২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১০:৫৪:০৭ পূর্বাহ্ন


রাজশাহীতে এবার ১৭৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৩-২০২২
রাজশাহীতে এবার ১৭৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ রাজশাহীতে এবার ১৭৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ


এবার রাজশাহী জেলায় ১৭৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই লক্ষ্যে নতুন পদ্ধতিতে বাড়নো হচ্ছে পেঁয়াজ বীজের উৎপাদন। হাত দিয়ে একটা একটা করে ফুলের পরাগায়ন করতে শ্রমিক খরচ অনেক বেড়ে যায়, সময়ও বেশি লাগে। এজন্য কাপড় দিয়ে পেঁয়াজ ফুলের পরাগায়নের নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ শুরু করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। এ পদ্ধতি প্রয়োগ করে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে বলেও জানান সংশ্লিষ্ট কৃষকরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, রাজশাহী জেলায় ১৭৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় চাহিদা ৯০ থেকে ৯৫ মেট্রিক টন। বাকি পেঁয়াজবীজ বাইরের জেলায় বিক্রির জন্য সরবরাহ করা হবে।

সূত্র জানায়, বিগত ২০২০-২১ মৌসুমে রাজশাহীতে ৩৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার বীজ উৎপাদিত হয়েছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বীজের দাম ২ হাজার টাকা হিসাবে কৃষকেরা উল্লিখিত দাম পান। এর আগে বিগত ২০১৯-২০২০ মৌসুমে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বীজের দাম ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা কেজি হিসাবে রাজশাহীতে উৎপাদিত পেঁয়াজবীজ স্থানীয় ও বাইরের বাজারে বিক্রি হয়েছে। 

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার টুলটুলিপাড়ার পেঁয়াজবীজ আবাদকারী কৃষক রেজাউল করিম জানান, এবার তিনি সাড়ে চার কাঠা (প্রায় ৭ শতাংশ) জমিতে পেঁয়াজের বীজের আবাদ করেছিলেন। ওই জমি থেকে তিনি চলতি মৌসুমে ২০ কেজি পেঁয়াজবীজ উৎপাদন করেছেন। এদিকে তার সহোদর বাবলু দেড় বিঘা জমিতে আবাদ করে পেঁয়াজের বীজ আহরণ করেছেন মাত্র ২৮ কেজি। দুই সহোদরের পেঁয়াজবীজ আহরণের পার্থক্যের কারণ পরাগায়ন পদ্ধতি বলে জানান কৃষক রেজাউল করিম। তিনি কৃত্রিমভাবে হাতে পরাগায়ন করেছিলেন। কিন্তু তার সহোদর নির্ভর করেছিলেন প্রাকৃতিক পরাগায়নের ওপর।

সংশ্লিষ্ট কৃষকরা বলেন, জমিতে ফসলের পোকা দমনের ক্ষেত্রে নির্বিচার কীটনাশক ব্যবহার করায় উপকারী পোকা এবং মৌমাছি মারা যাচ্ছে। এজন্য প্রাকৃতিক নির্ভর পরাগায়ন ছেড়ে পেঁয়াজবীজ চাষিরা এখন কৃত্রিম পরাগায়ন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। এতে বীজ আহরণের পরিমাণ চার গুণ বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট কৃষকরা আরো বলেন, হাত দিয়ে যে পরাগায়ন হয়ে থাকে, তাকে হস্ত পরাগায়ন বলা হয়। অর্থাৎ হাত দিয়ে পুরুষ ফুলের পরাগরেনু স্ত্রী ফুলের গর্ভমু-ে স্থাপন করা হয়। কিন্তু এভাবে পরাগায়ন করলে সময় বেশি লাগে। তাই তারা কৃষি বিভাগের পরামর্শে সাদা সুতি কাপড় (মার্কিন কাপড়) দিয়ে পরাগায়ন করছেন। কাপড়টি খেতের সব ফুলের ওপর দিয়ে আলতোভাবে টেনে নিতে হয়। আর এতেই ফুলের পরস্পরের স্পর্শে পরাগায়ন হয়ে যায়।

পেঁয়াজবীজ চাষি রেজাউল করিম আরো জানান, তিনি কৃষি বিভাগের পরামর্শে নতুন পদ্ধতিতে (কৃত্রিমভাবে) পরাগায়ন ঘটিয়ে ভালো ফলন পেয়েছেন। এ পদ্ধতিতে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ বেশি পড়ে। কিন্তু ফলন অনেক বেশি হওয়ায় খরচের বিষয়টি পুষিয়ে যায়। 

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক উম্মে সালমা জানান, রাজশাহীর চাষিরা উৎকৃষ্ট মানের পেঁয়াজবীজ উৎপাদন করেন। এই জেলার চাহিদা পূরণ করে এই বীজ এখন অন্য জেলাতেও সরবরাহ ও বিক্রি করা হয়।

রাজশাহীর সময় / এএইচ