দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর ছয়টি সংসদীয় আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনিত ৫জন এবং ১জন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। রোববার রাতে রাজশাহী জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে বেসরকারিভাবে এই ফল ঘোষণা করা হয়।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী : রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ৫৯২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানী পেয়েছেন ৪২ হাজার ৪১৯ ভোট।
রাজশাহী-২ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা পেয়েছেন কাঁচি প্রতিক নিয়ে ৫৫১৪১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনিত ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩১৪২৩ ভোট।
রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনিত জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৪৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পাটির আব্দুস সালাম খান ৫ হাজার ২৩ ভোট পেয়েছেন।
রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান এমপি প্রকৌশলী এনামুল হক পেয়েছেন কাঁচি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫৩ হাজার ৮১২ ভোট।
রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৮৬ হাজার ৯১৩ ভোট । তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুর রহমান ঈগল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৮৩ হাজার ৮৬২ ভোট।
রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১লাখ ১ হাজার ১৫৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক সংসদ সদস্য রাহেনুল হক কাঁচি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৭১ হাজার ১৬৮ ভোট।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, রাজশাহীতে অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনে গড়ে ৪১ দশমিক ৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে ৪৬ শতাংশ, রাজশাহী-০২ (সদর) আসনে ২০ শতাংশ, রাজশাহী-০৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে ৪০ দশমিক ১৩ শতাংশ, রাজশাহী-০৪ (বাগমারা) আসনে ৫৩ শতাংশ, রাজশাহী-০৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে ৪৬ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং রাজশাহী-০৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে ৪৪ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ব্যতিত রাজশাহীর ৬টি সংসদীয় আসনেই কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এজন্য প্রার্থী-ভোটার, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
উল্লেখ্য, রাজশাহীর ছয়টি আসনে প্রার্থী ছিলেন ৪১ জন। এর মধ্যে রাজশাহী-১ আসনে ভোটযুদ্ধে ছিলেন ১০ জন, রাজশাহী-২ আসনে সাতজন, রাজশাহী-৩ আসনে ছয়জন, রাজশাহী-৪ আসনে ছয়জন, রাজশাহী-৫ আসনে ছয়জন ও রাজশাহী-৬ আসনে ছয়জন প্রার্থী।
রাজশাহী জেলায় মোট ভোটার ছিল ২১ লাখ ৭৭ হাজার ৭১৪। ভোটকেন্দ্র ৭৭০টি। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩০ জন। নারী ভোটার ১০ লাখ ৯২ হাজার ২৯৬ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১৮ জন। ভোটকক্ষ ছিল চার হাজার ৯৬৩টি। রাজশাহীর ছয়টি আসনের মধ্যে ৯টি উপজেলা, ১৪টি পৌরসভা ও ৭২টি ইউনিয়ন। এর মধ্যে রাজশাহী-২ আসনটি সিটি করপোরেশনের মধ্যে।