২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার, ১০:০৫:৩১ পূর্বাহ্ন


কালীগঞ্জে গণপিটুনিতে ছিনতাইকারী নিহত
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৫-২০২৩
কালীগঞ্জে গণপিটুনিতে ছিনতাইকারী নিহত প্রতিকী ছবি


গাজীপুরের কালীগঞ্জে পথ রোধ করে এক ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে নগদ টাকা, মোবাইল ও মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের পর গণপিটুনিতে এক ছিনতাইকারীর মৃত্যু হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার পর ছিনতাই ও গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম দুলাল মিয়া (৪৫) ওরফে ভান্ডারি দুলাল। তিনি পাড়ারটেক এলাকার মৃত বিল্লাল মিয়ার ছেলে।

ছিনতাইয়ের শিকার ব্যবসায়ী রায়হান আকন্দ (২৪)। তিনি পার্শ্ববর্তী রুপগঞ্জ উপজেলার মধ্য জিন্দা এলাকার চেয়ারম্যান বাড়ির কুদ্দুস আকন্দর ছেলে। রায়হান ইট-বালু ব্যবসা করেন। ঘটনার সময় তার সঙ্গে ছিল একই এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে সাইদুল (২২)।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, রাত ৩টা ১০ মিনিটে এলাকাবাসী দুলালকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় কয়েকজন হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। হাসপাতালে বাহক হিসেবে রায়হান এবং জুলফিকার আলীর নাম লিপিবদ্ধ রয়েছে।

ছিনতাইয়ের শিকার রায়হান আকন্দ বলেন, ঘটনার পর স্থানীয়দের সহায়তায় আমি বাড়ির লোকজনকে ঘটনা জানাই। পরে তাদের পরামর্শে রাতেই আমি কালীগঞ্জ থানায় গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত পুলিশকে বলি। সে সময় ডিউটি অফিসার আমাকে বলেন সকালে থানায় যাওয়ার জন্য। পরে বাড়ি চলে আসি। কিন্তু আমি হাসপাতালে যাইনি। তবে কি কারণে হাসপাতালে আমার নাম লেখা হয়েছে আমার জানা নেই।

তিনি আরও বলেন, আমার মোটরসাইকেল, মোবাইল এবং তিন লাখ টাকা এখনো পাইনি।

নিহতের স্বজন জুলফিকার আলী বলেন, রাতে মেম্বার মুজিবুর রহমান ও থানার এসআই সাইফুল ইসলাম ফোনে জানান দুলাল অসুস্থ অবস্থায় কালীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। পরে হাসপাতালে গিয়ে দুলালকে গুরুতর আহত অবস্থায় দেখতে পাই। সে সময় চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন। এর মধ্যে দেখি অ্যাম্বুলেন্স এসে হাসপাতালের গেটে অপেক্ষায় রয়েছে। পরে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু আমি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাইনি। তবে হাসপাতালে থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার সময় আমি সঙ্গে ছিলাম।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কালীগঞ্জ থানায় দায়িত্ব পালন করা ডিউটি অফিসার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আ. আউয়াল বলেন, মধ্য রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহবুব ফোনে জানান এলাকায় একজনকে মারধর করে ফেলে রেখেছে স্থানীয়রা। সে সময় তাকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে আহতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে। এছাড়াও রাত আনুমানিক ৩টার দিকে এক যুবক এসে বলে তাকে পথ রোধ করে মারধর করে মোটরসাইকেল, মোবাইল ও টাকা রেখে দিয়েছে কয়েকজন দুষ্কৃতকারীরা। সে সময় থানায় কম্পিউটার অপারেটর না থাকায় অভিযোগ লেখার জন্য তাকে সকালে আসতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রাতে মেম্বার এবং ওই যুবক কেউই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য বলেননি।

কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম (১) বলেন, রাতে সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দুলালকে গুরুতর আহত অবস্থায় পাওয়া গেছে। সে সময় চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন। এরপর দুলালের স্বজনদের মোবাইলে খবর দেয়া হয়। পরে তার স্বজনরা এসে অ্যাম্বুলেন্সে করে দুলালকে ঢাকা নিয়ে যাওয়া পথে তার মৃত্যু হয়েছে।

কালীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর সকালে নিহতের বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।