২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৩:৩৭:৪৩ পূর্বাহ্ন


ক্রিকেটারদের সঙ্গে মন বাঁধলেও তাঁদের বিয়ে করেননি যে নায়িকারা
তামান্না হাবিব নিশু
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৫-২০২৩
ক্রিকেটারদের সঙ্গে মন বাঁধলেও তাঁদের বিয়ে করেননি যে নায়িকারা ছবি- সংগৃহীন


বলিপাড়ার নায়িকারা তাঁদের অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত হলেও তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন সর্বদাই থেকেছে আতশকাচের তলায়। তাঁদের প্রেমিক অথবা জীবনসঙ্গীরাও সব সময় নজরে থাকে ক্যামেরাশিকারিদের। ব্যক্তিগত জীবনে কোনও পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লেও তা প্রকাশ্যে এলে সমালোচনায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। বলিউডে এমন বহু অভিনেত্রী রয়েছেন যাঁরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করলেও সাতপাকে বাঁধা পড়েছেন অন্য পুরুষের সঙ্গে। এই তালিকায় রয়েছেন অমৃতা সিংহ, নাগমা, কিম শর্মা, অমৃতা অরোরা, দীপিকা পাড়ুকোনের মতো অভিনেত্রীদের নাম।

বলি অভিনেত্রী অমৃতা সিংহ যখন তাঁর কেরিয়ারের চূড়ায় ছিলেন সেই সময় তিনি রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। রবিও সেই সময় ক্রিকেটের বাইশ গজ কাঁপাচ্ছিলেন। একটি পত্রিকার প্রচ্ছদের জন্য ফোটোশুটের সময় আলাপ হয় অমৃতা এবং রবির। শুটিংয়ের সেটেই বন্ধুত্ব হয় দু’জনের। সেই আলাপ প্রেমে গড়াতে দেরি হয়নি।

 বছর পর ১৯৯১ সালে বলি অভিনেতা সইফ আলি খানকে বিয়ে করেন অমৃতা। কিন্তু দু’জনের কারও বিয়েই টেকেনি। ২০০৪ সালে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন অমৃতা এবং সইফ।২২ বছর সংসার করার পর ২০১২ সালে রিতু এবং রবির বিচ্ছেদ হয়।

২০০০ সালে যশরাজ ফিল্মসের ‘মহব্বতেঁ’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউডে পা রেখেছিলেন অভিনেত্রী কিম শর্মা। ইন্ডাস্ট্রিতে আসার পর ক্রিকেটার যুবরাজ সিংহের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন কিম।

তবে কিম এবং যুবরাজ তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে রাখঢাক রাখেননি। কখনও রেস্তরাঁয়, কখনও পার্টিতে একসঙ্গেই ক্যামেরায় ধরা দিয়েছেন দু’জনে। বহু বছর সম্পর্কেও ছিলেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের সম্পর্কও বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়নি। ব্যক্তিগত কারণে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।

২০১০ সালে আলি পুঞ্জানির সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন কিম। ছ’বছর সংসার করার পর বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় অভিনেত্রীর। যে বছর কিমের বিচ্ছেদ হয়, সেই বছরেই মডেল-অভিনেত্রী হ্যাজেল কিচকে বিয়ে করেন যুবরাজ।

‘কিস্না: দ্য ওয়ারিওর পোয়েট’ ছবিতে বিবেক ওবেরয়ের বিপরীতে অভিনয় করে প্রচারে আসেন ইশা সর্বাণী। ক্রিকেটার জাহির খানের সঙ্গে বহু বছর সম্পর্কে ছিলেন ইশা। আট বছর দু’জনে সম্পর্কে থাকার পর বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায় যে, তাঁরা বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছেন।

কিন্তু আট বছর একসঙ্গে থাকার পর সম্পর্কে ইতি টানেন ইশা এবং জাহির। ৩৮ বছরের অভিনেত্রী বর্তমানে এক পুত্রসন্তানের ‘সিঙ্গল মাদার’। ২০১৭ সালে অভিনেত্রী সাগরিকা ঘাটগের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন জাহির।

নব্বইয়ের দশকে বলিজগতের প্রথম সারির অভিনেত্রী ছিলেন নাগমা। বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, এক ভারতীয় ক্রিকেটারের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন নায়িকা। ক্রিকেটারের সঙ্গে একাধিক জায়গায় দেখাও গিয়েছে তাঁকে।

এর পর থেকেই ঘর ভাঙার জন্য সমালোচনার শিকার হতে হয় নাগমাকে। এমনকি, ভারত কোনও ম্যাচে খারাপ ফল করলেও তাঁর জন্য দায়ী করা হত নায়িকাকে। পরকীয়া সম্পর্কে শেষ পর্যন্ত ইতি টানেন নাগমা। তার পর একাধিক দক্ষিণী অভিনেতার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর পরেও বর্তমানে ‘সিঙ্গল’ ৪৮ বছরের নাগমা।

