চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ বিরতি চুক্তি করতে রাজি হয়েছে দখলদার নেতেনিয়াহু সরকার। গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে হামলা চালায় হামাস। পাল্টা ইজরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজা। তার পরেও ২৪০ ইজরায়েলি নাগরিককে ছাড়িয়ে আনার জন্য ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতেনিয়াহুর উপর চাপ ক্রমশ তীব্র হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত গতকাল মঙ্গলবার হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ বিরতি চুক্তিতে সায় দিয়েছে ইজরায়েলি ক্যাবিনেট।
মঙ্গলবার হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ে সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, ইজরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির ক্ষেত্রে একটা ইতিবাচক পরিণতির কাছকাছি রয়েছি।
উল্লেখ্য, ইজরায়েল-হামাস লড়াই ইতিমধ্য়েই ৪৬ দিন পার করেছে। গাজায় পানি, বিদ্যুৎ নেই। হাসপাতালে, ত্রাণ সংস্থার উপরে বোমা বর্ষণ করেছে ইজরায়েল। গাজা ছেড়ে পালাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
সমঝোতা অনুযায়ী তাদের হাতে আটক ২৪০ ইজরায়েলি নাগরিকের মধ্যে ৫০ জনকে ছেড়ে দেবে হামাস। এর জন্য তারা সময়ে পেয়েছে ১০ দিন। ইজরায়েলি সরকারের তরফে বলা হয়েছে প্রথমে ছাড়া হবে মহিলা ও শিশুদের। তবে কবে থেকে ওই চুক্তি কার্যকর হবে তা এখনও জানা য়ায়নি। ওই চুক্তির বিনিময়ে ৪ দিন হামলা থামাতে সম্মত হয়েছে ইজরায়েল।
এদিকে, ওই চুক্তি অনুযায়ী ইজারায়েল তাদের জেল থেকে বেশকিছু প্যালেস্টিনিয় মহিলা ও শিশুদের ছেড়ে দিতে সম্মত হয়েছে। এদের অধিকাংশ ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক ও পূর্ব জেরুজালেমের। ঠিক কত জনকে ছেড়ে দেওয়া হবে তা জানায়নি ইজরায়েল সরকার। সংবাদমাধ্য়মের খবর অনুযায়ী ছাড়া হতে পারে ১৫০ জনকে। অন্যদিকে, আল আরাবিয়া-র খবর অনুযায়ী ইজরায়েল তাদের জেলে আটক ৩৫০ জন শিশু-কিশোর ও ৮২ জন মহিলাকে ছেড়ে দিতে সম্মত হয়েছে। এর পাশাপাশি গাজায় জ্বালানি ও ত্রাণ ঢুকতে দিতেও রাজি হয়েছে নেতেনিয়াহু সরকার।
মঙ্গলবার রাত থেকে যুদ্ধ বিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ওই বৈঠকে ছিল ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্স, মোসাদ, সিন বেথের প্রতিনিধিরা। এরা সবাই যুদ্ধ বিরতির পক্ষেই সায় দেন। পাশাপাশি সরকারের অধিকাংশ মন্ত্রীও যুদ্ধ থামানোর পক্ষে রায় দেন।
মঙ্গলবারই হামাসের তরফে বলা হয়েছিল যুদ্ধ বিরতির ব্যাপারে ইজরায়েলের সঙ্গে মধ্যস্থতা করছে কাতার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধ বিরতি চুক্তি হয়ে যেতে পারে। তবে নেতেনিয়াহুর মন্তব্য, গাজা ইজরায়েলকে হুমকির মধ্যে রাখতে পারবে না।
এদিকে কবে থেকে ইজরায়েলি পণবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে তা সরকারি তরফে বলা হয়নি। তবে ইজরায়েলি টিভি চ্যানেল টিভি ১২ এর দাবি বৃহস্পতি বা শুক্রবার বন্দিমুক্তি শুরু হবে। তা চলবে বেশ কয়েকদিন। এখন পর্যন্ত ইজরায়েলি হানায় ১১ হাজার প্যালেস্টিনিয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এদের দুই তৃতীয়াংশই শিশু ও মহিলা। ২৭০০ মানুষ এখনও নিখোঁজ।