২৯ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০৮:৩১:৩৩ অপরাহ্ন


তানোরে নিন্মমানের আলু বীজ দেয়ায় ৪ লাখ টাকা জরিমানা
আলিফ হোসেন,তানোর:
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-১২-২০২৩
তানোরে নিন্মমানের আলু বীজ দেয়ায় ৪ লাখ টাকা জরিমানা তানোরে নিন্মমানের আলু বীজ দেয়ায় ৪ লাখ টাকা জরিমানা


রাজশাহীর তানোরে নিম্নমাণের আলু বীজ নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে কালীগঞ্জহাটের আলোচিত মেসার্স কর্মকার হার্ডওয়ারের স্বত্ত্বাধিকারী সুভাষ কর্মকারের ৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। কিন্ত্ত প্রায় ১৬ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে মাত্র ৪ লাখ টাকা দিয়ে রক্ষা এবং অবৈধভাবে আলু বীজ বিক্রির অপরাধে সুভাষের কোনো শাস্তি না হওয়ায় কৃষকদের মাঝে চরম ক্ষোভের  সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সুভাষ অনুমোদিত বীজ ডিলার না। কিন্ত্ত বিভিন্ন কৌশলে বিভিন্ন এলাকা থেকে চোরা পথে নিম্নমানের আলু বীজ, এনে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে বিক্রি করে আসছেন। সুভাষ কর্মকারের অপকর্মে এলাকার একাধিক আলুচাষি নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে।  এদিকে প্রতারিত আলু চাষি মিজানুর রহমান মিন্টু বাদি হয়ে সুভাষ কর্মকারকে বিবাদী করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও তানোর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ২৭ ডিসেম্বর বুধবার স্থানীয়ভাবে শালিশ বৈঠকে সুভাষ অপরাধ শিকার করায়, ক্ষতিপূরণ স্বরুপ (বীজের দাম) ৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। 

জানা গেছে, মেসার্স কর্মকার হার্ডওয়ারের স্বত্ত্বাধিকারী সুভাষ কর্মকার চারা গজানোর শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে ব্র্যাকের সার্টিফাইড বি-গ্রেড আলু বীজ (নকল) দিয়ে কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সুভাষের কাছে থেকে নকল আলু বীজ কিনে রোপণ করে প্রতারিত হয়েছেন। আলু চাষিদের অভিযোগ সুভাষ কর্মকার ব্র্যাকের আলু বীজের ব্যাগ রিপ্যাক করে বীজ আলুর পরিবর্তে খাবার আলু গছিয়ে দিয়েছেন। এঘটনায় এলাকার কৃষকদের মাঝে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে গত ২৩ ডিসেম্বর শনিবার সরেজমিন উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের(ইউপি) গাগরন্দ চকপাড়া মাঠে দেখা গেছে, আলু চাষি মিজানুর রহমান মিন্টুর প্রায় ৩০ বিঘা জমির রোপণ করা আলু বীজ অঙ্কুরিত না হয়ে পচে গেছে। তিনি কালীগঞ্জ হাটের  হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী সুভাষ কর্মকারের কাছে থেকে এসব আলু বীজ কিনেছেন। সুভাষ ব্র্যাকের সার্টিফাইড বি-গ্রেড বীজ বলে এসব আলু বীজ বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, সুভাষের কাছে থেকে আলু বীজ কিনে তার মতো আরো অনেক আলু চাষি প্রতারিত হয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আলু চাষি বলেন, সুভাষ কর্মকার  দীর্ঘদিন যাবত আলু বীজ নিয়ে প্রতারণা করে সাধারণ কৃষকের কাছে থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে সুভাষ কর্মকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আলু বীজ নিয়ে মিন্টুর সমস্যা হয়েছিল তাকে ক্ষতিপুরুণ বাবদ ৪ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে।

এবিষয়ে আলু চাষি মিজানুর রহমান মিন্টু বলেন, তিনি ব্যাংকের ঋণের টাকায় আলু চাষ করছেন, এখন পর্যন্ত্য তার প্রতি বঘায় ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি বলেন, সুভাষের প্রতারণায় তিনি এখন নিঃস্ব। তবে ক্ষতিপূরণ স্বরুপ তাকে মাত্র ৪ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, গত ২৪ ডিসেম্বর রোববার গাগরন্দ চকপাড়া মাঠে আলুখেত সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা হয়েছে। তিনি বলেন, বীজ সমস্যার কারণে এমনটি হয়েছে। তিনি বলেন, অনুমোদন ব্যতিত আলু বীজ বিক্রি করাটা অপরাধ।