বর্তমানে মালাইকা অরোরা এবং অর্জুন কপূরের সম্পর্ক নিয়ে নেটপাড়া তোলপাড়। তারকা জুটি কবে সাতপাকে বাঁধা পড়বেন সেই অপেক্ষায় দিন গুনছেন অনুরাগীরা। তবে, মালাইকার বোন অমৃতা অরোরা যে এক সময় ক্রিকেটারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন তা অনেকেরই অজানা।

ইংরজে ক্রিকেটার উসমান আফজলের সঙ্গে সম্পর্কে আসেন অমৃতা। বন্ধুবান্ধবদের পার্টিতে একসঙ্গেই দেখা যেত দু’জনকে। এক বছর ওই ক্রিকেটারের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন অমৃতা। প্রেমে পড়লেও সাতপাকে বাঁধা পড়েননি তাঁরা। ব্যক্তিগত কারণে উসমানের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ২০০৯ সালে ব্যবসায়ী শাকিল লাদাককে বিয়ে করেন অভিনেত্রী।

অভিনেত্রী নীনা গুপ্ত এবং ক্রিকেটার ভিভিয়ান রিচার্ডসের সম্পর্ক নিয়ে বলিপাড়ায় জলঘোলা হয়েছিল বহু দিন। নানাবিধ সমালোচনার শিকারও হন নীনা। ভিভিয়ানের সঙ্গে একত্রবাসও করেন নায়িকা। কিন্তু ক্রিকেটারের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেননি তিনি। ভিভিয়ান এবং নীনার কন্যাসন্তান মাসাবা।

ফিল্ম প্রযোজক মধু মান্তেনাকে ২০১৫ সালে বিয়ে করেছিলেন মাসাবা। কিন্তু মধুর সঙ্গে সংসার বেশি দিন টেকেনি। ২০১৯ সালে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন দু’জনে। চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি সহ-অভিনেতা সত্যদীপ মিশ্রের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন মাসাবা।

কন্যা মাসাবা সংসার এবং কেরিয়ার নিয়ে ব্যস্ত হলেও বর্তমানে ‘সিঙ্গল মাদার’ হয়েই দিন কাটাচ্ছেন নীনা। একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করে দর্শকের প্রশংসা কুড়োচ্ছেন তিনি।

ক্রিকেটার রোহিত শর্মার সঙ্গে ২০১২ সালে সম্পর্কে আসেন বলি অভিনেত্রী সোফিয়া হায়াত। টুইটারে এই সম্পর্কের কথা নিজেই ঘোষণা করেছিলেন অভিনেত্রী। বহু দিন সম্পর্কে থাকার পর রোহিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন সোফিয়া।

রোহিতের বিরুদ্ধে সোফিয়ার অভিযোগ ছিল, রোহিত নাকি মানুষ হিসাবে ভাল নন। তার পরেই সোফিয়ার সঙ্গে রোহিতের সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়। ২০১৫ সালে ঋতিকা সাজদের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন রোহিত।

ক্রিকেটার হার্দিক পাণ্ড্যর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে বলিপাড়ার বহু অভিনেত্রীর। উর্বশী রউতেলা এবং এষা গুপ্তের সঙ্গে হার্দিকের সম্পর্কের গুঞ্জন মাঝেমধ্যেই শোনা যেত। হার্দিকের ঘনিষ্ঠ বান্ধবীদের তালিকায় নাম ছিল কলকাতার মডেল লিজ়া শর্মারও। কিন্তু বলি অভিনেত্রী এলি আব্রামের সঙ্গে হার্দিকের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।

বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, ২০১৭ সালে হার্দিকের ভাই ক্রুণাল পাণ্ড্যর বিয়ের অনুষ্ঠানে ক্রিকেটারের সঙ্গে আলাপ হয় এলির। তার পর বিভিন্ন জায়গায় হার্দিকের সঙ্গে দেখা যেত এলিকে। এমনকি, বাইরে ম্যাচ খেলার সূত্রে কোনও ট্যুরে গেলে সেখানে এলিকে নিয়ে যেতেন হার্দিক।

তবে, হার্দিকের সঙ্গে সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি এলির। অধিকাংশ সময় মতের অমিল হত দু’জনের। তাই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন এলি এবং হার্দিক। ২০২০ সালে মডেল-অভিনেত্রী নাতাশা স্ট্যানকোভিচের সঙ্গে বাগ্‌দানের ঘোষণা করেন হার্দিক। সেই সময় নেটমাধ্যমে হার্দিককে পরোক্ষ ভাবে ইঙ্গিত করে পোস্ট করতেও দেখা যায় এলিকে।

বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, পাকিস্তানের ক্রিকেটার ইমরান খানের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন জিনাত আমন। ১৯৭৮ সালে অভিনেতা সঞ্জয় খানকে বিয়ে করেছিলেন জিনাত। এক বছর পর বিচ্ছেদ হয়ে যায় নায়িকার। সত্তরের দশকে বলি ইন্ডাস্ট্রির ডাকসাইটে সুন্দরী নায়িকাদের তালিকায় প্রথম সারিতে ছিলেন জিনত। সেই সময় ভারতে ম্যাচ খেলতে এসেছিলেন ইমরান।

জিনাত এবং ইমরানের কেউই তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। তবুও তাঁদের সম্পর্কের কথা শিরোনামে উঠে আসে। কানাঘুষো শোনা যায়, ১৯৭৯ সালে জন্মদিন উদ্‌যাপন করার জন্য নিজের দলকে ছেড়ে অভিনেত্রীর সঙ্গে একান্তে সময় কাটিয়েছিলেন ইমরান। তবে তাঁদের সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি। ১৯৮৫ সালে অভিনেতা মাজহার খানকে বিয়ে করেন জিনত। ১৩ বছর সংসার করার পর ১৯৯৮ সালে বিচ্ছেদ হয় জিনাত এবং মাজহারের।

বর্ষীয়ান অভিনেত্রী অঞ্জু মহেন্দ্রুর সঙ্গে রাজেশ খন্নার সম্পর্ক কারও অজানা নয়। কানাঘুষো শোনা যায়, রাজেশের সঙ্গে বিচ্ছেদের পরেই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার গারফিল্ড সোবার্সের সঙ্গে নাকি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অঞ্জু। গারফিল্ডের সঙ্গে অভিনেত্রী একত্রবাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে বলিপাড়া সূত্রে খবর। এমনকি, অঞ্জুকে বিয়ের প্রস্তাবও দেন ক্রিকেটার। কিন্তু অঞ্জুর পরিবার বিয়েতে রাজি না হওয়ার গারফিল্ড এবং অঞ্জুর সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়।

প্রয়াত বাঙালি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের নাতনি রাইমা সেন এখনও অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু রাইমার বোন রিয়া আলোর রোশনাই থেকে নিজেকে প্রায় দূরেই রাখেন। তবে ক্রিকেটার শ্রীসন্থের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর পর শিরোনামে এসেছিলেন রিয়া।

বলিপাড়া সূত্রে খবর, এক অনুষ্ঠানে শ্রীসন্থের সঙ্গে আলাপ হয় রিয়ার। সেই আলাপই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রেমে গড়িয়ে যায়। শ্রীসন্থের ম্যাচ চলাকালীন মাঝেমধ্যেই গ্যালারিতে দেখা যেত অভিনেত্রীকে। অবশ্য দু’জনের কেউই তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু জানাননি। শোনা যায়, ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে ম্যাচ গড়পেটার অভিযোগ আসার পর সম্পর্কে ইতি টানেন রিয়া। ২০১৭ সালে শিবম তিওয়ারির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন অভিনেত্রী।

২০১৭ সালে অনুষ্কা শর্মাকে বিয়ে করেন বিরাট কোহলি। কিন্তু তার আগে অন্য এক অভিনেত্রীর সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল বিরাটের। অভিনেত্রী ইজ়াবেল লেইটের সঙ্গে দু’বছর সম্পর্কে ছিলেন বিরাট। কানাঘুষো শোনা যায়, বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ে ইজাবেলের সঙ্গে দেখা হয় বিরাটের। ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত একসঙ্গে ছিলেন তাঁরা। কিন্তু সম্পর্কের ব্যাপারে দু’জনের কেউই স্বীকার করেননি। দু’বছর সম্পর্কে থাকার পর ব্যক্তিগত কারণে সম্পর্কে ইতি টানেন বিরাট এবং ইজাবেল।

শোনা যায়, দক্ষিণী অভিনেত্রী রাই লক্ষ্মী এবং দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে সম্পর্কে এসেছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। কিন্তু দীর্ঘ দিন সম্পর্কে থাকলেও ধোনির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেননি কেউই। বলি অভিনেত্রী আসিনের সঙ্গেও ধোনির সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার কানাঘুষো শোনা যায়। শেষ পর্যন্ত ২০১০ সালে সাক্ষীকে বিয়ে করেন ক্রিকেটার।

দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে ধোনির পর নাম জড়ায় যুবরাজ সিংহেরও। বলিপাড়ার অন্দরের খবর, ধোনির সঙ্গে বিচ্ছেদের পর যুবরাজের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অভিনেত্রী। ক্যামেরার লেন্সে একসঙ্গে ধরাও পড়ত দু’জনে। কিন্তু তাঁদের সম্পর্কও বেশি দিন টেকেনি। ২০১৮ সালে বলি অভিনেতা রণবীর সিংহের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন দীপিকা।