ইন্দোনেশিয়া পাপুয়া প্রদেশে বিচ্ছিন্নবাদী গোষ্ঠীর হাতে অপহৃত নিউজিল্যান্ডের পাইলটকে উদ্ধারে অভিযান চালায় ইন্দোনেশিয়ার সেনাবাহিনী। এ সময় বিচ্ছিন্নবাদীদের গুলিতে অন্তত ৬ সেনা নিহত হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে আরও অন্তত ৩০ সেনা। সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পাপুয়ার পার্বত্য জেলা এনদুগার একটি সেনা চৌকিতে ৩৬ জন সেনাসদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছিল। সেখানে ফ্রি পাপুয়া মুভমেন্টের সশস্ত্র শাখা ওয়েস্ট পাপুয়া লিবারেশন আর্মির সদস্যরা হামলা চালায়।
এই হামলায় অন্তত ৬ সেনাসদস্য নিহত হয়েছে। জঙ্গলে পালিয়ে গেছে অন্তত ২১ জন এবং বাকি ৯ জনকে বিদ্রোহীরা জিম্মি করে নিয়ে গেছে। তবে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মাত্র ১ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল হারমান তারিয়ামান জানিয়েছেন, ওই চৌকির সৈন্যরা অপহৃত নিউজিল্যান্ডের পাইলট ফিলিপ মার্ক মার্টেনসের তল্লাশি দলের সদস্য ছিল। ইন্দোনেশীয় এভিয়েশন কোম্পানি সুসি এয়ারের হয়ে কাজ করতেন মার্ক। সেখান থেকেই ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বিদ্রোহীরা।
কর্নেল তারিয়ামান জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ নিখোঁজ ৩০ জন সৈন্যের সন্ধানে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে।
মাত্র একদিন আগেই গত শনিবার (১৫ এপ্রিল) ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়ায় ৯ সেনাসদস্যকে হত্যার দাবি করে স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহীরা। রোববার (১৬ এপ্রিল) বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মুখপাত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইন্দোনেশিয়ার সেনাবাহিনী হামলার বিষয়টি স্বীকার করলেও কোনো হতাহতের সংবাদ নিশ্চিত করেনি।
জানা গেছে, দ্য ওয়েস্ট পাপুয়া ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিপিএনপিবি) এই হামলায় জড়িত রয়েছে। গোষ্ঠীটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিমানচালক মার্ককে অপহরণ করে। সে সময় তারা জাকার্তার কাছে দাবি করেছিল, তাদের স্বাধীনতা দিতে হবে। কিন্তু বর্তমানে গোষ্ঠীটি স্বাধীনতার দাবি ত্যাগ করে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে।
টিপিএনপিবির মুখপাত্র সেবি সামবম এক অডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আমরা ইন্দোনেশিয়া এবং নিউজিল্যান্ড সরকারকে বলেছি, শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে বন্দীকে মুক্তি দেয়া যেতে পারে।’
সামবম আরও বলেছেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ আলোচনা চাইলেও গত ২৩ মার্চ ইন্দোনেশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশ আমাদের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালায়। এ কারণে টিপিএনপিবি-এর সেনারা প্রতিশোধ নেয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে এবং এরই মধ্যে প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে।’