঠনে প্রবাসীদের অবদানের স্বীকৃতি জানিয়ে তিনি জাতির পিতার স্বপ্নের সেনার বাংলাবিনির্মাণে প্রবাস থেকে আরও অবদান রাখার আহ্বান জানান। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, স্বাধীনতার পাঁচ দশকে বাংলাদেশআন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বিশ্বস্ত নাম। আজ বিশ্ব শান্তিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশ এই মুহুর্তে ইউএন উইমেন নির্বাহী বোর্ড, পিসবিল্ডিং কমিশন, অভিবাসনসহ বেশ কিছু সংস্থা ও প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব প্রদান করছে।

এছাড়া বাংলাদেশ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ রেজ্যুলেশন পেশ করার করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ এখন সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের বলিষ্ঠ পদচারনার স্বীকৃতি স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও পুরস্কার লাভ করেছেন। গত সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে

অংশগ্রহণকালে এসডিজি বাস্তবায়নে অসামান্য সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘের এসডিএসএন ‘এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করেছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক জাতিসংঘ প্রাঙ্গণের বাগানে জাতির পিতার নামে একটি বেঞ্চ ওস্থাপন ও গাছ রোপণের প্রথম ঘটনা।

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের সম্মানে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, কবি, শিল্পী, সাংবাদিক, সাহিত্যিকসহ সহ বরেণ্য প্রবাসী বাংলাদেশীগণ। তাঁরা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় নিজেদেরকে আরও সম্পৃক্ত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। মিশন আয়োজিত স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানের প্রশংসাও করেন তাঁরা। সকলকে সাথে নিয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে কেক কাটেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

প্রবাসী বাংলাদেশীদের সংবর্ধনার আগে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এসময় মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের পবিত্র আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।  উভয় পর্বেই অংশগ্রহণ করেন সফররত প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা এমপি।

রাজশাহীর সময়/এএইচ