২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১০:০০:৪৪ অপরাহ্ন


হঠাৎ থেমে গেল রাবি ছাত্রলীগের বর্ধিত সভা; উত্তেজনা বিরাজমান
আল্-মারুফ, রাবি প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৩-২০২২
হঠাৎ থেমে গেল রাবি ছাত্রলীগের বর্ধিত সভা; উত্তেজনা বিরাজমান হঠাৎ থেমে গেল ছাত্রলীগের বর্ধিত সভা; উত্তেজনা বিরাজমান


আসন্ন ছাত্রলীগের হল সম্মেলনকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আয়োজিত বিশেষ বর্ধিত সভা হঠাৎ স্থগিত করে বের হয়ে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার ( ৩ মার্চ ) বেলা ৫ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (টিএসসিসি) এই সভা আয়োজন করা হয়।

সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা, সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপস ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আহসান হাবীব বাপ্পী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি খালিদ হাসান নয়ন ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সাদ্দাম। সভার সভাপতিত্বে ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ গোলাম কিবরিয়া ও সঞ্চালনায় ছিলেন ফয়সাল আহমেদ রুনু। 

ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, উক্ত সভার শুরুতে আনুমানিক সন্ধ্যা ৬ ঘটিকার দিকে সভার ব্যানারে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ. এইচ. এম. কামরুজ্জামান হেনা এবং তার সন্তান রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য এ. এইচ. এম. খাইরুজ্জামান লিটনের ছবি না থাকায় ছাত্রলীগের আগামী সম্মেলনের পদ প্রত্যাশীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং প্রতিবাদ জানায়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কমিটির সভাপতি-সম্পাদক সহ হল সম্মেলন করতে আগ্রহী অংশ ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন চাওয়া পদ প্রত্যাশী অংশের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন মিলনায়তনের ভিতরে থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঘটনার এক পর্যায়ে পণ্ড হয়ে যায় সভা। পরে মিলনায়তন থেকে বের হয়ে যান ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন চাওয়া পদ প্রত্যাশী অংশ। বের হয়ে ছাত্রলীগের সম্মেলন চাওয়া পদ প্রত্যাশীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কমিটি নিয়ে অসন্তোষ ও অসঙ্গতি প্রকাশ করেন। 

পরে নতুন করে ব্যানার করে আনার পর পুনরায় সভা শুরু করতে গেলে বাইরে অবস্থান নিয়ে তারা স্লোগান দিতে থাকেন। প্রায় ১০ মিনিট বাইরে অবস্থান নিয়ে সভাস্থল মিলনায়তনের ফটকগুলো লাগিয়ে দিতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। ঘটনার এক পর্যায়ে মিলনায়তন থেকে বের হয়ে যান কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক।

এদিকে ঘটনার প্রেক্ষিতে নিজেদের অবস্থান জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন চাওয়া পদ প্রত্যাশী নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন রাবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কাজী আমিনুল ইসলাম লিংকন ও মেজবাহুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহিনুল ইসলাম সরকার ডন, সাংগঠনিক সম্পাদক এনায়েত হক রাজু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব, উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম দূর্জয় সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে সহ-সভাপতি মেজবাহুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে যার ফলে শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (টিএসসিসি) আমরা সবাই যোগদান করি। সেখানে যোগদান করে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত হই যে, অতীতে আমরা অনেক প্রোগ্রামে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করেছি সেখানে আমাদের আবেগের সাথে জড়িত জাতীয় চার নেতার অন্যতম এ. এইচ. এম. কামরুজ্জামান হেনার ছবি বরাবরই সংযোজিত করা হয়। আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করি, আজকের এই সভায় তার ছবি এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক রাজশাহী সিটি করপোরেশন মেয়র এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ. এইচ. এম. কামরুজ্জামান লিটনের ছবি সেখানে সংযোজিত নেই। এই দুটি নাম বিশ্ববিদ্যালয়ের  ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আবেগের সাথে জড়িত। এবং এই ঘটনা দেখে নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এই অবস্থা বিরাজ করলে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা সেখান থেকে চলে যান। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি-সাধারন সম্পাদককে এই ঘটনার সম্পূর্ণ দায়ভার দিচ্ছি। আমরা মনে করি এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এই কাজের জন্য তাদেরকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।' 

রাজশাহীর সময় /এএইচ