রাজশাহীর তানোরের কালীগঞ্জহাটের আলোচিত মেসার্স কর্মকার হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী সুভাষ কর্মকারের অপকর্মে এলাকার একাধিক আলুচাষি নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে। এঘটনায় প্রতারিত আলু চাষি মিজানুর রহমান মিন্টু বাদি হয়ে কথিত বীজ ব্যবসায়ী সুভাষ কর্মকারের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও তানোর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত শনিবার ভুক্তভোগী কৃষকেরা সুভাষকে আটক ও ক্ষতিপূরণ আদায়ে আলুখেতে মানববন্ধনসহ প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা গেছে, মেসার্স কর্মকার হার্ডওয়ারের স্বত্ত্বাধিকারী সুভাষ কর্মকার চারা গজানোর শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে ব্র্যাকের সার্টিফাইড বি-গ্রেড আলু বীজ (নকল) দিয়ে কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সুভাষের কাছে থেকে নকল আলু বীজ কিনে রোপণ করে প্রতারিত হয়েছেন। আলু চাষিদের অভিযোগ সুভাষ কর্মকার ব্র্যাকের আলু বীজের ব্যাগ রিপ্যাক করে বীজ আলুর পরিবর্তে খাবার আলু গছিয়ে দিয়েছেন। এঘটনায় এলাকার কৃষকদের মাঝে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে ২৩ ডিসেম্বর শনিবার সরেজমিন উপজেলার চাঁন্দুড়িয়া ইউনিয়নের(ইউপি) গাগরন্দ চকপাড়া মাঠে দেখা গেছে, আলু চাষি মিজানুর রহমান মিন্টুর প্রায় ৩০ বিঘা ও রবিউল ইসলামের প্রায় ৩২ বিঘা
জমির রোপণ করা আলু বীজ অঙ্কুরিত না হয়ে পচে গেছে। এতে তারা প্রায় ৭০ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ঋণের টাকায় আলু চাষ করে তারা এখন নিঃস্ব ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
তারা কালীগঞ্জ হাটের হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী সুভাষ কর্মকারের কাছে থেকে এসব আলু বীজ কিনেছেন। সুভাষ ব্র্যাকের সার্টিফাইড বি-গ্রেড বীজ বলে এসব আলু বীজ বিক্রি করেছেন। তারা বলেন, সুভাষের কাছে থেকে আলু বীজ কিনে তাদের মতো আরো অনেক আলু চাষি প্রতারিত হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আলুচাষি বলেন, সুভাষ কর্মকার দীর্ঘদিন যাবত আলু বীজ নিয়ে প্রতারণা করে সাধারণ কৃষকের কাছে থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে সুভাষ কর্মকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার নিজের আলুখেতেও আশানুরূপ চারা গজায়নি এটা আবহাওয়ার কারণে হয়েছে। তিনি বলেন, যেখানে মানুষের জীবনের কোনো গ্যারান্টি নাই, সেখানে আলু বীজের কি গ্যারান্টি দিবো। এবিষয়ে আলু চাষি মিজানুর রহমান মিন্টু বলেন, তিনি ঋণের টাকায় আলু চাষ করছেন, এখন পর্যন্ত্য তার প্রতি বিঘায় ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি বলেন, সুভাষের প্রতারণায় তিনি এখন নিঃস্ব। এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, ২৪ ডিসেম্বর রোববার আলুখেত সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা হবে। এবিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আব্দুর রহিম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে