নিউ ইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে অসদাচরনের পর ক্ষমা চাইলেন নিউ ইয়র্কের কুইন্সের ডিস্ট্রিক্ট-২৪ এর সেই কাউন্সিলম্যান জেমস এফ জিনারিও। গত ২১ ফেব্রুয়ারি জামাইকায় লিটল বাংলাদেশ এভ্যেনুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশিদের সম্পর্কে তিনি নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন এবং অনুষ্ঠানস্থল থেকে বাংলাদেশিদের বের হয়ে যেতে বলায় প্রবাসী বাংলাদেশি আমেরিকানরা চরম অপমানিত হন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।
ঘটনার ৩ দিন পর ২৫ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলম্যান জেমস এফ জিনারিও অসদাচরনের প্রতিবাদে জ্যামাইকাবাসীর এক সংবাদ সম্মেলনে জেমস জিনেরোকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। গত ১৩ মার্চ জামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে উপস্থিত হয়ে কাউন্সিলম্যান জেমস জিনারো জামাইকা প্রবাসীদের কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে ক্ষমা চান এবং দুঃখ প্রকাশ করেন।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জামাইকা এলাকার হিলসাইড এভেন্যু থেকে হোমলন এভেন্যু পর্যন্ত লিটল বাংলাদেশ এভেন্যুর নামফলক আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করেন কাউন্সিলম্যান জিম জিনারিও। নামফলক উন্মোচনকালে প্রবাসী বাংলাদেশিদের চরম বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনা দেখে তিনি এতটাই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন যে এক পর্যায়ে উক্ত অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার হুমকি দিয়েছিলে। কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের বিশৃঙ্খলা, অনৈক্য আর নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা দেখে হতাশ হয়ে পড়েন সস্ত্রীক কাউন্সিলম্যান জেমস। তথাকথিত নেতাদের সংবাদ সম্মেলনে আনীত অভিযোগ অহেতুক ও সঠিক নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উক্ত ঘটনার কয়েকদিন পর বিষয়টি নিয়ে কুইন্সের ডিস্ট্রিক্ট-২৪ এর কাউন্সিলম্যান জেমস এফ জিনারিও’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান বাংলাদেশিদের আনীত অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি বলেন, আমি কাউকে গালি দেইনি। আমি কাউকে অসম্মান করিনি। অনুষ্ঠানে তথাকথিত ‘নেতারা’ প্রত্যেকেই আমার দ্বারা স্বীকৃতি পেয়েছেন। তারা এমন ধরনের লোক যারা নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। তারা যে পরিমাণ আত্মপ্রচারের জন্য মনোযোগ চেয়েছিল তা দেওয়া হয়নি। অনুষ্ঠানটি ছিল বাংলাদেশের সংস্কৃতি উদযাপন নিয়ে, তবে তাদের কাছে এটি ছিল তাদের আত্মপ্রচার নিয়ে। আমি তাদেরকে আত্মপ্রচারের সুযোগ দেইনি বলে তারা পাগল হয়েছিল।
জামাইকার ইকরা পার্টি সেন্টারে অনুষ্ঠিত সভায় কাউন্সিলম্যান জিনারো বলেন, গত ২১ ফেব্রুয়ারি ‘লিটল বাংলাদেশ এভেন্যু’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে তা আমি জানতাম না এবং বুঝতেও পারি নাই। ওই দিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কমিউনিটিতে যে বিভেদের সৃষ্টি হয়েছিল, আশা করি আজকের পর থেকে তার অবসান হবে। সুধী সমাবেশ জামাইকাবাসীকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে সবাইকে সাথে নিয়েই সব অনুষ্ঠান করা হবে। আগামীতে এ ধরনের অপ্রীতিকর ও ভুল বুঝাবুঝির ঘটনা যাতে না ঘটে সে ব্যাপারেও তিনি প্রতিশ্রুতি দেন।
আমাদের কৃতজ্ঞতা ও আগামীর প্রত্যাশা অনুষ্ঠানে জ্যামাইকাবাসীদের আমন্ত্রণ জানান জামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোস্তফা রাশেল। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নাসির আলী খান পল, কাজী হালিম, ডা.বিল্লাহ, আমিনুল্লাহ, জাহেদুর রহমান, ছদরুন নুর, এবিএম ওসমান গনি, শাহ নেওয়াজ ও মইনুল ইসলাম প্রমূখ।
রাজশাহীর সময় / এম আর