ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ৭ অক্টোবর থেকে চলমান যুদ্ধের ৪৬ দিনে ইসরাইল অবরুদ্ধ গাজায় ৫ হাজার ৬০০ শিশু এবং ৩ হাজার ৫৫০ নারীসহ ১৩,৩০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে৷
গাজার সরকারী মিডিয়া অনুসাওে, ৭ অক্টোবর থেকে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ছিটমহল জুড়ে ইসরাইলি হামলায় মোট ৮৩টি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে এবং আরো ১৭০টি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলকে অভিযুক্ত করেছে যে, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে গাজার মসজিদগুলোকে ধ্বংসের জন্য টার্গেট করে। ইসরাইলি বাহিনী অপ্রমাণিতভাবে দাবি কওে আসছে যে, হামাস তাদের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য মসজিদগুলো ব্যবহার করেছে।
গাজার ২.২ মিলিয়ন মানুষের জরুরি খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন : ডব্লিউএফপি
জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা গাজায় নৃশংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে, যেখানে প্রায় ২৩ লাখ মানুষের বাস।
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম বলেছে, ‘বিদ্যমান খাদ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে এবং যাদের প্রয়োজন তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য ডব্লিউএইচও এবং আমাদের অংশীদারদের জ্বালানি, গ্যাস এবং সংযোগের মতো সম্পদ বৃদ্ধির প্রয়োজন।’
ব্রিকস গাজা শীর্ষ সম্মেলন করবে :
গাজায় ইসরাইলি যুদ্ধের ছয় সপ্তাহের মধ্যে গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য ব্রিকস গ্রুপ অব নেশনস এশটি জরুরি যৌথ সভা করবে।
একটি বিবৃতি অনুসারে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা ভার্চুয়াল বৈঠকের সভাপতিত্ব করবেন, যেখানে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত এবং চীনের নেতারাও উপস্থিত থাকবেন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ভার্চুয়াল সম্মেলনে যোগ দেবেন।
সউদী আরব, আর্জেন্টিনা, ইথিওপিয়া, ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ নতুন ব্রিকস সদস্য যাদের পূর্ণ সদস্যপদ আগামী বছর শুরু হবে তাদেরও সভায় যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও এই শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন, যেখানে ব্রিকস নেতারা গাজার বর্তমান মানবিক সংকটের বিষয়ে দেশের বিবৃতি দেবেন।
গাজা হাসপাতালের পরিস্থিতি ‘বিপর্যয়কর’ :
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজন শীর্ষ কর্মকর্তা গাজার হাসপাতালের পরিস্থিতিকে ‘বিপর্যয়কর’ হিসাবে বর্ণনা করে বলেছেন, বেশিরভাগই আর কাজ করছে না এবং যা অবশিষ্ট থাকবে তা আগামী মাসে প্রত্যাশিত হাজার হাজার জন্মে প্রভাব পড়বে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং একজন চিকিৎসাকর্মীর মতে, উত্তর গাজার একটি হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় একটি শেল আঘাত হানার কয়েক ঘণ্টা পর জাতিসংঘের ব্রিফিং এসেছে, যাতে ১২ জন নিহত হয়েছে।
জেনিনে ইসরাইলি গুলিতে আহত ফিলিস্তিনি যুবক মারা গেছেন
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুই সপ্তাহ আগে উত্তর অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর আঘাতে এক যুবক ফিলিস্তিনি মারা গেছেন।
এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় ওই ব্যক্তিকে মোহাম্মদ ওয়াইস (২৫) হিসেবে শনাক্ত করেছে, যে জেনিন শহরে ইসরাইলি বাহিনীর দ্বারা গুরুতর আহত হয়ে মারা গেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এ নিয়ে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ২১৭ জন নিহত হল।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার ‘গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি দখলদারদের সংঘটিত অপরাধ’ খতিয়ে দেখার জন্য একটি আন্তর্জাতিক কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।
উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে ইসরাইলি বোমা হামলায় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হওয়ার নিন্দা জানিয়ে দেশটির অবস্থান একটি বিবৃতিতে তৈরি করা হয়েছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণারয় ইন্দোনেশিয়ার হাসপাতালে বোমা হামলাকে গাজা জুড়ে হাসপাতাল, স্কুল এবং জনসংখ্যা কেন্দ্রগুলিকে লক্ষ্য করে (ইসরাইলি) দখলদারিত্বের পদ্ধতির একটি সম্প্রসারণ বলে মনে করেছে, যা আন্তর্জাতিক আইন এবং জেনেভা কনভেনশনের একটি ‘স্পষ্ট লঙ্ঘন’। সূত্র : টিআরটি ওয়ার্ল্ড।