৩০ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ১২:৩২:৪৫ পূর্বাহ্ন


রাজশাহী-২ (সদর): নৌকাকে হারাতে একাট্রা রাজশাহী নগর আ'লীগ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-১২-২০২৩
রাজশাহী-২ (সদর): নৌকাকে হারাতে একাট্রা রাজশাহী নগর আ'লীগ রাজশাহী-২ (সদর): নৌকাকে হারাতে একাট্রা রাজশাহী নগর আ'লীগ


রাজশাহী-২ (সদর) আসনে নৌকাকে হারিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশার কাচি প্রতিককে জেতাতে একাট্রা হয়ে অঙ্গীকার করেছেন নগর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এ আসনে এবারও ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। শুক্রবার সন্ধ্যায় নগর আওয়ামী লীগের এক মতবিনিময় সভায় কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান বাদশার হাত উঁচিয়ে এই অঙ্গীকার করেন তারা।

মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকারের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় মহানগর ও এর অন্তর্গত থানা আওয়ামী লীগ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের সব স্তরের নেতৃবৃন্দ শফিকুর রহমান বাদশাকে জেতানোর জন্য একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।

দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, এই আসনে ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। ২০০৮ সাল থেকে জোটের মনোনয়ন নিয়ে টানা তিনবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। এবারও নৌকার টিকিট পেয়েছেন। একই আসনে কাঁচি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা। জোটের প্রার্থী এমপি হলেও নেতাকর্মীদের কোনও উপকারে না আসায় এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী দলীয় নেতাকে জেতাতে চান তারা।

এ ব্যাপারে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, আমরা নৌকার পক্ষে, দলের কেউ নৌকার বিপক্ষে নই। সব সময় নৌকার জন্য কাজ করছি। কিন্তু ফজলে হোসেন বাদশা নৌকা প্রতীক পেয়ে আমাদের নেতা খায়রুজ্জামান লিটনকেই যদি সভা-সমাবেশে না ডাকেন, তাহলে কী আমাদের ঠেকা পড়েছে যে, তার বাসায় গিয়ে নৌকার জন্য কাজ করতে হবে। আমাদের দলের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন না করায় এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীকে জেতানোর জন্য মাঠে নেমেছি আমরা।

নৌকার প্রার্থীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে মোহাম্মদ আলী আরও বলেন, আমাকে যেখানেই ডাকা হয়, সেখানেই যাই। কিন্তু নৌকার প্রার্থী আমাকে নির্বাচন করার জন্য আমন্ত্রণ জানাননি। এখন আমরা যদি দলীয় নেতাকর্মীদের মতামত নিয়ে দলের সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশাকে সমর্থন দিই, তাহলে অপরাধ হবে না। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হবে না। এজন্য যদি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জবাব দিতে হয়, তাহলে সেই জবাব আমি দেবো। সেই জবাব দেবেন খায়রুজ্জামান লিটন। আমরা যখন মাঠে নেমেছি, তখন শফিকুর রহমানকে বিজয়ী করে আনবো। তবে আমরা নৌকার বিপক্ষে নই, ফজলে হোসেন বাদশার বিপক্ষে। তাকে আমরা দেখিয়ে দেবো, রাজশাহীতে তার কোনও জনসমর্থন নেই।’

এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথমে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছিল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামালকে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ঘোষণার পর তাকে নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা আনন্দ মিছিল করেছিলেন। ১৪ দলের মনোনয়ন ঘোষণার পরে মোহাম্মদ আলীকে বাদ দিয়ে সেই নৌকা ফজলে হোসেন বাদশাকে দেওয়া হয়। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

এ সময় বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, আইন বিষয়ক সম্পাদক মুসাব্বিরুল ইসলাম, সদস্য আতিকুর রহমান কালু, আব্দুস সালাম, রাজপাড়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আনসারুল হক খিচ্চু, মতিহার থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, নগর শ্রমিক লীগ সভাপতি মাহাবুবুল আলম, নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজিব, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুম মুবিন সবুজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ হীল গালিব, রুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌমিক সাহা, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শুভ এবং নগর যুব মহিলা লীগের সভাপতি ইসমত আরা।

এদিকে, নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেছেন ফজলে হোসেন বাদশা। তবে তার প্রচারণায় নামেননি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচারণা করছেন।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, রাজশাহীতে ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠকের পরই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে মাঠে থাকবেন। তাদের নিয়ে বৈঠক করবো।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগরের সভাপতি লিয়াকত আলী বলেন, আমরা এখনও আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করার চেষ্টা করছি।