২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৩:৪৮:২২ অপরাহ্ন


ফুলবাড়ীতে প্রধান শিক্ষকের অপকর্মের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর বিক্ষোভসহ মানববন্ধন
কংকনা রায়, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৭-২০২৩
ফুলবাড়ীতে প্রধান শিক্ষকের অপকর্মের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর বিক্ষোভসহ মানববন্ধন ফুলবাড়ীতে প্রধান শিক্ষকের অপকর্মের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর বিক্ষোভসহ মানববন্ধন


দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার কাজীহাল ইউনিয়নের রামেশ্বরপুর আদর্শ মাধ্যামিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দন কুমার রায় অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তার অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন কর্মসূচি পালনসহ লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী।

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুর ১২টায় এলাকাবাসীর ব্যানারে এক বিক্ষোভ মিছিল পৌরশহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য রাখেন মিলন চন্দ্র রায়, সুলতান মাহমুদ, চয়ন রায়, বিপুল কুমার রায়, জয়দেব রায়। মানববন্ধনে অংশ নেয়া ওই বিদ্যালয়য়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখে ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী পল্লব চন্দ্র রায়, প্রাক্তণ শিক্ষার্থী চয়ন চন্দ্র রায়, জীবন রায় প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রধান শিক্ষক চন্দন কুমার রায় গত সোমবার (১৭ জুলাই) গাছে পানি দেওয়ার কথা বলে ওই স্কুলের নবনিয়োগপ্রাপ্ত আয়া রিতা রানী ইতিকে সন্ধ্যা ৭.৩০ টায় বিদ্যালয়ে ডাকেন। পরে তার সাথে বিদ্যালয়ের টয়লেটে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন প্রধান শিক্ষক। বিষয়টি স্থানীয় যুবক চয়ন চন্দ্র রায় দেখে চিৎকার শুরু করে। পরে স্থানীয়রা ছুটে আসলে ওই আয়া ও প্রধান শিক্ষক বিষয়টি অস্বীকার করে। ওই আয়া রিতা রানীর ছেলে প্রান্ত রায় কৌশিকও জানিয়েছে যে, তার মায়ের সাথে ওই প্রধান শিক্ষকের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। ইতোপূর্বেও প্রধান শিক্ষকের অত্যাচারে একজন নারী শিক্ষক বিদ্যালয় থেকে রিজাইন দিয়ে চলে গেছেন। আমাদের সকলের দাবি বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণসহ তার অপসারণ করা হোক।

পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র দেয়া হয়।

অভিযুক্ত আয়া রিতা রানী ইতি বলেন, আমি সাংসারিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। অভাবঅনটনে দিন কাটছিল। ওই স্কুলে নিয়োগের পর আমার আর্থিক উন্নতি দেখে এলাকাবাসীর সহ্য হচ্ছে না। তারা আমাকে হেয়পতিপন্ন করার জন্য এধরণের মিথ্যা ও বানোয়াট ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনা সাজাচ্ছে। ঘটনার দিন আমাকে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে ডাকে যে, বিদ্যালয়ে গাছ আনা হয়েছে সেগুলোতে পানি দিতে হবে। আমি সেখানে যাই এবং পানি দেই। পরে প্রধান শিক্ষক আবারো পানি দিতে বললে আমি রাগ হয়ে স্কুল থেকে বেড়িয়ে যাই। তখন ওই যুবক চয়ন রায় আমাকে বলে, আপনি কি করলেন টয়লেটে প্রধান শিক্ষকের সাথে। আমি বলি কি করেছি? পরে প্রধান শিক্ষককে ডাকলে ওই যুবক নিজের ভুল স্বীকার করে। পরে আমি বাড়ী চলে আসি। এরপর থেকেই এলাকাবাসী নানান ধরণের মিথ্যা বানোয়াট কথাবার্তা রটাচ্ছে। আমি চাই এর সুষ্টু বিচার। যারা আমাকে সামাজিকভাবে মানক্ষুণ্ন করছে তাদের কঠোর শাস্তি হোক।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক চন্দন কুমার রায় বলেন, ওইদিন গাছ আনা হয় স্কুলে, আমার দুজন আয়াকেই আমি ফোন করি যে, গাছ আনা হয়েছে এতে পানি দিতে হবে কে আসবে জলদি আসো। পরে রিতা রায় আসে। সে পানি দিয়ে বাড়ি যাওয়ার সময় ওই যুবক উল্টাপাল্টা কথা বলে। পরে ওই যুবক আমার কাছে ক্ষমা চায়। পরে গত মঙ্গলবার রাতে শুনি এলাকাবাসী বিশাল মিটিং করছে।যে ছেলে দেখেছে আমি অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলাম, কেনো সে তখন ভিডিও করল না? ওর কাছে তো স্মার্ট ফোন আছে। আয়াও তো বলছে না এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটি সম্পূর্ন পারিবারিক ও পূর্বের জের ধরে আমাকে চক্রান্তমূলকভাবে ফাঁসানো হচ্ছে। তারা টাকা দিয়ে লোকজন এনে মানববন্ধন করছে। যারা আমাকে সামাজিকভাবে সম্মানহানী করছে আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুর আলম বলেন, এলাকাবাসী অভিযোগ দিয়েছে বিষয়টি দেখা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ওয়াসিকুল ইসলাম বলেন, ভিডিও ফুটেজ যাচাই ও তদন্ত করে যে ব্যবস্থাগ্রহণ করা দরকার তা গ্রহণ করা হবে।