২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ০৫:১৩:৪২ অপরাহ্ন


পুঠিয়ায় ৩ দিন ব্যাপী দুলাল বাংলা লোকনাট্য উৎসবের উদ্বোধন
মোঃ আরিফুল হক রুবেল (পুঠিয়া প্রতিনিধি) :
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৩-২০২২
পুঠিয়ায় ৩ দিন ব্যাপী দুলাল বাংলা লোকনাট্য উৎসবের উদ্বোধন পুঠিয়ায় ৩ দিন ব্যাপী দুলাল বাংলা লোকনাট্য উৎসবের উদ্বোধন


হাতের মুঠোয় হাজার বছর আমরা চলেছি সামনে' এই স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার ১৭তম দুলাল বাংলা লোকনাট্য উৎসব ২০২২।

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) বিকাল চারটা হতে পুঠিয়া থিয়েটারের উদ্যোগে ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী এ বাংলা লোকনাট্য উৎসব। চলবে আগামী ১১, ১২ মার্চ শুক্রবার ও শনিবার।

আর সেজন্যই বর্নিল সাজে সেজেছে পুঠিয়া রাজবাড়ি মাঠ প্রাঙ্গণ। প্রতিবারের মত মঞ্চের ডানপাশে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রয়েছে বঙ্গবন্ধু, লালন শাহ, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল ইসলামের ছবির সারি। এই সারিতে এবার একটি নতুন ছবি যুক্ত হয়েছে। ছবিটি লোকনাট্য গবেষক কাজী সাঈদ হোসেন দুলালের। মানুষটি ছিলেন এই উৎসবের প্রাণপুরুষ। তিনি এখন আর নেই। এ কারণেই ১৬ বছর পর এই উৎসবের নাম হয়ে গেল ‘১৭তম দুলাল বাংলা লোকনাট্য উৎসব।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় হাইকমিশন এ আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। বিকালে লাঠিখেলা, মাদারের গান, আলকাপ গান, বাংলা বাদ্য ও আদিবাসী নৃত্য দিয়ে শুরু হয় উৎসব। কিন্তু উৎসবজুড়েই যেন শোকের আবহ। অতিথিদের সবার বক্তব্যের মধ্যেই ছিল কাজী সাইদ হোসেন দুলালের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা, শোক প্রকাশ এবং অসাম্পদায়িক বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান।

সন্ধ্যায় ৭টায় রাজবাড়ির সামনে শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। তার আগেই বিকেল সাড়ে ৩টায় কাজী সাইদ হোসেন দুলালের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। বিকাল ৫টায় বের করা হয় একটি মঙ্গল শোভাযাত্রা। আর উৎসবে লাঠিখেলার দল এসেছিল পুঠিয়ার শাহাবাজপুর থেকে। রাজশাহীর তানোর থেকে আদিবাসী নৃত্য নিয়ে এসেছিল রাতৈল বাহা শিশু সাঁওতাল সংঘ। আলকাপ রঙ্গরস গ্রাম থিয়েটারও এসেছিল তানোর থেকে। বাউল দল ও বাংলা বাদ্য দল এসেছিল পুঠিয়া থেকেই।

সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর শুরু হয় আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জিব কুমার ভাটি। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, একজন স্থানীয় সংগঠক ও শিল্পীর স্মৃতির উদ্দেশে এ উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে। আশা করি, এ উৎসব আরও বেগবান হবে। দুই বাংলার সংস্কৃৃতিমনা মানুষ প্রতিবছর এ উৎসবে যোগ দেয়। গত দুই বছর করোনার কারণে আমরা ভারতীয়রা আসতে পারিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রত্মতত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রতন চন্দ্র পণ্ডিত, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান ও গ্রাম থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান ময়না। বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক কামার উল্লাহ সরকার।

এ উৎসবে প্রতিবছর দুজন নাট্য ব্যক্তিত্বকে সেলিম আল দীন পদক প্রদান করা হয়। এবার নাট্যব্যক্তিত্ব আফজাল হোসেন ও আমিরুল ইসলামকে এ পদক প্রদান করা হয়। কাজী সাইদ হোসেন দুলালের স্ত্রী নাজমাতুন নাহার আমিরুল ইসলামের হাতে এ পদক তুলে দেন। এ বছর নতুন করে কাজী সাইদ হোসেন দুলাল পদক চালু করা হয়েছে। আগামী ১২ মার্চ এ পদক লোকসংস্কৃতি গবেষক সাইমন জাকারিয়ার হাতে তুলে দেওয়া হবে।

এই উৎসবে কাজী সাইদ হোসেন দুলাল নেই, তবে তার পুরো পরিবারসহ পুঠিয়া থিয়েটারের কর্মীরা আয়োজন করেছেন। উৎসবে সেলিম আল দীন লোকনাট্য পদক দেয়া উপলক্ষ্যে সম্মাননা পাঠ করেন দুলাল কন্যা কাজী রাফিয়া সাঈদ।

রাজশাহীর সময় / এম আর