দিব্যা পাহুজা (২৭) সাবেক মডেলের হত্যাকাণ্ডে সারা দেশজড়ে তোলপাড়। গুরুগ্রামের একটি হোটেল থেকে তাঁর গুলিবিদ্ধ মৃরদেহ উদ্ধার করা হয়। জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে দিব্যাকে হোটেলে নিয়ে যায় অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ দুষ্কৃতী। এদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দিব্যার মৃতদেহ গাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিল এই তিনজন। বাকি দু’জনের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু রহস্য ঘনিয়ে উঠেছে তাঁর দেহ নিয়ে। যা এখন নিখোঁজ।
যখন পুলিশ দল একটি অভিযোগের ভিত্তিতে হোটেলে পৌঁছায়, তখনও হোটেলের প্রাঙ্গনে মৃত অবস্থায় পড়ে ছিলেন দিব্যা। এবং পাহুজার মৃতদেহ যেখানে ছিল, সেই তলারই একটি রুমে তল্লাশি চালায় পুলিশ। কিন্তু সেটা ভুল ঘর। প্রাক্তন প্রেমিক এবং গুরুগ্রামের মোস্ট ওয়ান্টেড গ্যাংস্টার সন্দীপ গাদোলিকে হত্যায় অভিযুক্ত ছিলেন দিব্যা। তিনি ২০১৬ সালে মুম্বইতে একটি তথাকথিত ভুয়ো পুলিশি এনকাউন্টারে গাদোলিকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন বলে অভিযোগ ছিল।
মঙ্গলবার রাতে গুরুগ্রামের একটি শহরের হোটেলে দিব্যাকে গুলি করে হত্যা করার অভিযোগ হোটেল মালিক অভিজিৎ সিংয়ের বিরুদ্ধে। তিনি ছাড়াও হোটেলের অন্য দুই কর্মী, ওম প্রকাশ এবং হেমরাজকে বুধবার গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার তিনজনকে পাঁচ দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, দিব্যা হোটেল মালিককে ব্ল্যাকমেল করছিলেন এবং তার কিছু অশ্লীল ভিডিও এবং ছবির বিনিময়ে অর্থ আদায় করছিলেন বলে অভিযোগ। রিপোর্ট অনুসারে, সিং, অর্থাৎ মূল অভিযুক্ত এই ঘটনার সময় মত্ত অবস্থায় ছিলেন।
অনুপ গুপ্ত, যিনি হোটেলটি সিংয়ের কাছ থেকে লিজ নিয়েছিলেন, তিনিই পুলিশকে খবর জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে হোটেলে একজন মহিলার দেহ পাওয়া গিয়েছে। শুধুমাত্র ১১৪ নম্বর রুমটি চেক করা হয়েছিল বলে জানা যায়। হোটেলের প্রথম তলার ওই ঘরটি স্থায়ীভাবে সিংয়ের নামে সংরক্ষিত থাকে। তবে সন্দেহজনক কিছু না পাওয়ায় তারা সেখান থেকে চলে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদেহটি ১১১ নম্বর রুমে পড়ে ছিল, যেটা সেই তলাতেই ছিল।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার পর, রাত ১০:৪২ টার দিকে হোটেলের আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। সিং তাঁর এক বন্ধু এবং দুই কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মৃতদেহটিকে একটি সাদা চাদরে মুড়িয়ে একটি গাড়িতে নিয়ে যান। সিসিটিভি ফুটেজের উল্লেখ করে এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ সূত্র।
এরপর রাত ১১টায় পাহুজার বাবা-মা পুলিশে ফোন করে মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার খবর দেন। পুলিশের একটি দল ফের হোটেলে যায় এবং সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে। যাতে দেখা যায়, একটি দেহকে প্রথম তলা থেকে টেনে এনে গাড়িতে রাখা হচ্ছে। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, গাড়িটি সিংয়ের বন্ধু অজয় মেহতার নামে। পঞ্জাবের পাতিয়ালার একটি বাস স্ট্যান্ডে গাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে, কিন্তু মৃতদেহটি এখনও পাওয়া যায়নি।