২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১১:১৭:০৫ পূর্বাহ্ন


প্রেমের টানে হেলিকপ্টারে চড়ে বরিশালে এলেন জার্মানি তরুণী
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৩-২০২২
প্রেমের টানে হেলিকপ্টারে চড়ে বরিশালে এলেন জার্মানি তরুণী প্রেমের টানে হেলিকপ্টারে চড়ে বরিশালে এলেন জার্মানি তরুণী


প্রেমের টানে সুদূর জার্মানি থেকে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন আলিসা থেওডোরা পিত্তা নামে এক তরুণী। এর আগে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের রাকিব হোসেন শুভকে বিয়ে করেন তিনি।

শুক্রবার (৪ মার্চ) বিকালে নববধূকে নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন শুভ। শনিবার (৫ মার্চ) সকালে হেলিকপ্টারযোগে বরিশালে আসেন। বিদেশি বধূ নিয়ে আসার খবর পেয়ে দলবেঁধে তাদের দেখতে আসেন গ্রামবাসী। পরে নববধূকে ফুল দিয়ে বরণ করেন শুভর স্বজনরা।

স্থানীয়রা জানান, প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে জার্মানির তরুণী আলিসাকে বিয়ে করেন শুভ। তবে সেখানে বিয়ের অনুষ্ঠান করা হয়নি। এ জন্য বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে গ্রামের বাড়িতে এসেছেন। সেখানে বউভাত ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন তারা।

শুভ বরিশালের চরবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলামের ছেলে। রেলওয়ে ডিপ্লোমা পাস করে ২০১১ সালে জার্মানিতে পাড়ি জমান। সেখানে সিটি রেলওয়ে সার্ভিসের সুপারভাইজার হিসেবে কাজ নেন। একপর্যায়ে স্থানীয় বেইলি ফিল্ড ডায়ালন্ড্রোভ এলাকার বাসিন্দা আলিসা থেওডোরা পিত্তার সঙ্গে পরিচয় হয়। আলিসা পেশায় নার্স। তার বাবা ও মা সেখানকার চাকরিজীবী।

 শুভ বলেন, গত বছরের ৫ মার্চ এলিসা ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে আলিসা বেগম হিসেবে আমার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। শনিবার আমাদের বিবাহবার্ষিকী। তাই শুক্রবার জার্মানি থেকে রওনা হয়ে বাংলাদেশে আসি। শ‌নিবার সকালে বরিশাল বিমানবন্দরে আসি। এরপর হেলিকপ্টারযোগে আলিসাকে নিয়ে বাড়ি আসি। আলিসার সঙ্গে এসেছে তার বান্ধবী লেইসা।

 শুভ আরও বলেন, জার্মানিতে একই এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় প্রায়ই আলিসার সঙ্গে দেখা এবং কথা হতো। এভাবে কিছুদিন চলার পর আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সে সম্পর্ক চলে অনেকদিন। দুজনই বুঝতাম, আমাদের মধ্যে ভালোবাসা জন্ম নেওয়ার বিষয়টি। কিন্তু প্রস্তাব কে আগে দেবে, এটি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম। বিষয়টি মাথায় রেখে দুজন-দুজনকে আরও বোঝার চেষ্টা করলাম। যখন বুঝলাম, আলিসা আমাকে মনেপ্রাণে চায়। তখন সিদ্ধান্ত নিলাম প্রস্তাব দেওয়ার। একদিন আলিসার মনের অবস্থা বুঝে ভালোবাসার কথাটা জানালাম। উত্তর আসার সঙ্গে সঙ্গে বুঝলাম, আলিসাও অপেক্ষায় ছিল প্রস্তাবের। ভালোবাসা হয়ে যাওয়ার পর আর সেভাবে ভালোবাসার কথা বলা হয়নি। কিন্তু ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী বিষয়টি আমার পরিবারকে জানাই। তাদের কাছ থেকে সম্মতি পাওয়ার পর আলিসাকে তার পরিবারকে রাজি করাতে বলি। আলিসার পরিবারও আমাদের ভালোবাসায় সম্মতি দেয়। বিয়ের আগে আলিসাকে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করতে বলি। এতে রাজি হয়ে যায়। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর দুই পরিবারের সম্মতিতে আমরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই।

 শুভ বলেন, আমরা বিয়ে করেছি বিদেশে। সেখানে আমাদের সমাজের যে রীতিনীতি ও উৎসব তা পালন করতে পারিনি। আমাদের দেশের বিয়েতে যতটা উৎসব হয়, তাও হয়নি। আমি চাই, নতুনভাবে বিয়ের উৎসব করতে। আলিসাও আমাদের দেশের বিয়ের অনুষ্ঠান দেখে মুগ্ধ হয়েছে। সেও চাচ্ছে, এদেশের সংস্কৃতি অনুযায়ী বিয়ের উৎসব হোক। আমার এবং আলিসার আবদারে আমার বাবা-মা ও স্বজনরা নতুনভাবে বিয়ের উৎসবের আয়োজন করেছেন। আগামী ৯ মার্চ হবে আমাদের গায়ে হলুদ। ১০ মার্চ গ্রামবাসীর জন্য বউভাতের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

শুভর বাবা চরবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ছেলে বিদেশে বিয়ে করেছে, সেখানেই থেকেছে এতদিন। অনেকদিন পর পুত্রবধূকে নিয়ে দেশে ফিরেছে। গ্রামবাসী ও আত্মীয়-স্বজনকে ছেলের বিয়েতে দাওয়াত দিতে পারিনি। এজন্য গায়েহলুদ ও বউভাতের আয়োজন করেছি। তাদের বিয়েতে আমি অনেক খুশি।

রাজশাহীর সময় / এম আর