২৫ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার, ০৯:৩৮:৪৭ অপরাহ্ন


বিদ্যানন্দকে নিয়ে যা বললেন তসলিমা নাসরিন
তামান্না হাবিব নিশু:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৪-২০২৩
বিদ্যানন্দকে নিয়ে যা বললেন তসলিমা নাসরিন তসলিমা নাসরিন। ছবি: সংগৃহীত


প্রবাসী বাংলাদেশি লেখক তসলিমা নাসরিন সোমবার (১৭ এপ্রিল) নিজের ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দর্শকের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। ওই স্ট্যাটাসে তসলিমার কথা বলার প্রসঙ্গ ছিল বিদ্যানন্দ।

সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ায় বিদ্যানন্দের প্রশংসা করেন এ লেখক।

প্রশংসার পাশাপাশি তসলিমা জানিয়েছেন, স্বপ্নবান দরিদ্র মানুষের জন্য নিজের শান্তিনগরের অ্যাপার্টমেন্টটি বিদ্যানন্দকে দান করে দেবেন তিনি।

তসলিমার এমন আবেগঘন পোস্ট এরই মধ্যে নেটিজেনদের নজর কেড়েছে। ‘সময়’-এর পাঠকের জন্য তসলিমার সে পোস্ট তুলে দেয়া হলো–

‘বাংলাদেশ নামক পোড়া দেশে ভালো কাজের দাম নেই। সত্যিকার দেশপ্রেমের মূল্য নেই। সৎ এবং নিঃস্বার্থ মানুষের জায়গা নেই। ও দেশে সে কারণে আমার জায়গা হয়নি।  আমার সততা আর সভ্যতাকে ও দেশ চরম অপমান করেছে, চরম অসম্মান করেছে, সত্য বলেছি বলে আমাকে অন্যায়ভাবে অত্যাচার করেছে। ওই দেশে সত্য ভূলুণ্ঠিত, ওই দেশে মিথ্যের জয়জয়কার। ওই দেশের চরিত্র আমি খুব ভালো করে জানি, ওই দেশকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি।

ওই দেশের মূর্খ ধর্মান্ধরা বিদ্যানন্দ নামের একটি সংস্থার বিরুদ্ধে লেগেছে, যেহেতু বিদ্যানন্দ ভালো কাজ করছে, যেহেতু বিদ্যানন্দ নিঃস্বার্থ এবং সৎ। বিদ্যানন্দ কী কী ভালো কাজ করেছে আমার জানার দরকার নেই। যখন অপশক্তি সরব হয় কারও বিরুদ্ধে, আমি বুঝি সে মানুষটি নিশ্চয়ই মানুষের মঙ্গলের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে। স্বার্থহীনতা ঠিক কী জিনিস এবং মানুষ কেন স্বার্থহীন হয় তা  বুঝতে স্বার্থান্ধ লোকের চিরকাল অসুবিধে হয়।

আমি ভাবছি আমার শান্তিনগরের অ্যাপার্টমেন্টটি আমি বিদ্যানন্দকে দান করে দেব। ওই ফ্ল্যাটে বসে আমি এক সময় মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করার জন্য, সুস্থ সুন্দর অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনের জন্য, নারীর সমানাধিকারের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লেখালেখি করেছি। ওই ফ্ল্যাটে বসে বিদ্যানন্দের কর্মীরা মানুষের দারিদ্র্য ঘোচানোর জন্য, মানুষকে শিক্ষিত এবং সভ্য করার জন্য কাজ করবে। স্বপ্নবান মানুষদের জন্য এটুকু কেন, এর চেয়েও অনেক বেশি করতে পারি। সৎ এবং নিঃস্বার্থ মানুষরাই আমার উত্তরসূরি, তাদেরই আমি আত্মীয় বলে মানি।’