২৫ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার, ১০:২৭:৫২ অপরাহ্ন


শিফা হাসপাতাল চত্বরে তুমুল লড়াই, বাচ্চাদের আঁকড়ে ধরে কাঁদছেন মায়েরা
রিয়াজ উদ্দিন:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-১১-২০২৩
শিফা হাসপাতাল চত্বরে তুমুল লড়াই, বাচ্চাদের আঁকড়ে ধরে কাঁদছেন মায়েরা শিফা হাসপাতাল চত্বরে তুমুল লড়াই, বাচ্চাদের আঁকড়ে ধরে কাঁদছেন মায়েরা


গাজার সবচেয়ে বড় আল শিফা হাসপাতাল পুরোপুরি ঘিরে ফেলেছে ইজরায়েলি ফৌজ। ওই হাসপাতালটিই নাকি এখন হামাসের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি বলে মনে করা হচ্ছে। হাসপাতালের ভেতরে অস্ত্রশস্ত্রের ভাণ্ডার উদ্ধার হয়েছে। হামাস কম্যান্ডারদের সঙ্গে হাসপাতাল চত্বরেই তুমুল লড়াই শুরু হয়েছে ইজরায়েলি বাহিনীর। লাগাতার বোমাবর্ষণ চলছে। ভেতরে আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছে অন্তত ২৩০০ রোগী। তার মধ্যে হাজারের বেশি সদ্যোজাত ও শিশু।

ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স জানিয়েছে, হামাসদের অস্ত্র ফেলে বেরিয়ে আসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা তা শোনেনি। হাসপাতালের রোগীদেরই মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। তাই ইজরায়েলি সেনা হাসপাতালে ঢুকে হামাসদের বের করে আনার চেষ্টা করছে।

আল-শিফা হাসপাতালে এই মুহূর্তে অন্তত ২,৩০০ জন রোগী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছে বহু শিশুও। প্য়ালেস্তাইনের অনেক মানুষ যুদ্ধ থেকে বাঁচতে হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিলেন। বাচ্চাদের আঁকড়ে ধরে কাঁদছেন মায়েরা। ইজরায়েলি বাহিনী হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ১২ ঘণ্টার মধ্যে অস্ত্র ছেড়ে আত্মসমর্পণ করতে হবে হামাস বাহিনীকে। তা না হলে আরও ভয়ঙ্কর প্রতিঘাত হবে।

আল শিফা হাসপাতালের প্রধান মহম্মদ আবু সালমিয়াহর বলছেন, গোটা হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে সাঁজোয়া গাড়ি। হাসপাতালের কম্পাউন্ডেই শয়ে শয়ে মানুষকে গণকবর দিতে হয়েছে। এর মধ্যে শিশুরাও রয়েছে। হাসপাতাল থেকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই। যুদ্ধে যাদের প্রাণ যাচ্ছে, তাদের হাসপাতাল কম্পাউন্ডেই কবর দিতে হচ্ছে।

গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের বিরুদ্ধে অতর্কিত আক্রমণ শানায় প‌্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র বাহিনী তথা হামাস। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে প্রতিরোধ গড়ে তোলে ইজরায়েলি সেনাও। ধাপে ধাপে লড়াই ভয়ঙ্কর হতে শুরু করে। অবশেষে ২৭ অক্টোবর ‘গ্রাউন্ড অপারেশন’ শুরু করে নেতানিয়াহুর সেনা। মঙ্গলবারের পার্লামেন্ট ভবন করে ইজরায়েলি বাহিনী। তবে এই সব কিছু ছাপিয়ে বর্তমানে যেটা গোটা বিশ্বের কাছে উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে, তা হল গাজার হাসপাতালগুলির দুরবস্থা। বিশেষ করে আল শিফা, গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল। হাসপাতাল প্রধান জানিয়েছেন, জ্বালানির অভাবে হাসপাতালের বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল সাত শিশু-সহ ২৯ জন রোগী। তাদের শেষকৃত্যের জন‌্য গণকবরের বন্দোবস্ত করা হয়। এখন চারদিকে শুধু মৃতের স্তূপ, বিদ্যুৎ নেই, জল নেই। শুধু মৃত্যুর জন্যই প্রতীক্ষা করছেন সকলে।