২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ১১:২৭:৩২ পূর্বাহ্ন


ফুলবাড়ীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের ওপর হামলা: গুরুতর আহত শিক্ষক
কংকনা রায়, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৬-২০২৩
ফুলবাড়ীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের ওপর  হামলা: গুরুতর আহত শিক্ষক ফাইল ফটো


দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়াড়ি ইউনিয়নের খাজাপুর একরামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক রশিদুল ইসলামকে শারীরিক নির্যাতনের প্রতিবাদে হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন মাদ্রাসার শিক্ষক, কর্মচারীসহ শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক রশিদুল ইসলামের ওপর হামলাকারী স্থানীয় যুবক রমজান আলী ও আল আমিনসহ কয়েকজনের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত পাঠদান ও অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শাখার শিক্ষকরা।

সোমবার (৫ জুন) সকাল সাড়ে ১০ টায় মাদ্রাসার সম্মুখে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মাসুম পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক শাহানাজ পারভীন, সহকারী অধ্যাপক সাদরুল আমিন, শিক্ষার্থী ইতি মনি, নাদিয়া আক্তার, মিফতাহুল জান্নাত প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দামোদরপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে রমজান আলী ও মৃত ওসিয়ার রহমানের ছেলে আল আমিনসহ এলাকার বখাটেরা গত রবিবার (৪ জুন) মাদ্রাসার শিক্ষক কমন কক্ষ থেকে সহকারী অধ্যাপক রশিদুল ইসলামকে টেনে বের করে মাঠে নিয়ে বেদম পারপিট করে। তাদেরকে অন্য শিক্ষকরা বাঁধা দিতে গেলে তাদেরও ওপর হামলা চালায় তারা। আমরা রমজান আলী ও আল আমিনসহ জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে মানবন্ধন কর্মসূচি শেষে অবস্থান পাঠদান ও অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকগণ। এতে পরীক্ষা দিতে আসা ষষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েন।

পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী মুনতাহা আনিকা সুফাইয়া, আব্দুর রহমান ও বিলকিস আরা বলেন, আমরা পরীক্ষা দিতে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখি মাদ্রাসায় মানববন্ধন হচ্ছে। পরীক্ষা নিবেন না স্যাররা।

মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মাসুম পারভেজ ও সহকারী অধ্যাপক সাদরুল আমিন বলেন, হামলাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা শিক্ষকরা পাঠদান ও অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করেছি। অভিযুক্তদের ওই শিক্ষকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে হবে। তবেই আমরা আমাদের আন্দোলন তুলে নেব।

অভিযুক্ত যুবক রমজান আলী বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান মিল্টন দুইপক্ষকে নিয়ে বসেছেন। বিষয়টি সমঝোতার মাধ্যমে শেষ হবে।

মাদ্রাসা সুপার হাফেজ মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ইউসুফা ও তার বাবা ইদ্রিস আলী গত ২৮ মে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। তাতে মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক রশিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওই শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে। পরে ১ জুন মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভায় কোনোপ্রকার দোষ না থাকা সত্তে¡ও ওই শিক্ষক সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তারপর আমি ঢাকা যাই অফিসিয়াল কাজে। পরে ফোনে জানতে পারি গত রবিবার ওই শিক্ষার্থীর ভাইসহ স্থানীয় যুবকরা শিক্ষকদের ওপর হামলা করেছে। বর্তমানে মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক রশিদুল ইসলাম দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছেন। ঘটনার পর জড়িদের শাস্তির দাবিতে পাঠদানসহ পরীক্ষা বর্জন করে আমার বরাবর দরখাস্ত জমা দিয়েছেন সকল শিক্ষকরা। বিষয়টি সমাধানের জন্য মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাথে বসা হয়েছে।

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আতাউর রহমান মিল্টন বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষক ও অভিযুক্ত যুবকদের পরিবারের সাথে বসা হয়েছে। সমঝোতার চেষ্টা চলছে। ##